মমতার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভাঙ্গার অভিযোগ, কেন্দ্রের বিবৃতিতে চাপে তৃণমূল! জাতীয় তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য June 2, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – দুর্যোগ পরবর্তী কলাইকুন্ডার বৈঠক নিয়ে বিতর্ক এখনও চলছে। ভয়াবহ “ইয়াস” নামক দুর্যোগের পর ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট নিতে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা সফরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যেখানে ওড়িশায় প্রশাসনিক বৈঠক করার পর কলাইকুন্ডাতে পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা ছিল তার। কিন্তু প্রথম থেকেই এই বৈঠকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী উপস্থিত থাকার জন্য সেখানে উপস্থিত থাকবেন কিনা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল প্রশ্ন। অবশেষে সেই সম্ভাবনাতে সীলমোহর দিয়ে বৈঠক শুরু হয়ে গেলেও, সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যেখানে কলাইকুন্ডাতে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী, ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। তবে মাঝে বৈঠক শুরু হওয়ার বেশ কিছু সময় পরে সেখানে উপস্থিত হন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে কিছুক্ষণ সময় চেয়ে নিয়ে সেই বৈঠকের ঘরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তুলে দিয়ে অন্যান্য জেলা সফর করতে হবে বলে বেরিয়ে আসেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। আর এই ঘটনাকে হাতিয়ার করেই এবার রাজ্যের বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কলাইকুন্ডাতে বৈঠক প্রসঙ্গে বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, তিনি নরেন্দ্র মোদির কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই সেই বৈঠকস্থল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন। কিন্তু কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যের এই দাবিকে সম্পূর্ণরূপে নস্যাৎ করে দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রের দাবি, প্রটোকল ভেঙেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকলেও, তিনি সেখানে উপস্থিত না থেকে তড়িঘড়ি বেরিয়ে এসেছেন।বলা বাহুল্য, কলাইকুন্ডাতে বৈঠকের পরই সদ্য অবসর নেওয়া রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্য যে কোনোভাবেই ছাড়বে না, তা চিঠি আকারে কেন্দ্রকে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই চিঠিতেই বিজেপির পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলাইকুন্ডার বৈঠক থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে যে দাবি করেছে, সেই দাবি সম্পূর্ণরূপে নস্যাৎ করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি স্পষ্টভাবে বেরিয়ে যাওয়ার আগে অনুমতি নিয়েছিলেন বলে সেই চিঠিতে উল্লেখ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তবে এবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যকে সম্পূর্ণরূপে খন্ডন করা হল। কেন্দ্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রী কলাইকুন্ডাতে দুটো বাজার এক মিনিট আগে পৌছন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে অনেক পরে পৌঁছেছিলেন। একজন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রী আসার আগে সেখানে উপস্থিত থাকবেন, এমনটাই আশা করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা হয়নি। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর হাতে রিপোর্ট তুলে দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী বলেই দাবি করছে কেন্দ্র। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুমতি নিয়ে বৈঠকের জায়গা থেকে তিনি বেরিয়ে এসেছেন বলে যতই দাবি করা হোক না কেন, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পাল্টা যুক্তি দিয়ে রাজ্যের শাসকদলের প্রধানকে চাপে ফেলে দেওয়ার কৌশল নেওয়া হল। বিশ্লেষকরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যেমন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, ঠিক তেমনই নরেন্দ্র মোদী গোটা দেশের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তাদের মধ্যে যতই রাজনৈতিক বিরোধিতা হোক না কেন, পদ অনুযায়ী দুজনের দুজনকে সম্মান দেওয়া উচিত। কিন্তু দুর্যোগ পরবর্তী বৈঠক নিয়ে যেভাবে কেন্দ্র বনাম রাজ্যে দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো প্রতিনিয়ত ভাঙতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠির পর এবার পাল্টা নিজেদের তথ্য সামনে এনে রাজ্য প্রশাসন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাপে ফেলে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। যেখানে প্রটোকল ভাঙ্গার অভিযোগ এনে তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে অনুমতি না নিয়েই বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠতে শুরু করল। স্বাভাবিক ভাবেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এই ধরনের বিবৃতি দেওয়ার পর রাজ্যের শাসক দল বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে পাল্টা কোনো বিবৃতি আসে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -