এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > প্রার্থী নিয়ে মমতার ঘোষণার পর চরম সমস্যায় হেভিওয়েট নেতারা! ক্ষোভে ফুঁসছেন অনুগামীরা!

প্রার্থী নিয়ে মমতার ঘোষণার পর চরম সমস্যায় হেভিওয়েট নেতারা! ক্ষোভে ফুঁসছেন অনুগামীরা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –একুশে জুলাই কিভাবে হবে, তা নিয়ে শুক্রবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সমস্ত জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে একুশে জুলাইকে সামনে রেখে মূল আলোচনা হলেও, দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়েও বিশদে আলোচনা করেন তৃণমূল নেত্রী। শুধু তাই নয়, আগামী 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট কারা পাবেন, তা নিয়েও দলের অবস্থান জানিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলের কাছে।

পরিষ্কার ভাষায় তৃণমূল নেত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, যারা বর্তমান বিধায়ক আছেন, তারাই আগামী 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে দলের টিকিট পাবেন। অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা বলে কার্যত বুঝিয়ে দিলেন যে, আগামী দিনে কোথাও প্রার্থী পদে কোনো পরিবর্তন হবে না। যারা বর্তমান বিধায়ক আছেন, তারাই টিকিট পাবেন। কিন্তু তৃণমূল নেত্রী একথা বললেও, তৃনমূলের কর্মী-সমর্থকরা কিন্তু এই ব্যাপারে আশাহত হতে শুরু করেছেন।

প্রায় প্রতি জেলাতেই এমন অনেকেই রয়েছেন, যারা বর্তমান বিধায়কদের বিরুদ্ধে নিজেদের গুটি সাজাচ্ছেন। এমনকি দলের দৃষ্টি পেতে তারা আপ্রাণ পরিশ্রম করে চলেছেন। ফলে সেই সমস্ত নেতারা 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট পাওয়ার আশা রাখলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণার পর তাদের সেই আশা কার্যত বিশবাঁও জলে চলে গেল বলেই মনে করছে একাংশ।

যেমন, কোচবিহার জেলায় গত 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে নটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে আটটি কেন্দ্র দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস। এর মধ্যে অন্যতম মেখলিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র। যেখানে বাম আমলের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকাকারীকে হারিয়ে জয়লাভ করেন তৃণমূলের অর্ঘ্য রায় প্রধান। আর মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ঘোষণা মত এবারেও তাহলে সেই অর্ঘ্য রায় প্রধানকেই সেই কেন্দ্রের জন্য প্রার্থী করতে হবে তৃণমূল কংগ্রেসকে।

এদিকে গত লোকসভা নির্বাচনে বাম আমলের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারী কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে অবশ্য তিনি পরাজিত হন। কিন্তু মেখলিগঞ্জের বাসিন্দা হিসেবে পরিচিত লোকসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর তিনি তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এগিয়ে নিয়ে যাবেন না, একথা বিশ্বাস করতে পারছেন না কেউ। ফলে সেদিক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা মত যদি বর্তমান বিধায়কদের টিকিট দেওয়া হয়, তাহলে অনুগামীদের আশা থাকলেও তিনি কি টিকিট পাবেন! তা নিয়ে এখন নানা মহলে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

অন্যদিকে গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে পার্থপ্রতিম রায় টিকিট পাননি। তবে দলের নির্দেশ মত নিজের কাজ করে গেছেন পার্থবাবু। পরবর্তীতে কোচবিহার কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস পরাজিত হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপলব্ধি করেছিলেন যে, পার্থপ্রতিম রায়কে টিকিট না দিয়ে ভুল হয়েছে। যার ফলস্বরুপ তিনি রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে বিনয়কৃষ্ণ বর্মনকে দায়িত্ব দিয়ে জেলার কার্যকরী সভাপতি পদে পার্থপ্রতিম রায়কে বসিয়ে দিয়েছেন।

কিন্তু জেলার আটটি বিধানসভা কেন্দ্রের বর্তমান বিধায়করা রয়েছেন। ফলে অনেকে এতদিন আশা করেছিলেন যে, বিধানসভা নির্বাচনে পার্থপ্রতিম রায়কে যে‌ কোনো একটি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করবে। তবে সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের বর্তমান বিধায়ক থাকায় এবং তারা যখন নির্বাচনে লড়তে সুযোগ পাবেন বলে জানাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন পার্থপ্রতিম রায়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কি হবে, তাহলে কি শুধু দলের পদ নিয়েই থাকতে হবে তাকে! এখন তা নিয়ে তার অনুগামীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

একাংশের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের বর্তমান বিধায়কদের নিজেদের দলে রাখতেই ঘোষণা করেছেন যে, 2021 এ যারা বর্তমান বিধায়ক আছেন, তারা টিকিট পাবেন। অর্থাৎ কেউ যাতে বিজেপিতে পা না বাড়ান, তার জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণা বলে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু তৃণমূল নেত্রী এই ঘোষণা করে দলের অনেক নেতা এবং কর্মীর হতাশার সৃষ্টি করলেন বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কেননা এমন অনেক তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা রয়েছেন, যারা বিগত লোকসভা নির্বাচনে টিকিট পাননি এবং পরাজিত হয়েছেন। ফলে সেই সমস্ত হেভিওয়েট নেতারা বিধানসভা নির্বাচনে দলের টিকিট পাবেন বলে তাঁরা আশা করেছিলেন। কিন্তু যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত কেন্দ্রের বর্তমান বিধায়কদের প্রার্থী করা হবে বলে জানিয়ে দিলেন, তাতে সেই সমস্ত নেতারা এখন অনেকটাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন বলে দাবি করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

আর এটা শুধু কোচবিহার জেলা নয়, গোটা রাজ্যজুড়ে একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সুতরাং তৃণমূল নেত্রী প্রার্থী ঘোষণা করে একশ্রেণীর মন রাখতে পারলেও, একশ্রেণীর নেতাকর্মীরা যে এই ঘোষণার পর কিছুটা হলেও হতাশ হয়ে গিয়েছেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!