প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের মানুষ বিজেপিকে ব্যাপকূ সমর্থন করেছে। যেখানে উত্তরবঙ্গের আটটি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সাতটি আসন দখল করেছে বিজেপি। একটি আসন দখল করেছে কংগ্রেস। সেদিক থেকে তৃণমূল উত্তরবঙ্গের লোকসভা নির্বাচনে একটি আসনও না পাওয়ার কারণে তারা যথেষ্ট চাপে পড়ে গিয়েছে। আর তারপর থেকেই বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে উত্তরবঙ্গে তাতে ভালো ফলাফল করা যায়, তার জন্য নজর দিয়েছে শাসকদল।

ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রামের নির্বাচনের তৃতীয় দফা অনুষ্ঠিত হওয়া উত্তরবঙ্গের একাধিক আসনে নির্বাচনের জন্য প্রচার করতে এসেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বিজেপিও কোনোভাবেই উত্তরবঙ্গকে ছাড়তে চাইছে না। আর তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন উত্তরবঙ্গে প্রচার করছেন, ঠিক তখনই সেই উত্তরবঙ্গে উপস্থিত হয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় চাণক্য তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর সেই উত্তরবঙ্গের জনসভা থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন থেকে উত্তরবঙ্গ কত দূরে রয়েছে, তা রীতিমত‌ অংক কষে বলে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সূত্রের খবর, আজ উত্তরবঙ্গের কালচিনিতে একটি জনসভা করেন অমিত শাহ। আর সেই সভা থেকেই তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গ কলকাতা থেকে 700 কিমি দূরে। কিন্তু দিদির মন থেকে 7 হাজার কিলোমিটার দূরে। উনি কখনও উত্তরবঙ্গ নিয়ে ভাবেননা। কিন্তু মোদিজীর মনে উত্তরবঙ্গের মানুষেরা বসবাস করেন।” বলা বাহুল্য, ক্ষমতায় আসার পর উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য সেখানে মিনি মহাকরণ স্থাপন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

যেখানে বারবার উত্তরবঙ্গের মানুষের মনে বিশ্বাস জোগাতে তিনি দক্ষিণবঙ্গের মত উত্তরবঙ্গকেও যথেষ্ট গুরুত্ব দেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তারপরেও গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস এখানে ভরাডুবির সম্মুখীন হয়েছে। আর এবার উত্তরবঙ্গে গত লোকসভা নির্বাচনে করা ফলাফল অনুযায়ী যাতে এবারেও ভালো ফলাফল করা যায়, তার জন্য তৎপর ভারতীয় জনতা পার্টি। আর সেই কারণেই উত্তরবঙ্গের মানুষের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরত্বের কথা তুলে ধরে এখানকার ভোটব্যাঙ্ক নিজেদের দিকে আনার সুকৌশলী চেষ্টা করলেন অমিত শাহ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, উত্তরবঙ্গের আসন যদি ঠিকমতো দখল করা যায়, তাহলে ক্ষমতা দখল করা অতটা চাপের হবে না। তাই দক্ষিণবঙ্গের কিছু আসনে নির্বাচন হওয়ার পরেই দ্বিতীয় দফায় যখন উত্তরবঙ্গের কিছু আসনে নির্বাচন হতে চলেছে, তখন সেদিকে মনোযোগ দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা অমিত শাহ।

গত লোকসভা নির্বাচনে হল ভালো করলেও এবার যদি খারাপ ফল হয়ে যায়, তাহলে তাদের পক্ষে অনেকটাই সমস্যা হবে। তাই উত্তরবঙ্গের মানুষের মনের আবেগকে তীব্র করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের দূরত্বের কথা তুলে ধরে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরলেন বিজেপির সর্বভারতীয় চাণক্য। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।