এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বেকার যুবক-যুবতীর জন্য সুখবর বয়ে আনলো মমতা সরকার, জেনে নিন বিস্তারিত

বেকার যুবক-যুবতীর জন্য সুখবর বয়ে আনলো মমতা সরকার, জেনে নিন বিস্তারিত

পশ্চিমবঙ্গে বেকার সমস্যা নতুন কোনো কিছু নয়। দিনে দিনে দিনে যত শিক্ষার প্রসার, প্রচার বেড়েছে, ততই চাকরিপ্রার্থীদের সংখ্যাও বেড়েছে। অতীতে কংগ্রেসের শাসনকাল, পরবর্তীতে বামফ্রন্ট জামানায় এবং বর্তমানে তৃণমূল জাতীয় বেকারদের চিত্রটা কোনো অংশে পরিবর্তিত হয়নি।

যদিও রাজ্য সরকার তার নিজের মতো করে স্কিল ডেভলপমেন্ট ভোকেশনাল ট্রেনিং, আইটিআই, আইআইটিআই ইত্যাদির মাধ্যমে বৃত্তীয় শিক্ষা ব্যবস্থাকে চালু করে সরকারি চাকরি থেকে বাইরে বেকাররা যেন সেল্ফ এমপ্লয়িজের দিকে মনোনিবেশ করতে পারে, তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আর এই সমস্ত শিক্ষা গ্রহণ করে অনেকেই সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির বাইরে ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং হাতের কাজের মাধ্যমে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে সক্ষম হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এবার রাজ্য সরকার আরও এক অভিনব পদ্ধতি মাধ্যমে টেকনিক্যাল প্রশিক্ষণকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা করছে। খুব তাড়াতাড়ি অন্তত এক লক্ষ বেকার যুবক-যুবতীদেরকে গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ দেবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শ্রমদপ্তর। গত মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত দুইটি পোর্টাল উদ্বোধন উপলক্ষে নব মহাকরণের শ্রমদপ্তরের সদর কার্যালয়ে এক সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এই কথা ঘোষণা করেন।

মন্ত্রী জানান, শুধুমাত্র গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়েই থেমে থাকবে না তার দপ্তর। পরিচারিকাদের প্রশিক্ষণের জন্য আলাদা একটি পোর্টাল খুলছে শ্রমদপ্তর। সেটার নাম দেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষণ শিবির ফর দা ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স। এখানে বলে রাখা ভালো, আগে অসংগঠিত ক্ষেত্রে মহিলারা বাসা বাড়িতে কাজ করলেও তাদের কোনো সরকারি স্বীকৃতি ছিল না। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার অনেক আগেই সামাজিক মুক্তি প্রকল্পের নামে ক্ষুদ্র শ্রমিকদেরকে এক ছাতার তলে আনার চেষ্টা করেছে। যার মধ্যে বাদ নেই গৃহকর্মীরা।

আর এদিন সাংবাদিক বৈঠকে শ্রমমন্ত্রীর কথায় উঠে আসে আরও বেশি করে গৃহকর্মীদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সময়োপযোগী করে তোলা। এই বিষয়ে বলতে গিয়ে শ্রমমন্ত্রি মলয় ঘটক জানান, এখন প্রত্যেকটি বাড়িতেই ইলেকট্রনিক্স গেজেটের আধিক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেমন, টিভি, রেফ্রিজারেটর, মাইক্রোওভেন, এসি অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইস। সেগুলি চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ট্রেনিংরত এই গৃহকর্মীদেরকে।

পাশাপাশি প্রত্যেক দিনের ট্রেনিংয়ের পর আড়াইশো টাকা করে বৃত্তিও তাদেরকে দেওয়া হবে। রান্নাবান্না, প্রাথমিক চিকিৎসা, পরিছন্নতা হবে এই শিবিরে। প্রতিদিন 5 ঘন্টা করে দশ দিন এই প্রশিক্ষণ চলবে। এছাড়াও গৃহকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হচ্ছে। ওই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পরিচারিকাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা অনেক বেশি সহজ হয়ে যাবে।

এদিনের এই অনুষ্ঠানে “আকর্ষণ” নামে একটি পোর্টালের উদ্বোধন করা হয়েছে। আপাতত শিলিগুড়ি, মালদা, কল্যাণী, কলকাতা, আসানসোল এবং বাঁকুড়া এই ছটি এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকের সঙ্গে টকে যুক্ত করা হয়েছে। পরে রাজ্যের 71 টি এম্প্লয়মেন্ট ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনা হবে এটিকে। কিন্তু এ থেকে ঠিক কি সুবিধা পাওয়া যাবে! জানা গেছে, চাকরি বেছে নেওয়ার জন্য অনলাইন সাইকোমেট্রিক টেস্ট দেওয়া যাবে। কে কেমন মনের অধিকারী তা জেনে সেই অনুযায়ী চাকরি খোঁজার চেষ্টা করতে পারবেন ব্যাক্তিরা।

বিশেষজ্ঞদের দিয়ে মুখোমুখি কাউন্সেলিংও করানো হবে। ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংও গ্রুপ করা হয়েছে। আরও অনেক সুবিধা নেওয়া যাবে উদ্বোধন হওয়া এই যোজনার মাধ্যমে। বেশি করে গ্রুমিং ক্লাসের মাধ্যমে ইংরেজি বলার ক্ষমতা বাড়াতে পারবেন রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীরা। ইংরেজি ছাড়াও চাকরির পরীক্ষায় আবশ্যিক এমন বিষয়ে লাইভ কোচিং ক্লাস হবে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় মক টেস্ট দেওয়া যেতে পারে। চাকরির পরীক্ষায় আসতে পারে এরকম পঞ্চাশ হাজার প্রশ্নের একটি ব্যাংক তৈরি করা হয়েছে। তার সুবিধাও নিতে পারবে বেকার যুবক যুবতীরা।

তবে এই যোজনায় সবশেষে উল্লেখ রয়েছে, সিভি লেখা, যোগাযোগ, কথা বলার দক্ষতা, প্রেজেন্টেশন স্কিল্ল প্রভৃতি বানানোর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ। এখন সবকটি এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকের প্রায় 30 লক্ষ 32 হাজার নথিভূক্ত প্রার্থী রয়েছেন। তারা তো এর সুযোগ পাবেন। কিন্তু এর বাইরে যারা ঢুকে রেজিস্ট্রেশন করতে লগইন করবেন, তারাও এই সুযোগ সুবিধা নিতে পারবেন বলে মন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন। এদিনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শ্রম দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জাকির হোসেন, ডক্টর নির্মল মাজি এবং গোলাম রাব্বানী।

সবকিছু মিলিয়ে এখন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যে হারে বেকার সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, তা কিছুটা প্রশমিত করতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই উদ্যোগ সরকারের প্রতি মানুষের বিশ্বাসকে কিছুটা হলেও বাড়াতে পারবে। যদিও এই ধরনের প্রশিক্ষণের কথা বারবার উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কন্ঠে। এবার শ্রমদপ্তরের মাধ্যমে বেকার যুবক-যুবতীদের চাকরি অন্বেষণে প্রত্যক্ষ ভূমিকা নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। যার ফলে উপকৃত হবে সমাজের একটা বড় অংশ বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!