মহুয়া মুখ খুলতেই হাতে অস্ত্র পাচ্ছে বিজেপি থেকে রাজ্যপাল! তীব্র অস্বস্তি শাসকদলের অন্দরমহলে কলকাতা নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য June 13, 2020 রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্কের তিক্ততার কথা সকলেরই জানা। প্রায়শই বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যায় রাজ্যে সাংবিধানিক প্রধান জাগদীপ ধনকারকে। আর এবার তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বক্তব্যকে উদ্ধৃত করেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন রাজ্যপাল। কিন্তু হঠাৎ রাজ্যের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্য কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের বক্তব্যকে কেন হাতিয়ার করলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান? জানা গেছে, সম্প্রতি নদীয়ায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের কাজের ব্যর্থতা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিস্ফোরক ভিডিও পোস্ট করেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। যার পরবর্তীতে তৃণমূলের তরফ থেকে মহুয়া মৈত্র এই আচরণ নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করা হয় কেন ধরে পরিচালিত পঞ্চায়েতের কাজের ব্যর্থতা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে তুলে ধরলেন এই তৃণমূল সাংসদ তা নিয়ে অনেক তৃণমূল নেতার প্রশ্ন করতে শুরু করেন আর এই ঘটনাকে হিসু করে রাজ্য সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকর। এদিন ভয়াবহ দুর্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারকে অস্বস্তিতে ফেললে তা নিয়ে একটি টুইট করেন মহুয়া মৈত্র। যেখানে তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার যেখানে করোনা, পরিযায়ী শ্রমিক এবং আমপানের মত দুর্যোগ একইসঙ্গে সামলাচ্ছে, সেখানে রাজ্যপাল বিজেপির শেখানো বুলি আওড়াচ্ছেন।” আর এর পরিপ্রেক্ষিতেই মহুয়া মৈত্র এবং রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - পাল্টা টুইট করে তিনি বলেন, “রাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থার দুর্নীতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোষের মুখে পড়েছেন মহুয়া মৈত্র। আমাকে আক্রমণ করা হচ্ছে। আসলে মহুয়ার মত যোগ্য নেতা নেত্রীরা তৃণমূলে অসহায়। তাদের বন্দিদশা অবাক করার মত। নিজের সরকারের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ধারালো এবং ঘাতক তীর ছুড়েছেন মহুয়া মৈত্র। যা আমাদের পঞ্চায়েত ব্যবস্থার দুর্নীতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ডুবে থাকা পঞ্চায়েতের আসব ছবি নিয়ে এসে নিজেই বেকায়দায় পড়ে গিয়েছেন মহুয়া। আমাকে কি আক্রমন সেজন্যই? এমন অসহায় অবস্থায় আপনি একা নন। আপনার মত যোগ্য নেতা, নেত্রীদের বন্দিদশা দেখে অবাক হই।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহুয়া মৈত্রর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপাল এবার যে ধরনের মন্তব্য পেশ করলেন, তা সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ। যেভাবে তিনি মহুয়া মৈত্রের বক্তব্য উদ্ধৃত করে তৃণমূলের অন্দরমহলে শোরগোল তুলে দেওয়ার চেষ্টা করলেন, তা নিঃসন্দেহে রাজ্যের শাসক দলকে অনেকটাই অস্বস্তিতে ফেলে দিল। তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হচ্ছে, রাজ্যপাল যে ধরনের মন্তব্য করছেন, তা বিরোধীদলের নেতারা করেন। ফলে সেদিক থেকে তার এই মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক। প্রসঙ্গত, সাংসদ মহুয়া মৈত্র হিসেব দিয়ে বলেছিলেন প্রতিবছর প্রতিটি পঞ্চায়েত এককোটির বেশি টাকা পেয়ে থাকে। চতুর্দশ অর্থ কমিশন আর পারফরম্যান্স বেস্ট ব্র্যান্ড মিলিয়ে এই অর্থ পেয়ে থাকে পঞ্চায়েতগুলি। ৫ বছরে প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ কোনও কোনও ক্ষেত্রে ৬ কোটিও হয়ে যায়। তৃণমূল সাংসদের অভিযোগ, ছিল ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬০ শতাংশ অর্থ খরচের নিয়ম থাকলেও, তাঁর এলাকায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা হয়নি। কিন্তু এলাকার ৯০ শতাংশ পঞ্চায়েতই তৃণমূলের দখলে। তিনি বলেছিলেন, এই টাকা যদি পরিকল্পনা করে খরচ করা যায়, তাহলে গ্রামে কাঁচা রাস্তা থাকবে না।এই নিয়ে শুধু রাজ্যপাল নয়, বিজেপিও মুখ খুলতে শুরু করেছে। পাল্টা তৃণমূলকে আক্রমণ শানাতেও পিচিপা হয়নি, যার জেরে বেড়েছে অস্বস্তি। আর এই বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই এদিন মাঠে নেমেছেন রাজ্যপাল।তবে একটি রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নিয়ে তিনি প্রকাশ্যে কেন মন্তব্য করবেন! তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন ঘাসফুল শিবিরের নেতারা। তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে কথাই বলা হোক না কেন, মহুয়া মৈত্রের পক্ষ থেকে নিজের দলের পরিচালিত পঞ্চায়েতের কাজকর্ম নিয়ে সরব হওয়ার ঘটনাকে তুলে ধরে এবার রাজ্যপাল যেভাবে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করলেন, তাতে তৃণমূলের অস্বস্তি অনেকটাই বাড়ল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আপনার মতামত জানান -