ফিরিয়ে আনুন খাটিয়া কালচার, প্রয়োজনে গিয়ে বসুন তেলেভাজার দোকানে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ কলকাতা রাজ্য October 23, 2019 সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, জনসংযোগে তাদের দলীয় জনপ্রতিনিধিরা কিছুটা হলেও বিচ্যুত হয়েছেন। আর তার ফলেই উত্তরবঙ্গে দাগ কাটাতো তো দূর অস্ত, দক্ষিণবঙ্গের অনেক জেলাতেও তৃণমূল ধাক্কা খেয়েছে। উত্তরবঙ্গের আটটি আসনের মধ্যে সাতটি আসনই দখল করে নিয়েছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু যেনতেন প্রকারেন সামনের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যাতে উত্তরবঙ্গের ঘাসফুলের মরুভূমিকে ফুলদ্যানে পরিণত করা যায়, তার জন্য এবার ময়দানে নামলেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর সোমবার প্রথম উত্তরবঙ্গে পা রাখেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমেই বিজয়া সম্মিলনী মঞ্চ থেকে তিনি বাংলার জনগণের পাহারাদার বলে এনআরসি নিয়ে বিজেপির সমস্ত কটাক্ষের জবাব দিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - আর এবার মঙ্গলবার কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে সেখানকার সমস্ত প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তি এবং জনপ্রতিনিধিদের বেশি করে জনসংযোগ করার নিদান দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “গ্রামে যান। মানুষের উঠোনে, খাটিয়ায় গিয়ে বসুন। তাদের কথা শুনুন। খাটিয়া কালচার ফিরিয়ে আনুন। প্রয়োজনে তেলেভাজার দোকানে গিয়ে বসুন। সরকারি আধিকারিকরা সরকারের মুখ। আপনাদের সম্পর্কে কেউ খারাপ কথা বললে খারাপ লাগে। যে বা যাদের সঙ্গে কথা বলবেন, সতর্ক থাকবেন। এমন কিছু বলবেন না, যেটা এডিট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।” জুনিয়ার আর সিনিয়র অফিসারদের মধ্যে জাতির তিক্ততা না আসে তার জন্যেও এদিনের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে সকলকে সতর্ক করে দেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, বর্তমানে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির তরফ থেকে প্রায়শই দাবি করা হচ্ছে, দল এবং প্রশাসনকে একযোগে চালাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি আধিকারিকদের তিনি ক্যাডার বানিয়ে দিয়েছেন। আর বিরোধীদের সেই দাবিতে তিনি যে কিছুটা হলেও মর্মাহত, এদিন প্রশাসনিক আধিকারিকদের বৈঠকে সেই কথা তুলে না ধরে পরোক্ষে প্রশাসনকে আরও বেশি করে জনসংযোগে যাওয়ার নিদান দিয়ে তা বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী বলে মত বিশেষজ্ঞ মহলের। অন্যদিকে এদিনের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এনআরসি নিয়েও রাজ্য সরকারের অবস্থান ফের আরও একবার স্পষ্ট করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কোনো ডিটেনশন ক্যাম্প এখানে হবে না। অসমে হয়েছে, কারণ সেটা অসম চুক্তির অংশ ছিল। এখানে এনআরসি করার কোনো পরিকল্পনা করতে দেওয়া হবে না। নাগরিক সংশোধনী বিলে আমাদের আপত্তি রয়েছে। তাই সাধারণ মানুষের কোনো চিন্তা নেই।” সব মিলিয়ে উত্তরবঙ্গে ভরাডুবির পর একদিকে প্রথমে সেই নিজেকে জনতা জনার্দনের পাহারাদার হিসেবে তুলে ধরা, আর অন্যদিকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের আরও বেশি করে জনসংযোগ দেওয়ার নিদান দিয়ে নিজের দল এবং সরকারের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করার চেষ্টা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু শেষপর্যন্ত মমতা বন্দোপাধ্যায় বজ্রকন্ঠে প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের এই নিদান দিলেও তা কতটা কার্যকরী করতে পারেন সেই কর্তা ব্যক্তিরা, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -