গেরুয়া-ঝরে আক্রান্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘাসফুলের জমি ফিরিয়ে নিতে আসরে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী, হতে পারেন কল্পতরু মেদিনীপুর রাজ্য December 4, 2018 জঙ্গলমহলে জোড়াফুলের শক্তি ফেরাতে দুদিনের জেলা সফরে পশ্চিম মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেভাবে পদ্মের উত্থান হয়েছে তৃণমূলের শক্তিকেন্দ্রে সেই জায়গা থেকে শাসকদলকে স্বমহিমায় ফেরাতে বিগ্রেড সমাবেশের আগে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতেই পশ্চিম মেদিনীপুরে পাড়ি জমালেন নেত্রী। প্রথমে কেশিয়াড়ি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তিনি। সেখান থেকে প্রায় শ’খানেক প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধন করেন নেত্রী। হেলিকপ্টারে করে জেলায় এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠান শেষে জেলার সার্কিট হাউসে রাত্রিবাস আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠক করবেন নেত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মুড়ে ফেলা হয়েছে এলাকাকে এমনটাই জানালেন জেলাশাসক পি মোহনগান্ধী। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। এই প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে আদিবাসী অধ্যুষিত এই অঞ্চলে মুখ্যমন্ত্রীর সভা করা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কেশিয়াড়ির জন্য কল্পতরুও হয়েছেন নেত্রী। কেশিয়াড়ি হাইস্কুলের এসসি-এসটি হস্টেল, কেশিয়াড়ি রবীন্দ্রভবনে মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মাণ, কেশিয়াড়ি ব্লকের দু’টি ঢালাই রাস্তা নির্মাণ সহ জনস্বার্থমুখী একগুচ্ছ পরিষেবার উদ্বোধন করলেন নেত্রী। এছাড়া গোটা জেলা জুড়েই উদ্বোধন হল প্রায় ৪৮ টি প্রকল্প। এবং প্রায় ৫০ টি প্রকল্পের শিলান্যাস হতে হল। তালিকাটি হল,মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাঁচখুরী-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কারবালা মাঠ, ইদগাহ, বুড়ো পিরবাবার-ই-শরিফ উন্নয়ন ও সৌন্দার্যায়ন, পাথরা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাথরা পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়ন, খড়্গপুর-১ ব্লকে জলতীর্থ প্রকল্পের অধীনে হিজলি রেঞ্জে চেক ড্যাম নির্মাণ, সবং ব্লকের দশগ্রামে নতুন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র নির্মাণ প্রভৃতি। সকাল থেকেই কেশিয়াড়ি সভাস্থলে ছিল সাজে সাজো রব। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বহুবার সভাস্থলের নির্মানের কাজকর্ম তদারক করে গিয়েছে। মূল সভামঞ্চ ছাড়াও লোকনৃত্য ও লোকসঙ্গীত পরিবেশনের জন্য একটি পৃথক মঞ্চ করা হয়। সভায় আগত সাধারণ মানুষের জন্য গোটা সভাস্থলকে ঢাকা হয় শামিয়ানা দিয়ে। অন্যদিকে,প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকের জন্যে পুলিশ লাইনেও ছাউনি করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী যে রাস্তা দিয়ে এসেছিলেন সেখানে আলনা দিয়ে সাজানো হয়েছিল। গোটা শহরকে পরিষ্কার করা হয়েছে। একাধিক ফ্লোক্স এবং আলোতে সেজে নতুন হয়েছে মেদিনীপুর শহর। দুদিনের এই জেলা সফরে সব থেকে বেশি জোর হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার উপর। সিভিক ভলান্টিয়ার, কনস্টেবেল ছাড়াও নেত্রীর নিরাপত্তায় সবসময় হাজির থাকছেন ডিএসপি পদমর্যদার একাধিক পুলিসকর্তা। মুখ্যমন্ত্রীর সভার কারণে এদিন প্রায় ৯০% বাস পরিষেবা তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলত স্বাভাবিকভাবেই সপ্তাহের প্রথম কর্মব্যস্ত দিনে অসুবিধায় পড়তে হয়েছে অফিসযাত্রীদের। জেলা প্রশাসন ও বাস মালিক সংগঠন সূত্রে খবর, জেলায় প্রায় ৮০০এর মতো বাস বিভিন্ন রুটে চলে। মুখ্যমন্ত্রীর সভার কারণে প্রায় ৭৫০টির মতো বাস তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য বাস তুলে নেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় নিত্যযাত্রীদের সেরকম সমস্যা হয়নি বলেই দাবী করলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে মৃগাঙ্ক মাইতি। লক্ষ্য করার মতো বিষয় হল, এদিন সভাস্থলে রেকর্ড পরিমান ভীড় হয়েছিল। ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ সরাসরি শুনবার জন্যে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন এদিনের সভায়। এতো মানুষের সমাগম দেখে আপ্লুত জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি। বক্তব্যে জানালেন,মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে এমনিই মানুষ এসেছেন। এর জন্যে আলাদা করে কিছু করতে হয়নি। এরপর চোখ রয়েছে আগামীকালের জেলা প্রশাসনিক বৈঠকের দিকে। সেখানে নেত্রী দলীয় নেতৃত্বদের কী বার্তা দেন তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিকমহলে। আপনার মতামত জানান -