এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > অমিত শাহদের যুক্তিতে বিবেকানন্দ-বিদ্যাসাগরও অনুপ্রবেশকারী – দাবী মুখ্যমন্ত্রীর

অমিত শাহদের যুক্তিতে বিবেকানন্দ-বিদ্যাসাগরও অনুপ্রবেশকারী – দাবী মুখ্যমন্ত্রীর


অসমের এনআরসি ইস্যুতে ফের একবার বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। গত ৩০ শে জুলাই অসমের নাগরিকপঞ্জীর চূড়ান্ত তালিকা থেকে ৪০ লক্ষ বাঙালির নাম বাদ পড়ার পরই দফায় দফায় বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকায় দেখা গেছে তাকে।

গতকাল ফের নবান্নে বসেই তৃণমূল নেত্রী বলেন, এনআরসির নাম করে স্বাধীনতা হরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশে জরুরি অবস্থা তৈরি করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এটি করা হচ্ছে। ভারতীয় নাগরিক হিসাবে যাবতীয় তথ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এত গুলো বাঙালিকে। অনুপ্রবেশকারী বা শরনার্থীদের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে তাঁদেরকে।

প্রসঙ্গত, এদিন অসমের বাঙালিদের ১৪ টি সংগঠনের ‘ইউনাউটেড বেঙ্গলি ফোরাম’-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে ১৯৬৪ বা ১৯৬৫ সালের বেশকিছু ভোটারদেরও অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁর যুক্তি, ১৯৭১-এর ২৪ মার্চের আগে যাঁরা এদেশে এসেছেন তাঁরা সবাই ভারতীয় – অন্তত ইন্দিরা-মুজিবর চুক্তি সেটাই বলছে।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

এদিন তিনি এনআরসি প্রসঙ্গে আরেকটা নতুন তথ্য সামনে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, ৪০ লক্ষ বাদ পড়া মানুষের মধ্যে ৩৮ লক্ষ বাংলাভাষী। এদের মধ্যে ২৫ লক্ষ হিন্দু বাঙালি এবং ১৩ লক্ষ মুসলিম বাঙালি। এরপর পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, এঁদের অপরাধ কোথায়? এঁদের কি অপরাধ বাংলাভাষী হওয়া?

মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে আরো বলেন, ভোটের নামে রাজনীতি হচ্ছে। আসলে বিজেপি ভয় পেয়ে গেছে যে ভোট হলেই হারবে ওরা। তাঁর আরো দাবি, অসমে ৪০ লক্ষ বাঙালির নাম বাদ পড়লেও এখনো ২ কোটি বাঙালি আছে ওখানে। এরসঙ্গে কড়া আক্রমণ শানিয়ে বলেন, দাঙ্গাবাজ বিজেপিদের নামই আগে অবৈধ ঘোষণা করা উচিৎ।

এরপর তাঁর আক্রমণের অভিমুখ জাতীয় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের দিকে ঘুরিয়ে কটাক্ষের সুরে বাংলার ‘অগ্নিকন্যা’ প্রশ্ন করেন, “উনি নিজের বাবা-মায়ের জন্মতারিখ জানেন”? একইসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করেন, তিনি নিজেই নিজের বাবা-মায়ের জন্মতারিখ জানেন না। তা হলে কি তিনি অনুপ্রবেশকারী?‌ তখনকার দিনে কেউ জন্ম শংসাপত্র রাখত?‌ ‌

একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, স্বামী বিবেকানন্দ, বিদ্যাসাগর, কাজী নজরুল ইসলামের বাবা-মায়ের জন্মতারিখ কেউ জানে‌ন?‌ তাঁরা কি তা হলে অনুপ্রবেশকারী?‌‌ এর পাশাপাশি তিনি এটাও জানান, আজকাল বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই পাঠানো হচ্ছে ডিটেনশন ক্যাম্পে। ১,২০০ জনকে শিশু সমেত আটকে রাখা হয়েছে।

বিজেপি যে নাগরিকপঞ্জীর নামে ‘বাঙালি খেদাও’ অভিযানে নেমেছে তার সপক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি দাবি করেন, বাংলার বহু মানুষ ওখানে আটকে আছেন। মুর্শিদাবাদের বহু কাপড় ব্যবসায়ীরা আটকে আছেন ওখানে। এমনকি সমগ্র পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে যে তাঁকেও আসামে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে এটাও তিনি এদিন জানান। কিন্তু সাধারণ মানুষকে সমস্যা থেকে বাঁচানোর জন্যেই তিনি ওখানে যাননি বলেও সাফ কথায় জানিয়ে দিলেন এদিন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!