করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যের রাজনীতিতে পারদ ক্রমশ চড়ছে। তৃণমূলে বিদ্রোহীদের সংখ্যা বাড়ছে তা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। সাধন পাণ্ডের পর এবার দলে কোণঠাসা হয়ে গিয়েছেন কৃষ্ণনগরের দাপুটে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সংসদে ভীষণ ভাবে তৃণমূলের দাপুটে এই সাংসদ মাত দিলেও কয়েকদিন আগে পঞ্চােয়তের কাজ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে অসন্তোষ প্রকাশ করে পোস্ট করেছিলেন যার জেরেই এবার তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন দলের নেতা নেত্রীরাও।

এদিন নাকাশিপারার পঞ্চায়েত প্রধান অর্পিতা ঘোষ বলেন, “আমার পঞ্চায়েতে টাকা রয়েছে ঠিকই। কিন্তু লকডাউনে অনেকে অফিসে কর্মীর আসতে পারেনি। ওদের অন্য জায়গায় ডিউটি পড়েছিল। তাই অনেকটা পিছিয়ে পড়েছি।”

প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভাল কাজ করছে না বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সাংসদের এই মন্তব্যকে ভাল ভাবে নেয়নি তাঁরই দলের লোকেরা। এমনকী নদিয়া জেলার পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও মহুয়ার এই মন্তব্যে অন্তুষ্ট হয়েছেন।

অন্যদিকে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে কিছুটা সরব হয়ে বিক্রমপুর পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রধান রশিস মল্লিক বলেন, “উনি যেভাবে কাজের কথা বলছেন, তা সম্ভব নয়। আমরা যদি বড় বড় রাস্তা করি, তাহলে পাড়া গ্রামের অলিগলির কাজ করা সম্ভব হবে না। ফলে গ্রামের মানুষ ক্ষুব্ধ হবেন। তাতে পঞ্চায়েতে বিশৃংখলা তৈরী হবে। ই- টেন্ডারের পরিকাঠামো আমাদের পঞ্চায়েতে নেই। আমরা সরকারের নিয়ম অনুযায়ী কাজ করি।”

তাছাড়া এই নিয়ে মুখ খুলেছেন নাকাশিপাড়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নীলকমল সরকার। তিনি বলেন, “সাংসদের মত পঞ্চায়েত সদস্যরা নির্বাচিত হয়েছেন। সকলকে কাজ ভাগাভাগি করে দিতে হবে।”

ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে মহুয়ার বিরুদ্ধে অসন্তোষ ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। আর একের পর এক ইস্যুতে যদি মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে কৃষ্ণনগরে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অসন্তোষ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, তাহলে দ্বন্দ্ব বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সমস্যার সমাধান করতে তৃণমূল নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।