এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মমতা ব্যানার্জি থেকে শঙ্কুদেব পণ্ডা – তুরীয় মেজাজে ব্যাট চালালেন গেরুয়া শিবিরের সেনাপতি দিলীপ ঘোষ

মমতা ব্যানার্জি থেকে শঙ্কুদেব পণ্ডা – তুরীয় মেজাজে ব্যাট চালালেন গেরুয়া শিবিরের সেনাপতি দিলীপ ঘোষ

পুলওয়ামা জঙ্গি হামলা নিয়ে গতকাল বিজেপি সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে নেত্রী বলেছেন,দেশের সবথেকে বড় মর্মান্তিক জঙ্গী হামলার সুযোগ নিয়েও রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টায় রয়েছে বিজেপি।

বাংলায় দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে আরএসএস-বিজেপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। গত দুদিন ধরে রাত ১২ টা-১ টায় জাতীয় পতাকা নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আতঙ্ক তৈরি করছে বিজেপি। নেত্রীর এই অভিযোগ পাত্তা না দিয়ে গর্জে উঠে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বললেন,আরএসএস পতাকা নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে উচিৎ কাজই করেছে।

দিলীপ ঘোষের মতে, জাতির সংকটকালীন পরিস্থিতিতে সকলকে একজোট হতে হয়। পুলওয়ামার ভয়ানয় জঙ্গী হামলার পর রক্ত টগবগ করে ফুটছে দেশবাসীর। প্রতিবাদের ঝড় উঠে গিয়েছে গোটা দেশে। এই প্রেক্ষিতে আরএসএস জাতীয়তাবাদী দল বলেই জাতীয় পতাকা নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে দেশভক্তিরই পরিচয় দিয়েছে।

এরপর মুখ্যমন্ত্রীর বিজেপির বিরুদ্ধে দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি করার অভিযোগের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে দিলীপ ঘোষ পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেন,’ধূলাগড়, বসিরহাট, কালিয়াচকের দাঙ্গায় দায় কার? কোথায় ছিল প্রশাসন, কে দায়ী ছিল? কতজনকে সাজা দিয়েছেন?’ দিলীপ বাবুর দাবী,মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের শাসনেই রাজ্য বোমার কারখানায় পরিনত হয়েছে। যা রাজ্যের শান্তি,সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য রক্ষার পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক। এরপর নেত্রীর পুলওয়ামা কাণ্ডের জন্যে বিজেপি সরকারকে তোপ দাগার বিরুদ্ধে সরব হয়ে দিলীপ বাবু বলেন,দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দল যখন ঐক্যবদ্ধভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী তুলছে,তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র দেশের সরকারের বিরুদ্ধেই আঙুল তুলছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পুলওয়ামা কাণ্ডের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে এর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেখানেও এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য ছিল,’কড়া স্টেপ নেওয়ার নামে আপনরা যদি যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেন, তার দায় আমরা কেন নেব।’ এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘তবে কি সেনারা যে মারা দেল তার দায় নেবেন আপনারা?’

এদিকে মুকুল রায়ের সূত্র ধরে বিজেপিতে নাম লেখালেন শঙ্কুদেব পান্ডা। তৃণমূলের প্রাক্তন ছাত্রনেতা বিজেপিতে আসায় দলের সুপ্রিমো যে খুশি নন সেটাও স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিলেন দিলীপ বাবু। কটাক্ষের ভঙ্গিতে বললেন, ”ঝড় উঠেছে। অনেকেই আসবেন। সবাইকে নেব। সবাইকে হজম করব”।

এর পাশাপাশি শঙ্কুদেব পান্ডা যে আদৌ নেতা কিনা সেটা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। দিলীপ বাবুর বক্তব্য,”আদৌ উনি নেতা! এতদিন তৃণমূলে ছিল। রাজনৈতিক নেতারা দলবদল করেই থাকেন। কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করেছেন নেওয়া উচিত, তাই নিয়েছেন। কাজ করানোর চেষ্টা করব”। এরপর সাংবাদিকদের তরফ থেকে প্রশ্ন আসে সারদা কাণ্ডে সিবিআইয়ের থেকে আত্মরক্ষা করতেই কি বিজেপিতে মাথা গুঁজলেন শঙ্কুদেব? এই প্রশ্নেও ছক্কা হাঁকিয়ে উত্তর দেন দিলীপ বাবু।

তাঁর কথায়,”সিবিআই কাউকে ছাড়বে না। আমরা কাউকে না বলতে পারি না। গঙ্গায় অনেক কিছু ভেসে যায়। ভাল-খারাপ অনেক কিছু থাকে। লক্ষ্মণ শেঠও এসেছিলেন, তারপর চলে গিয়েছেন”। তারপরই মিডিয়ামহল থেকে স্বাভাবিক প্রশ্ন ওঠ,তবে কি শঙ্কুদেব পাণ্ডার দলে আসায় খুশী নন দিলীপ বাবু? প্রতিক্রিয়ায় একটু ঘুরিয়েই উত্তর দেন রাজ্যবিজেপি সুপ্রিমো। বলেন,তিনি দুঃখীও নন মোটেই।

প্রসঙ্গত,মুকুল রায়ের বিজেপিতে আসার পর থেকেও শঙ্কুদেবের গেরুয়াশিবিরের আসার পথ প্রস্তুত হয়ে যায়,এমনটাই জল্পনা চলছিল বহুদিন৷ সেই জল্পনাকে সত্যি করেই মুকুল রায়ের হাত ধরেই এদিন বিজেপিতে নাম লেখালেন শঙ্কুদেব। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও। উল্লেখ্য,এই শঙ্কুদেব পাণ্ডাই একসময় সারদা কাণ্ডে ১১ বার সিবিআই কর্তাদের জেরার সম্মুখীন হন। এর জেরে দলে ব্রাত্য হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর সক্রিয় রাজনীতি থেকেও নিজেকে গুটিয়ে নেন। ফের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়ে রাজ্য রাজনৈতিকমহলে নিজের হারানো অস্তিত্ব ফিরে পেতে চাইছেন তৃণমূলের প্রাক্তন ছাত্রনেতা,এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!