একটি ‘বিশেষ’ রাজনৈতিক দলকে আটকাতে এবার বিশপদের সঙ্ঘবদ্ধ হতে আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর জাতীয় রাজ্য August 2, 2018 শিকাগো, চীন এবং দিল্লি সফরে সেন্ট স্টিফেন্স কলেজে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসূচি বাতিল হলেও খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের অনুষ্ঠানে এন আর সি ইস্যুতে বিজেপিকে কড়া হুঁশিয়ারি দিতে পিছপা হননি মুখ্যমন্ত্রী। বিশপদের সঙ্ঘবদ্ধ হবার অনুরোধ জানিয়ে নাগরিকপঞ্জির তালিকা থেকে বাদ পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান তিনি। বিজেপিকে দেশে গৃহযুদ্ধ ও রক্তপাত ঘটানোর চেষ্টার দোষে দুষ্ট করেন। তিনি বলেন এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে গিয়ে বসবাস করলেই কেউ বিদেশি হয়ে যায় না। দেশকে মাতৃভূমি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন “বিভাজনের রাজনীতি মেনে নেব না। মাতৃভূমিকে কিছুতেই ধর্ম, জাতপাত ও ভাষাগত কারণে ভাগ হতে দেব না। অসমে যা ঘটছে সেটা উত্তরপ্রদেশ, বিহার বা উত্তরাখণ্ডেও ঘটতে পারে। কিন্তু, বাংলায় কখনওই এমন হতে দেব না। অতন্দ্র প্রহরীর মতো জেগে আছি আমরা।” বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন দেশে কে কি করবে সব কিছু একটিমাত্র রাজনৈতিক দল নির্ধারণ করে দিতে পারেনা। বিজেপিকে ঘুরিয়ে গণপিটুনিতে মদত দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করেন তিনি। নাগরিকপঞ্জি থেকে নাম বাদ পড়া প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি অবাক হয়েছি, দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদের ভাইপোর নাম নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে! বাঙালি, বিহারি, নেপালি, রাজস্থানি এবং খ্রিস্টান, মুসলিমদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। ওঁরা ঠিক করে দেবেন, কে দেশে থাকবে আর কে থাকবে না!” ধর্মীয় ভেদাভেদের প্রচেষ্টার অভিযোগ তুলে তিনি বলেছেন, ‘আমি হিন্দু বলে চার্চে যেতে পারব না? আমি নিজের ইচ্ছেমতো খেতে পারব না, এইসব লেকচার কেন শুনব?’” সমাজসেবামুলক বিভিন্ন কাজে খ্রিস্টানদের বিশেষত মাদার টেরেসার ভূয়সী প্রশংসা করে মমতা বলেন “দেশে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে অসাধারণ কাজ করে চলেছেন খ্রিস্টানরা। মাঝে মাঝে আমার আপশোস হয়, কেন খ্রিস্টান হয়ে জন্মালাম না। মাদারকে বড্ড ভাল চিনতাম। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় কলকাতার রাস্তায় নেমে কাজ করেছেন একমাত্র মাদার। একবার উনি আমায় বলেছিলেন, আমিও রাস্তায়, তুমিও”। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখানে তিনি অসমের ৪০ লাখ মানুষের নাগরিকপঞ্জী থেকে বাদ পড়া, অসমে বিভিন্ন জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা, প্রচুর পুলিস জড়ো করা, ইন্টারনেট সংযোগ কেটে দেওয়া ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এর উত্তরে রাজনাথ মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে বলেন, এটা চূড়ান্ত তালিকা নয়, খসড়া। এর ভিত্তিতে কাউকে হয়রান করা হবে না। মমতা আরও বলেন লিয়াকত চুক্তি ও ইন্দিরা-মুজিবুর চুক্তি অনুযায়ী এভাবে কাউকে বার করে দেওয়া যায় না। তিনি তাঁর বক্তব্যের স্বপক্ষে কাগজপত্র রাজনাথ সিংকে দিয়ে বলেন বাংলায় এরকম জোরজুলুম তিনি কখনই হতে দেবেন না। বিজেপির সুষমা স্বরাজ, রাজনাথ সিং এবং নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এই দুই সময়ের নেতৃত্বকে তিনি আলু ও আলুর চিপস বলে তুলনা করেন। আসলে তাঁর এই বক্তব্যে তিনি বিজেপি নেতৃত্বের একাল সেকাল ও ভালো মন্দকেই তুলে ধরেন। আপনার মতামত জানান -