নদিয়ায় বিজেপির উত্থান, জেলা নেতৃত্বকে কড়া হুঁশিয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য June 23, 2019 লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্লোগান ছিল 42 এ 42। কিন্তু 42 এ 42 টটি তো দূর অস্ত, উল্টে গত 2014 সালে তৃণমূল বাংলা থেকে 34 টি আসন পেলেও এবার তাদের ঝুলিতে এসেছে মোটে 22 টি আসন। অন্যদিকে বিজেপি 2 থেকে বাড়িয়ে তাদের আসন সংখ্যা 18 করে নিয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে ফলাফল পর্যালোচনা বৈঠকেই অনেক জেলায় নেতৃত্বদের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। কিছু জেলার সাংগঠনিক বদল এনেছিলেন তিনি। তবে প্রতিটি জেলা নিয়ে পৃথকভাবে তিনি বসবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেইমত প্রথমে হুগলির পর এবার গতকাল নদীয়া জেলার খারাপ ফলাফল নিয়ে সেই জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে তৃণমূল ভবনে বৈঠক করলেন তিনি। জানা যায়, এই নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল জয়লাভ করলেও রানাঘাট এবং বনগায় তাদের পরাজয় হয়েছে। বস্তুত, এই বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রটি উত্তর 24 পরগনা জেলার মধ্যে পড়লেও তার কিছুটা অংশ নদীয়ার মধ্যে রয়েছে। তাই সেক্ষেত্রে যে অংশটা নদীয়ায় রয়েছে সেখানেও শাসক দল হেরে যাওয়ায় এদিন জেলা নেতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। অনেকে বলেন, এবারের লোকসভা নির্বাচনে শাসকদলের খারাপ ফলাফল হওয়ার পেছনে নিচুতলার নেতাদের দুর্ব্যবহার, দুর্নীতি জনসংযোগের অভাব এবং দলীয় গোষ্ঠীকোন্দলই দায়ী। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সূত্রের খবর, শুক্রবার তৃণমূল ভবনে নদীয়া জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকে কেন খারাপ ফলাফল হলো তা নিয়ে জানতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার উত্তরেই জেলা তৃণমূলের নেতারা বলেন, বিজেপির মেরুকরণই এর জন্য দায়ী। পাল্টা তৃণমূল নেত্রী প্রশ্ন করেন, বিজেপি যদি মেরুকরণের রাজনীতি করে তাহলে আপনারা কেন তার পাল্টা প্রচার করতে পারলেন না! ফলে কিছুটা হলেও চাপে পড়ে নদীয়া জেলা তৃণমূলের নেতারা। আর এরপরই নাম ধরে ধরে গোষ্ঠী কোন্দল মেটানোর জন্য জেলা নেতাদের হুঁশিয়ারি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা যায়, চাকদহের তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী রত্না ঘোষ এবং চাকদহ পুরসভার চেয়ারম্যান দীপক চক্রবর্তীর মধ্যে অবিলম্বে যাত ঝামেলা বন্ধ হয় তার বার্তা দেন তৃণমূল নেত্রী। পাশাপাশি শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য এবং শান্তিপুর পৌরসভার পৌরপ্রধান অজয় দের গন্ডগোলও বন্ধ করতে বলেন তিনি। অন্যদিকে মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, বিধায়ক গৌরীশংকর দত্ত এবং কংগ্রেস থেকে তৃণমূলের আসা রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্রের বিধায়ক শঙ্কর সিংহকে উদ্দেশ্য করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আপনারা দাপুটে নেতা। কেন নিজের এলাকায় ভালো ফল করতে পারলেন না! কেন আপনারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন! সাধারণ মানুষের সাথে আরও বেশি করে জনসংযোগ করুন।” শেষে নদীয়ায় দলকে ঘুরে দাঁড় করানোর জন্য জেলা নেতাদের একমাস সময় বেঁধে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, এই নদীয়ায় বিজেপির যেমন বাড়বাড়ন্ত হয়েছে, ঠিক তেমনই শাসকদলের খারাপ ফলাফলের পেছনে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলও দায়ী। আর তাই তা বুঝতে পেরেই এবার নদীয়া জেলা নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠকে নেতাদের মধ্যে গন্ডগোল থামাতেই বেশি জোর দিলেন তৃণমূল নেত্রী। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠক করে যতই সংগঠনকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন না কেন, বিজেপির দাবি, এতে লাভের লাভ কিছুই হবে না। সব মিলিয়ে এবার হুগলির পর নদীয়া জেলার খারাপ ফলাফলের জন্য দলের জেলা নেতৃত্বকে ডেকে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া হুঁশিয়ারি দিলেও শেষ পর্যন্ত নেত্রীর নির্দেশ মেনে সব নেতা-নেত্রীরা একজোট হয়ে পথে নেমে দলকে ঘুরে দাঁড় করাতে পারেন কিনা এখন সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -