প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে দাবি করা হয়েছে , মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্প চলে যাচ্ছে বিরোধীদের বাড়িতেও। তাই বিরোধীদের অনেক নেতা-নেত্রীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়ে তার বিরোধিতা করতে রাস্তায় নেমে পড়ছে। আসলে এটা বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা। তবে এতদিন মুখে তৃণমূল নেতারা এই কথা বললেও, এবার সত্যিই আসল ছবিটা কার্যত পরিষ্কার হয়ে গেল। যেখানে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার লোকজন এবং তৃণমূলের বাছাই করা নেতারা কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভায় গিয়ে বিভিন্ন স্কুলপড়ুয়ার কাছে কন্যাশ্রীর টাকা এবং সবুজসাথীর সাইকেল পেয়েছেন কিনা, তা জানতে চান।

আর সকলেই তাতে সম্মতি জানান। আশ্চর্যজনক ভাবে এখানকার যে স্কুলপড়ুয়াদের কাছে এই কথা জানতে চাওয়া হয়েছিল, তাদের বাবা-মা কেউ বিজেপি সমর্থক, আবার কেউ বা বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনাতেই পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, দল মত নির্বিশেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্প পৌঁছে গেছে সকলের কাছে। এক্ষেত্রে কোনোরূপ রাজনৈতিক রঙ দেখা হয়নি বলে দাবি করতে শুরু করেছে শাসক দল।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বর্তমানে তপশিলি এলাকায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে তপশিলি সংলাপ নামে একটি কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। যেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রশান্ত কিশোরের টিমের লোকজন তপসিলিদের নানা সমস্যার কথা শুনতে শুরু করেছেন। আর সেখানেই অনেক মানুষ জানিয়ে দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়ন নিয়ে তারা খুশি। শুধু তাই নয়, বিরোধীদের পক্ষ থেকে অনেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্প তাদের কাছে পৌঁছেছে বলে জানিয়ে দেন। প্রশান্ত কিশোরের টিমের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয়, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে চান?

আর সেই সময় পোড়াগাছার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক মহিলা কর্মী মমতা বিশ্বাস বলেন, “এই রাজ্যের ভোটে মমতাকেই আবার চাই।” আর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একজন কর্মী যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সমর্থন জোগালেন এবং তার উন্নয়নমূলক প্রকল্পে খুশি বলে দাবি করলেন, তাতে বিজেপি যে অনেকটাই চাপে পড়ে গেল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধু তাই নয়, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেস প্রচারে ঝড় তুলে ভারতীয় জনতা পার্টিকে যে কোণঠাসা করে দিতে সক্ষম হবে, সেই ব্যাপারেও নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা।

ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে বিজেপির অনেক কর্মী সমর্থক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্প সুবিধা পাওয়ায় গেরুয়া শিবিরের বিরোধিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন এই প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগর তৃণমূলের sc.st.obc সেলের সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি বিশ্বাস বলেন, “বিভিন্ন ভাতা, কন্যাশ্রী সবুজসাথী প্রকল্প বিরোধীদের যে মন জয় করে নিয়েছে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক নেত্রী ও বিজেপির নেতা পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, বাংলাতে আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাই। এর থেকে বড় পাওনা আর কি হতে পারে!” সত্যিই তো তাই! তাহলে তারা কেন দিনরাত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করেন?

যেখানে তাদের দলের অনেক নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন বলে দাবি করছেন, সেখানে বিজেপির এই তৃণমূল বিরোধিতা কি প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে গেল না? এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির মিডিয়া সেলের কনভেনার সন্দীপ মজুমদার বলেন, “কতটা করুন অবস্থা হলে শাসক দলকে বিরোধীদের কাছে যেতে হয়, এর থেকে ওদের অবস্থা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে।” অর্থাৎ তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিরোধীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে বলে দাবি করা হলেও, তাকে অন্যদিক দিয়ে কটাক্ষ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। সব মিলিয়ে এবার গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।