মাধ্যমিকে লাগাতার প্রশ্ন ফাঁস, চমকে দেওয়া মন্তব্য করলেন পার্থ! বিতর্ক তুঙ্গে! কলকাতা রাজ্য February 20, 2020 গত বছর জীবনের সবথেকে বড় প্রথম পরীক্ষা মাধ্যমিকে ছাত্রছাত্রীরা অনেকেই বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। তার প্রথম এবং প্রধান কারণ, পরীক্ষা শুরুর কিছু সময়ের মধ্যেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার খবর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। তবে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার যাতে সেরকম কোনো ঘটনা না ঘটে, তার জন্য নানারকম পদক্ষেপ নিয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। পরীক্ষা শুরুর প্রথম দুই ঘন্টা যাতে প্রশ্ন ফাঁস না হয়, তার জন্য নেট বন্ধ রাখার কথাও জানানো হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইতিমধ্যেই যে দুদিন মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়েছে, সেই দুদিনেই পরীক্ষা শুরুর কিছু সময়ের মধ্যে ফাঁস হয়ে গেছে প্রশ্নপত্র। যা নিয়ে নানা মহলে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এত কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরেও কেন এভাবে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে! আর এই প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় যখন অনেকেই আতঙ্কে ভুগছেন, ঠিক তখনই এই ব্যাপারে সকলকে চমকে দিয়ে এক অন্যরকম বক্তব্য শোনা গেল শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। এদিন তিনি বলেন, “এটা নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই। সবাই খবর করবার জন্য এসব করে। কেউ যদি আধঘন্টার মধ্যে বেরিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ করে দেয়, তাহলে তুমি আমি কি করব! কোনো ছাত্র বা ছাত্রী যদি প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে কোনো ভাবেই রেয়াত করা হবে না। তার কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা হবে।” আর শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্যে এখন শুরু হয়েছে নানা প্রশ্ন। অনেকে বলছেন, একজন শিক্ষামন্ত্রী হয়ে “কেউ যদি প্রশ্ন ফাঁস করে দেয় তার জন্য তিনি কি করবেন!” এই ধরনের দায়সারা মন্তব্য কি মন্ত্রী মহোদয়ের পক্ষ থেকে সাজে! তিনি না হয় এখন শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন। কিন্তু যে ছাত্রছাত্রীরা জীবনের সবথেকে বড় পরীক্ষায় বসেছেন, তাঁদের মনে তো সবসময় টেনশন থাকবে। আর সেই টেনশন যদি গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে এভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে থাকে, তাহলে সরকার পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস না দিয়ে, এভাবে দায়সারা মন্তব্য করলে, সকলের মনে আতঙ্ক তৈরি হবে, এটাই তো স্বাভাবিক! আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে এদিন মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে সংবাদমাধ্যমকেও কটাক্ষ করতে দেখা যায় শিক্ষামন্ত্রীকে। তিনি বলেন, “আমরা সব ধরছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় কারা আছে, তোমাদের মধ্যে কারা আছে, সব ধরছি। কেউ আমাদের তালিকা থেকে বাদ নেই।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাবাস! শিক্ষামন্ত্রীর এমন বক্তব্য না হলে চলে। ছাত্রছাত্রীরা মাধ্যমিকের পরীক্ষা দিচ্ছে, সেখানে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে অথচ সেই ব্যাপারে তদন্ত না করে, সংবাদমাধ্যমের কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত আছেন! তা আগেভাগেই জেনে গেলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী! একাংশের মতে, আসলে গোটা ব্যাপারটিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্যই আগেভাগেই সংবাদমাধ্যমে ঘাড়ে দায় চাপালেন শিক্ষামন্ত্রী! এই ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রীর এহেন মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। এদিন এই ব্যাপারে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “উনি কি বলতে চাইছেন যে প্রশ্ন ফাঁস হলে মাথা ব্যাথা নেই। তা নিয়ে খবর হলে মাথাব্যথা হচ্ছে। কারণ বাংলার মানুষ জেনে যাচ্ছে, নির্বিঘ্নে মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালনা করার যোগ্যতাও এই সরকারের নেই।” সব মিলিয়ে এবার মাধ্যমিকে লাগাতার প্রশ্নফাঁস নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে প্রবল বিতর্ক তৈরি হল। আপনার মতামত জানান -