এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > এবার এই জেলা পুনরুদ্ধারে হেভিওয়েট নেত্রীকে বড়সড় নির্দেশ দিলেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী

এবার এই জেলা পুনরুদ্ধারে হেভিওয়েট নেত্রীকে বড়সড় নির্দেশ দিলেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী


উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই 2011 সালে ভালো ফল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। যার মধ্যে ছিল মালদহ জেলাও। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে দলীয় গোষ্ঠীকোন্দল হোক বা নেতাকর্মীদের দুর্ব্যবহার, যেকোনো কারণেই 2011 সালের পর থেকে এই জেলাতে হারের মুখ দেখতে হয় ঘাসফুল শিবিরকে। বহু চেষ্টা করেও নিজেদের মরা গাঙে জল আনতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। তবে কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি মালদহে ঘাসফুল ফোটাতে গেলে যে গনি পরিবারের সাংগঠনিক শক্তিকে নিজেদের বাগে আনতে হবে, তা বুঝতে পেরেছিল তৃণমূল নেতৃত্ব।

আর তাইতো লোকসভা নির্বাচনের আগেই মালদহ জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূরকে নিজের দলে যোগদান করান জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। যার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই মৌসম নূরকে দলে স্বাগত জানিয়ে তাকে উত্তর মালদহের তৃণমূল প্রার্থী করে দেন। তবে তারপরও তৃণমূলের ভাগ্যে জয় আসেনি। কিন্তু কথায় আছে, “একবার না হলে দেখো শতবার।” তাই পরবর্তীতে চেষ্টার যাতে কোনো খামতি না থাকে, তার জন্য সেই মৌসম নূরের কাঁধেই জেলার দায়িত্ব তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সম্প্রতি মালদা জেলায় এসে সেই মৌসম বেনাজির নূরকে জেলার শেষ কথা বলে নিজের হাতে মালদহ জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব তুলে নেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার ফলে সরাসরি দলের সর্বোচ্চ নেত্রী মালদহ জেলা দেখায় রীতিমতো উজ্জীবিত হয়েছিল জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা। তবে তারপরও জেলায় কিছু সমস্যা ছিল। আর এবার জেলা পর্যবেক্ষক তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করলেন মালদহ জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর।

যে বৈঠককে ঘিরে প্রথম থেকেই শুরু হয়েছিল নানা জল্পনা। আর জেলায় গোষ্ঠী কোন্দল কমাতে এবং বিজেপির বিরুদ্ধে রণনীতি সাজাতে দুই নেত্রীর এদিনের বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ বলেই দাবি করেছিল রাজনৈতিক মহল। অবশেষে অনুষ্ঠিত হল সেই বৈঠক‌। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে 10 টা থেকে 11 টা পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন মালদহ জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর। কিন্তু এই বৈঠকে ঠিক কী কী আলোচনা হয়েছে?

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জানা গেছে, মালদহ জেলায় দলের পক্ষে স্রোত আনবার জন্য বিজেপির বিরুদ্ধে এনআরসি ইস্যুকে কাজে লাগাবার নির্দেশ মৌসমদেবীকে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে প্রতিটি ব্লককে যুক্ত করে এনআরসির বিরুদ্ধে রিলে মিছিল করার সিদ্ধান্ত জেলা সভানেত্রীকে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলের সর্বোচ্চ নেত্রী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্যের বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফলেই স্পষ্ট যে, এনআরসি কিছুটা হলেও বিজেপিকে বিপাকে ফেলেছে। যার প্রভাবের ফলে কালিয়াগঞ্জ, করিমপুর এবং খড়্গপুরে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত হয়েছে।

রাজবংশী সম্প্রদায় থেকে সংখ্যালঘু মানুষের সমর্থন আরও বেশি বেশি করে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে পড়েছে। সেদিক থেকে মালদহ সংখ্যালঘু প্রবণ জেলা হওয়ায় সেই জেলার মানুষদের ভাবাবেগ নিজেদের দিকে নিয়ে আসতে এনআরসির বিরুদ্ধে এবং বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই উপনির্বাচনের ফলাফল যখন ঘোষিত হচ্ছে, ঠিক তখনই তার ট্রেন্ড দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনআরসির বিরুদ্ধে প্রচার করে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার নির্দেশ দিলেন বলে মত বিশ্লেষকদের।

তবে শুধু বিজেপির বিরুদ্ধে এনআরসি ইস্যুতে প্রচার করাই নয়, জেলায় গোষ্ঠী কোন্দল কমিয়ে অবিলম্বে বিধানসভা ভিত্তিক কমিটি এবং জেলা কমিটির খসড়া মৌসুম নূরকে নিজের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন এই বৈঠকের পর মালদহ জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী বলেন, “দলের সাংগঠনিক বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। দলের সর্বোচ্চ নেত্রী যা যা পরামর্শ দিয়েছেন, তা আমাদের শিরোধার্য।”

মৌসম বেনজির নূর এদিন আরও বলেন, “তার অভিজ্ঞতাপ্রসূত নির্দেশ আগামী দিনে মালদহে দলকে আরও বেশি করে শক্তিশালী করবে।” সব মিলিয়ে এনআরসি ইস্যুতে প্রচার করা থেকে শুরু করে মালদহে ঘুরে দাঁড়াতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টনিক মৌসম নূর কতটা গ্রহণ করতে পারলেন, তা ভবিষ্যতে তার কার্যকলাপের মধ্যে দিয়েই প্রমান হয়ে যাবে বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। বিগত নির্বাচনে শূন্য হাতে ফেরানো মালদহে ঘাসফুল ঝড় তোলায় এখন এক ও একমাত্র লক্ষ্য তৃণমূলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!