এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মমতা সরকারকে বড়সড় চ্যালেঞ্জ বামেদের, জেনে নিন

মমতা সরকারকে বড়সড় চ্যালেঞ্জ বামেদের, জেনে নিন

কেন্দ্রে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ করে যখন উত্তাল হয়েছে গোটা দেশের বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো, সেইরকম আবহে অনুষ্ঠিত হয় ঝাড়খন্ড বিধানসভার নির্বাচন। সেই নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টিকে পরাজিত করে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাকে নিয়ে সরকার গঠন করেছ মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন হেমন্ত সোরেন। আর এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিরোধী ঐক্য মঞ্চের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

হেমন্তবাবুর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আসা ভারতবর্ষের বিভিন্ন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল, কংগ্রেস থেকে শুরু করে আর আরজেডি, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ইত্যাদি দলের মধ্যে বিজেপি বিরোধিতায় একে অপরের সঙ্গে মেলবন্ধন রক্ষা করতে দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

তারপরেই পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যের ভারতীয় জনতা পার্টির তরফ থেকে রাঁচিতে গিয়ে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ সভাকে বিরোধী ঐক্য মঞ্চ হিসাবে প্রতিস্থাপিত করার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াসকে কটাক্ষ করতে দেখা যায়। এই বিষয়ে হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় আগেই নিজের সুর চড়িয়েছিলেন। আর এবার কিছুটা ভারতীয় জনতা পার্টির মতনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিরোধী ঐক্য মঞ্চের মধ্যমণি হিসেবে খোঁচা দিতে দেখা গেল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে।

সম্প্রতি প্রয়াত আরএসপি সম্পাদক ক্ষিতি গোস্বামীর স্মরণসভায় গিয়ে সূর্যকান্তবাবু বলেন, “আগামী 8 জানুয়ারি কেন্দ্র সরকারের আনা নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস সহ বিভিন্ন সংগঠন। বিগত দিনে বহুবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আয়োজন করা ধর্মঘট কর্মসূচিকে কঠোরভাবে নিষ্ক্রিয় করতে দেখা গেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে।

এক্ষেত্রে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পূর্বঘোষিত বন্ধ বিরোধী নীতিকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে রাজ্য প্রশাসন। তবে এবার আগামী 8 জানুয়ারি কেন্দ্র সরকারের সংশোধিত নাগরিক আইন বিরোধী ধর্মঘট কর্মসূচিকে বানচাল করার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে এক প্রকার হাতাহাতি পর্যন্তও হয়ে যেতে পারে বলে আগাম হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গেল সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

শুধু তাই নয়, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ মঞ্চে বিরোধী ঐক্য মঞ্চের মধ্যমনি হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকাকে কটাক্ষ করেন সোমবার প্রয়াত আরএসপি সম্পাদক বর্ষিয়ান নেতা ক্ষীতি গোস্বামীর স্মরণসভায় গিয়ে তিনি বলেন, “উনি ঝাড়খন্ডে বিরোধী ঐক্য তৈরি করতে যাচ্ছেন, অথচ এখানে এনআরসি নাগরিকত্ব আইন মোদি সরকারের জনস্বার্থ বিরোধী বিভিন্ন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আয়োজন করা ধর্মঘট ভাঙতে পুলিশ লেলিয়ে দেবেন। অতীতের অভিজ্ঞতায় এই নজির দেখা গিয়েছে একাধিকবার। তবে এবার স্পষ্ট কথা, পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধবে। আর সেই পরিস্থিতির জন্য দায়ী থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। আমরা তার দায়িত্ব নেব না।”

বস্তুত, প্রায় তিন মাস আগে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বেকারত্ব থেকে শুরু করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সহ 12 দফা ইস্যুতে ধর্মঘট ঢাকার কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল বাম সংগঠনগুলি। কিন্তু মাঝখানে এনআরসি এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ইস্যু সক্রিয় হয়ে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এহেন মোক্ষম হাতিয়ার ছাড়তে চাইছে না বামফ্রন্ট সহ কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি বলে মত রাজনৈতিক মহলের।

শুধু তাই নয়, রাজ্যের ক্ষেত্রেও লাগাতার এনআরসি বিরোধী এবং সংশোধিত নাগরিক আইন বিরোধী আন্দোলন কর্মসূচির মাধ্যমে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দিতে চাইছে বাম-কংগ্রেস জোট। যাতে করে আগামী দিনে কেন্দ্র বিরোধী প্রেক্ষাপটে তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে এগিয়ে থাকতে পারে তারা। তবে সারা ভারতবর্ষের মধ্যে সব থেকে বেশি সংশোধিত নাগরিক আইন এবং এনআরসির বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ করা যথেষ্ট দুঃসাধ্য ব্যাপার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এদিনে স্মরণসভা থেকে সূর্যবাবুর রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, যদি 8 তারিখের আন্দোলন দমন করতে পুলিশ নামানো হয়, তাহলে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচার আসলে যে মেকি প্রচার, তার জন্য রাজ্যজুড়ে প্রচার শুরু করবে বামফ্রন্ট এবং সহযোগী দলগুলি। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বামফ্রন্টের বড় নেতা ক্ষিতি গোস্বামীর স্মরণসভায় গিয়ে তার স্মৃতিচারণ করতে দেখা যায় সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে। ক্ষিতিবাবুর রাজনৈতিক জীবনে আন্দোলন-সংগ্রামের কোনো বিকল্প ছিল না।

এদিন সূর্যকান্ত মিশ্রর পাশাপাশি বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, মনোজ ভট্টাচার্য, আরএসপি সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরী এবং বিভিন্ন স্তরের বামফ্রন্ট নেতৃত্বকে স্মৃতিচারণা করতে দেখা যায়। পাশাপাশি সকলেই আগামী 8 জানুয়ারি ধর্মঘট সফল করার ডাক দেন। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, 8 তারিখের ধর্মঘট রীতিমত উত্তেজনাপূর্ণ হতে চলেছে।

একদিকে যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এই ধর্মঘট থেকে বিরোধীতা করার চেষ্টা না করে, তাহলে ধর্মঘট বিরোধীতার অবস্থানে প্রশ্নচিহ্ন উঠতে পারে। আবার ধর্মঘটে সমর্থন না জানালে এনআরসি নাগরিকত্ব ইস্যুতে তার অবস্থান হালকা হতে পারে। সব কিছু মিলিয়ে আগামী পরিস্থিতি কোনদিকে গড়ায়, সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!