প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃনমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী। দলের শেষ কথা তিনি। তার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সর্বভারতীয় যুব সভাপতি। মূলত গোটা দল পরিচালিতই হয় কালীঘাটের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার থেকে। সেদিক থেকে বিরোধীরা তাদের বক্তব্যে বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার পরিবার সম্পর্কে প্রশ্ন তুললেও, তৃনমূল তা বারবার খন্ডন করেছে। কিন্তু এটা সপ্নেও কল্পনা করা যায় না যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তারই ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়।

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালীঘাটের জয়হিন্দ ভবনে কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র, আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় ও অন্যান্যরা। আর সেখানেই তমোনাশ ঘোষের মৃত্যুর কথা তুলে ধরে দলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “তমোনাশ ঘোষের মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারি না। তার মৃত্যু মেনে নেওয়ার অর্থ, পুরোনো তৃণমূল কর্মীদের মৃত্যু স্বীকার করে নেওয়া।”

এরপরেই রীতিমত খেদের সুরে তিনি বলেন, “এখন আর তৃণমূলে পুরনো কর্মীদের মূল্য নেই। জয়দীপদার কথা তুলে বলতে চাই, এখন সব অর্ধশিক্ষিত হাইটেক নেতারা দল চালাচ্ছেন। তাই হয়ত তম-দের মত নেতাদের এখন আর দলের প্রয়োজন ছিল না। তাই তো এইসব অর্ধশিক্ষিত হাইটেক নেতাদের সামনে আনা হচ্ছে।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল চরম আকার ধারণ করেছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দলের পুরোনো নেতাকর্মীরা আর গুরুত্ব পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন একাংশ।

তবে এই অভিযোগ রাজ্যের শাসকদলের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করা হয়েছে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই যেভাবে সেই সমস্ত কথা তুলে ধরে দলের পুরোনো কর্মীদের মূল্য দেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি করলেন, তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃনমূল শীর্ষ নেতৃত্বের ঘুম অনেকটাই উড়ল বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এদিন তমোনাশ ঘোষের স্মরণসভায় গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় বোঝানোর চেষ্টা করলেন, বিধায়ক থাকার সময় তমনোষবাবু সেভাবে দলে গুরুত্বই নাকি পান নি।

অর্থাৎ তাকে দল যে গুরুত্ব দেয়নি, তা কার্যত নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরে নিজের দিদি তথা দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকে বলছেন, এতদিন বিরোধীদের পক্ষ থেকে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের কথা তুলে ধরে তৃনমূলকে বিপাকে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু এবার খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই তার দলের গঠনতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূলের অস্বস্তি অনেকটাই বাড়িয়ে দিলেন। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।