“পরে কাজে লাগতে পারে” বলে বিজেপির “দালালদের” চিনে রাখার নির্দেশ “বাঘের বাচ্চা” অনুব্রতকে দিলেন মমতা মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য April 26, 2019 একসময় নির্বাচন এলেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্তত বীরভূম জেলা নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতেন, কেননা সেখানে ভোট পরিচালনা করতেন অনুব্রত মন্ডল। আর অনুব্রতবাবুও তাঁর দিদিকে আশ্বস্ত করে কখনো গুড়-বাতাসা তো কখনো ঢাকের চরাম-চরাম তত্ত্ব দিয়ে বীরভূম জেলায় নিজের মতো করেই ভোট করিয়ে নিতেন। ভোটের দিন সকালেই মোটামুটি বলে দিতেন জেলার কোন আসনে কত লিড দিতে চলেছেন তিনি। কিন্তু, এবারে বোধহয় হাওয়া সত্যিই খারাপ! কেননা, সদ্য তাঁর মাতৃবিয়োগ হওয়ায় এদিন মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ছিল অনুব্রতবাবুর। কিন্তু সেখানে আচার-ক্রিয়া অসমাপ্ত রেখেই তৃনমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় যোগ দেন তিনি। ফলে, বীরভূমের রাজনৈতিক বাতাসে জল্পনা বাড়তে থাকে, যে হাওয়া খারাপ হওয়ায় মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের কাজ অসমাপ্ত রেখেও তাঁকে দলের কাজে ছুটতে হচ্ছে। অন্যদিকে, শাসকদলের বক্তব্য, হাওয়া-টাওয়া কিছু খারাপ নয়, অনুব্রতবাবু দল অন্ত প্রাণ, আর সেই দলের নির্বাচনী কাজে জেলায় এসেছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যাঁকে তিনি মাতৃরূপেই দেখেন। ফলে, তিনি মাতৃশোক বুকে চেপেও দলের প্রতি আনুগত্যেই এইভাবে ছুটে এসেছেন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - মাতৃবিয়োগের পর যতগুলো নির্বাচনী প্রচার হয়েছে, প্রায় সব কটিতেই উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতিকে। পাশাপাশি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দিন যখন বাড়িতে প্রচুর লোক, ঠিক তখনই সমস্ত কিছুকে ছেড়ে দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্তপ্রাণ অনুব্রতর উপস্থিতি সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি আনুগত্য এবং নিষ্ঠাকেই আরও একবার স্মরণ করিয়ে দিল বলে মনে করছে শাসকদলের এক বৃহদংশ। আর মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ছেড়ে ভাই কেষ্টকে মঞ্চে দেখে কিছুটা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। “কেষ্ট বাঘের বাচ্চার মতো লড়াই করছে” বলেও এদিনের মঞ্চ থেকে জানিয়ে দেন তিনি। আর এরপরই অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্টকে পাশে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কেষ্ট তোমার পিছনে ওরা লাগবে – একটু চমকাবে, ধমকাবে। বিজেপি পার্টি অফিস থেকেই সবটা কন্ট্রোল করে। আগেরবারও করেছিল, বাঘের বাচ্চার মতো লড়াই করবে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করবে, তোমাদের হিম্মতকে আমি সম্মান করি। কেউ আসবে যাবে, কারও সাথে খারাপ ব্যবহার করবে না – তবে বিজেপির দালালদের চিনে রাখবে, পরে কাজে লাগবে। স্বাভাবিকভাবেই স্বয়ং তৃণমূল নেত্রীর মুখে এমন কথা শোনার পর রাজনৈতিক মহলে তীব্র শোরগোল পরে গেছে। জল্পনা চলছে, প্রকারন্তরে কি তিনি অনুব্রত মন্ডলকে পঞ্চায়েতের ‘উন্নয়নকে রাস্তায় দাঁড় করানো মডেলকেই’ আবার লোকসভা নির্বাচনে সামনে আনার সবুজ-সংকেত দিলেন? এবারে লোকসভা নির্বাচনে বীরভূমে ১০০% বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী, অনুব্রতবাবু কি পারবেন তাঁর নকুলদানা তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করতে? ‘বিজেপির দালালদের’ চিনে রেখে পরে কোন ‘কাজে লাগানোর’ ইঙ্গিত দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? ২৯ শে এপ্রিল ভোটগ্রহণের পরেই অনেক কিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আপনার মতামত জানান -