প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের ফলাফল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বেশ কিছুদিন আগে হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়‌। তবে যে বিচারপতির এজলাসে এই মামলা গিয়েছিল, সেই কৌশিক চন্দকে নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি তুলতে দেখা যায় ঘাসফুল শিবিরকে। যেখানে বিচারপতি কৌশিক চন্দ এর আগে বিজেপির হয়ে একাধিক মামলা লড়েছেন। তাই তার এজলাসে যাতে সেই মামলা না হয়, তার জন্য আবেদন করতে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও বা পরবর্তীতে সেই মামলা থেকে অব্যাহতি নেন তিনি।

পাশাপাশি এই ব্যাপারে মামলাকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 5 লক্ষ টাকার জরিমানা করে দেন কৌশিক চন্দ। তবে তিনি অব্যাহতি নেওয়ায় যথেষ্ট স্বস্তি তৈরি হয় শাসক শিবিরের অন্দরে। কিন্তু এবার রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কার্যত চাপের মুখে ফেলে দিয়ে সেই বিচারপতি কৌশিক চন্দকে কলকাতা হাইকোর্টের স্থায়ী পদে নিয়োগ করল দেশের শীর্ষ আদালত। যার ফলে রাজ্যের পক্ষ থেকে এতদিন কৌশিক চন্দকে নিয়ে যে আপত্তি তোলা হয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের ফলে সেই আপত্তি যেমন খন্ডন হল, ঠিক তেমনই রাজ্যের বিড়ম্বনা কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পেল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের পক্ষ থেকে একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। যেখানে জানানো হয়, বিচারপতি কৌশিক চন্দকে কলকাতা হাইকোর্টের স্থায়ী পদে নিয়োগ করা হল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হাইকোর্টের সমস্ত বিচারপতি প্রথমে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে সুপ্রিমকোর্টের কলেজিয়ামের পক্ষ থেকে তাদের স্থায়ী পদে নিয়োগ করা হয়। এক্ষেত্রেও বিচারপতি কৌশিক চন্দকে নিয়ে এইরকমই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। তবে এই সিদ্ধান্ত যে শাসক শিবিরের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত একাংশ।

কেননা তৃণমূল কংগ্রেস এবং তাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রাম মামলা নিয়ে এই বিচারপতি কৌশিক চন্দের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছিলেন। যাকে কেন্দ্র করে শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেছিলেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এভাবে বিচারপতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলা কি ঠিক, তা নিয়ে সোচ্চার হতে শুরু করেন অনেকে। আর এই পরিস্থিতিতে এবার সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের পক্ষ থেকে সেই কৌশিক চন্দকে হাইকোর্টের স্থায়ী পদে নিয়োগ করায় ব্যাপক গুঞ্জন তৈরি হয়েছে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এর ফলে গোটা পরিস্থিতি আরও জটিল থেকে জটিলতর হতে শুরু করল। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত স্বাভাবিক হলেও, তাদের এই সিদ্ধান্তের ফলে শাসক শিবির অত্যন্ত ব্যাকফুটে পড়ে গেল। কেননা তাদের পক্ষ থেকে বারবার এই নন্দীগ্রাম মামলাকে কেন্দ্র করে বিচারপতি কৌশিক চন্দের হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। কিন্তু এবার সেই বিচারপতিকেই কলকাতা হাইকোর্টের স্থায়ী পদে বসানোর ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।