এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > এক্সক্লুসিভ – বিসিপিতে যোগদানের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই প্রতারণার বিস্ফোরক অভিযোগ মাধবীর, কি বলছেন শঙ্কুদেব?

এক্সক্লুসিভ – বিসিপিতে যোগদানের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই প্রতারণার বিস্ফোরক অভিযোগ মাধবীর, কি বলছেন শঙ্কুদেব?


গতকালই এক এক্সক্লুসিভ খবরে আমরা জানিয়েছিলাম, টলিপাড়ায় সিন্ডিকেট রাজের আতঙ্ক স্তব্ধ করতে রন্তিদেব সেনগুপ্ত-শঙ্কুদেব পণ্ডার হাত ধরে মাত্র কিছুদিন আগেই আত্মপ্রকাশ করা বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদ বা বিসিপি এক বড়সড় চমক দিয়ে একদা মমতা ব্যানার্জির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বর্ষীয়ান অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায়কে সংগঠনের উপদেষ্টা মন্ডলীতে নিয়ে এলেন। যে খবরের জেরে রীতিমত হইচই পরে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে।

এই প্রসঙ্গে বিসিপিতে উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য হওয়ার স্বপক্ষে মাধবীদেবীর নিজের মুখে দেওয়া যুক্তির একটি এক্সক্লুসিভ ভিডিওও আমরা প্রকাশ করি। আমরা সেই খবর প্রকাশ করার পর, রাজ্যের একাধিক নামী সংবাদমাধ্যমও সেই খবর প্রকাশ করে। কিন্তু, সেই ঘটনার ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই পাল্টা বিস্ফোরণ ঘটালেন মাধবীদেবী। কলকাতার এক নামী সংবাদমাধ্যম তাঁর এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার নেয়। সেই সাক্ষাৎকারে মাধবীদেবী জানিয়েছেন তিনি নাকি প্রতারিত হয়েছেন!

এই প্রসঙ্গে বিশদে ব্যাখ্যা করে তিনি জানিয়েছেন, বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদের নাম নিয়ে মিলন ভৌমিক সহ বেশ কয়েকজন আমার কাছে আসেন। জানান, দুঃস্থ শিল্পী ও টেকনিশিয়ানসদের সাহায্যের জন্য তাঁরা বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছেন। এই সমস্ত শিল্পীদের প্রতি মাসে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে আমাকে জানানো হয়। এক্ষেত্রে তাঁদের পাশে আছি কিনা জিজ্ঞাসাও করা হয়। এই উদ্যোগকেই স্বাগত জানিয়ে আমি তাঁদের পাশে থাকার বিষয়ে সহমত প্রকাশ করি। এরপরই আমাকে একটি কাগজে সই করতে বলা হয়। আমি সেসময় চশমাও পরে ছিলাম না, কিন্তু তাঁদের বিশ্বাস করেই সেই কাগজে সই করি।

মাধবীদেবী আরও বলেছেন, আমাকে রাতে ফোন করে বেশ কিছু জন প্রশ্ন করেন – আপনি বিজেপিতে গেছেন? একথা শুনে আমি অবাকই হয়! উত্তরে বলি, এইরকম তো কিছুই হয়নি। তারপরই পুরো বিষয়টা আমায় জানানো হয়, কী করব বুঝতে পারছিলাম না! আমি তো ভাবতেই পারছি না, আমার সঙ্গে এভাবে প্রতারণা করা হল! তাহলে মানুষকে বিশ্বাস করব না? কেউ বাড়িতে এলে তাড়িয়ে দেব নাকি? বিজেপিই হোক, আর যেই হোক, কোনও রাজনৈতিক দলের কথাই আমায় বলা হয়নি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই প্রসঙ্গে মাধবীদেবী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচ্চ প্রশংসা করার পাশাপাশি বিজেপি নেতা মুকুল রায়কেও তীব্র আক্রমন করেন। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা কাজ করেছেন, তাতে আমাদের সকলের তাঁর সঙ্গে থাকা উচিত। আমরা সবাই তাঁর সঙ্গে থাকলে উনি আরও ভালো কাজ করতে পারবেন। যাঁরাই থাকুন না কেন, তাঁদের আদর্শ থাকা উচিত। ওই মুকুল রায়ের মতো আদর্শ নয়, যে আজ এখানে কাল সেখান। সুবিধার জন্য আদর্শ হয় না, আদর্শ আলাদা বিষয়। স্বাভাবিকভাবেই মাধবীদেবীর এহেন বিস্ফোরক মন্তব্যের পর রীতিমত ঝড় উঠে যায় রাজ্য রাজনীতিতে।

এই প্রসঙ্গে প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার তরফে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হয় বিসিপির অন্যতম শীর্ষনেতা শঙ্কুদেব পণ্ডার সঙ্গে। তিনি দলীয় কাজে দিল্লি যাচ্ছিলেন বলে, দীর্ঘক্ষণ তাঁকে টেলিফোনে পাওয়া যায় না। পরে যোগাযোগ হলে তিনি জানান, মাধবীদেবীর সংশ্লিষ্ট সাক্ষাৎকারটি তিনি তখনও দেখেননি বা এই ব্যাপারে মাধবীদেবীর সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ হয় নি। কিন্তু, মাধবীদেবীর তোলা ‘প্রতারণার’ অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদ, টালিগঞ্জে দুঃস্থ শিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের সাহায্য করতে চায় সম্মানের সঙ্গে। এই ব্যাপারে মাধবীদেবীর মত বর্ষীয়ান অভিনেতার উপদেশ আমাদের পথ চলবে সাহায্য করবে বলেই আমাদের মনে হয়েছিল।

শঙ্কুদেব আরও বলেন, তাই মিলনদারা (ভৌমিক) ওনার কাছে গিয়েছিলেন এই প্রস্তাব নিয়ে। আপনার কথা শুনেই বুঝলাম, উনি নিজের মুখেই বলেছেন সেকথা। আর সেই সংক্রান্ত সম্মতিপত্রেই উনি স্বাক্ষর করেছেন, যা আমাদের রীতিমত সম্মানিত করেছিল। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি বা বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদ বা বিজেপির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ কোথাও দাবি করেছেন কি – যে উনি বিজেপিতে যোগদান করেছেন? তাহলে আমরা কিভাবে ওনাকে প্রতারণা করলাম? বরং, প্রতারক তো তাঁরাই, যাঁরা ওনার মত বর্ষীয়ান অভিনেত্রীকে ভুল বোঝাচ্ছেন যে বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদে যোগদান করা মানেই বিজেপিতে যোগদান করা।

শঙ্কুদেবের বক্তব্য, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ আলাদা –  বিজেপিতে যোগ দেবার কোনো প্রক্রিয়া কি ওনার সাথে হয়েছে বিসিপির বা দাবি করেছে বিসিপি? বিসিপি আর বিজেপি দুটি সম্পূর্ণ আলাদা, বিজেপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বিসিপির কোনো যোগই নেই। আমরা চাই টালিগঞ্জের দুঃস্থ শিল্পীদের জন্য কিছু করতে, আর সেব্যাপারে পরামর্শ নেওয়ার জন্য আমরা টালিগঞ্জের সমস্ত বর্ষীয়ান শিল্পী ও গুণীজনের কাছে যাব। তাঁদের মূল্যবান পরামর্শ আমাদের পথ দেখাবে, সেই জন্যই অত্যন্ত সম্মান দিয়ে তাঁদের আমরা উপদেষ্টামন্ডলীতে নিয়ে আসছি। এর জন্য শুধু মাধবীদেবী কেন, কাউকেই তাঁর রাজনৈতিক সত্ত্বা বিসর্জন দিতে হবে না।

এরপরেই শঙ্কুদেব পণ্ডা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আমরা মাধবীদেবীর অমূল্য পরামর্শ নিয়ে টালিগঞ্জের দুঃস্থ শিল্পীদের কিছু করতে চেয়েছিলাম। আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারছি, ওনাকে কোন চাপের মুখে দাঁড়িয়ে এই কথাগুলো বলতে হচ্ছে! উনি যদি সেই চাপের সামনে এরপরে বিসিপির পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করতে না চান, তাও ওনার প্রতি আমাদের পূর্ন সম্মান থাকবে। যে চাপের কাছে আজ মাধবী মুখোপাধ্যায়ের মত গুণী শিল্পীকে মাথা নোয়াতে হল, তা অনুধাবন করার মত রাজনৈতিক পরিপক্কতা আমাদের যথেষ্ট আছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!