এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মমতা সরকারের নামে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন কেন্দ্রীয় নেতা

মমতা সরকারের নামে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন কেন্দ্রীয় নেতা


 

ইতিপূর্বেও বহুবার ফোনে আড়িপাতার কথা বলে এসেছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সম্প্রতি আর একবার কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টি নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ফোন ট্যাপিং এবং হোয়াটসঅ্যাপে নজরদারি চালানোর বিষয়ে তীব্র আক্রমণ জানিয়েছেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের অধ্যক্ষ তথা পশ্চিমবাংলার প্রশাসনিক প্রধান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কিন্তু এবার আক্রমণের পাল্টা সুর চড়িয়ে উল্টে তার বিরুদ্ধেই বিভিন্ন রকমের অভিযোগ করলেন পশ্চিমবঙ্গ ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। কৈলাশবাবুর মন্তব্য অনুযায়ী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ফোনে আড়িপাতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম ব্যক্তিগত যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে।

তাই কেন্দ্রীয় সরকারের উপরে নজরদারি করার অভিযোগ না করে নিজেদের দিকে তাকানোর উপদেশ দেন ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা। জানা যায়, সম্প্রতি কংগ্রেস অধ্যক্ষ ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী ভারতীয় জনতা পার্টির নরেন্দ্র মোদী সরকারের উপরে একটি গুরুতর অভিযোগ করেন।

সোনিয়া গান্ধীর মতে, ইজরাইলি পেগাসাস নামক সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার সাংবাদিক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সমাজকর্মী থেকে শুরু করে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ফোন ট্যাপ এবং হোয়াটসঅ্যাপে অনৈতিকভাবে আড়ি পাতছেন।

আর এই কাজকে সম্পূর্ণরূপে লজ্জাজনক এবং সংবিধান বহির্ভূত বলে আখ্যা দিয়েছেন কংগ্রেস অধ্যক্ষ সোনিয়া গান্ধী। আর প্রত্যাশিতভাবেই সোনিয়া গান্ধীর এই অভিযোগকে সর্বোতভাবে সমর্থন করেছেন পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “এই ঘটনা খুবই চিন্তার বিষয়। আমার ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে। আমি সেটা বুঝতে পারছি। সবকিছুতেই নজরদারি চালানো হচ্ছে। এটা ঠিক নয়। সরকারের কাজকর্ম করতে ব্যাঘাত ঘটছে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

llবলাই বাহুল্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কন্ঠে এই অভিযোগ নতুন কিছু নয়। বিগত দিনে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন বারবার নিজের ফোন ট্যাপ হওয়ার অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এবার অবশ্য সেই অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু থেকে বামফ্রন্ট সরে গিয়ে এসেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বিরোধীদেরকে এই অভিযোগে অভিযুক্ত করা পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর কাছে নতুন কিছু নয়। কিন্তু অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ভাবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্র সরকারের উপরে তাদের ফোন এবং হোয়াটসঅ্যাপে নজরদারি চালানোর বিষয়ে জোরালোভাবে আওয়াজ তোলেন।

তিনি জানান, এটা ফ্যাক্ট যে ইজরাইলের এনএসও ভারত সরকারকে ফোন ট্যাপ করার বিশেষ সফটওয়্যার প্রদান করেছেন। এই ব্যাপারে যুক্ত হয়েছে ভারতবর্ষের দুটি রাজ্যের সরকার এবং সেই দুটি সরকারের মধ্যে একটি সরকার যে ভারতীয় জনতা পার্টির, সেই বিষয়েও স্পষ্ট করেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিজেপি একাধিক মন্ত্রী আমলা এবং আইএস, আইপিএস সদস্যদের উপরে নজর রাখছে। এছাড়াও রেহাই পাচ্ছে না মহামান্য বিচারপতিরাও। আর এই কার্য সম্পন্ন করার জন্য একটি গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে। যে গাড়ি 10 কিলোমিটার আওতাভুক্ত যেকোনো ব্যক্তির ফোন এবং হোয়াটসঅ্যাপের সমস্ত তথ্য চুরি করতে সক্ষম। আর এই অভিযোগ করার পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী গোটা বিষয়ে ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি করেছেন।

আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে এদিন সরাসরি তাঁর প্রতি পাল্টা আক্রমণ শানান পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের সন্ত্রাসের শাসন চলছে। পঞ্চায়েত ভোট এবং তার পরবর্তীকালে বিজেপি কর্মীদের নৃশংসভাবে হত্যা থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেসের দ্বারা বিজেপি কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার নানা রকম ঘটনা তার প্রমান বহন করছে।”

এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “রাজ্যে এই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন অভিযোগ করছেন কেন্দ্রীয় সরকার ফোন ট্যাপিং করছে।” তিনি আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই তো সাংবাদিকদের থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের ফোন ট্যাপ করান।” এই বিষয়ে একজন পুলিশ কর্তার নেতৃত্বাধীন একটি বিশেষ টিম কাজ করছে বলেও অভিযোগ কৈলাশ বিজয়বর্গীর।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনার আগে নিজের দিকে তাকান বলে উপদেশ দেন ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিমবাংলার বর্তমান রাজনীতিতে যা শুরু হয়েছে তাতে ভারতীয় জনতা পার্টির উপরে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ এবং মুখ্যমন্ত্রীর উপরে ভারতীয় জনতা পার্টির অভিযোগ অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়।

কিন্তু ব্যক্তিগত তথ্য থেকে শুরু করে অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে যেই ফোন এবং হোয়াটসঅ্যাপে আলোচনা হয়, তার উপরে কোনরকম নজরদারি চালানো যে সম্পূর্ণ সংবিধানবিরোধী কার্যকলাপ, সেই ব্যাপারে একমত সকলেই। তাই শাসক দল থেকে শুরু করে যে কোনো রকমের সংস্থারই স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এই ধরনের কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকা উচিত বলে মনে করে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এখন গোটা পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!