প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গতকাল হঠাৎ করেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তীর্থ সিং রাওয়াত। তাঁর কাছে দু মাস সময় থাকার পরেও হঠাৎ করে ইস্তফা দিলেন তিনি তাঁর এই ইস্তফা কি সম্পূর্ণই পূর্বপরিকল্পিত? কারণ, দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরই এই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। প্রশ্ন উঠেছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপদ কি বাড়াতে চাইছে বিজেপি।

প্রসঙ্গত, বিধায়ক না হয়েও উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তীর্থ সিং রাওয়াত গত ১০ ই মার্চ। তাই আগামী ১০ ই সেপ্টেম্বর তাঁর পদের মেয়াদ শেষ হবে। এই সময়ের মধ্যে উপনির্বাচনে জিতে তাঁকে বিধায়ক হতে হতো। কিন্ত, করোনা সংক্রমণের কারণ এই সময়ে উত্তরাখণ্ডে উপনির্বাচন হবার সম্ভাবনা নেই। এদিকে আগামী বছর উত্তরাখণ্ডে হতে চলেছে বিধানসভা নির্বাচন। তাই অল্প সময়ের জন্য আর উপনির্বাচনের তেমন সম্ভাবনা নেই উত্তরাখণ্ডে। তাই পদত্যাগ করেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, সংবিধানের বিধি অনুযায়ী বিধানসভার সদস্য না হলেও ছ মাস মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকা যায়। কিন্তু এর মধ্যে উপনির্বাচনে আবশ্যিকভাবে জয়ী হয়ে আসতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হয়েও মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তাই তাঁকেও ছমাস সময়ের মধ্যে উপ-নির্বাচনে জয়ী হতে হবে। কিন্তু করোনার পরিস্থিতিতে উপ নির্বাচন আদৌ সম্ভব কিনা? তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ করোনা সংক্রমণকালে বিধানসভা নির্বাচনের আয়োজন করায় নির্বাচন কমিশনকে সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হয়েছিল। তাই সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ কমে গেলেও, তৃতীয় ঢেউ আসার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে আদৌ উপনির্বাচন করানো যাবে কিনা? তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।

রাজ্যে উপনির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনকে রাজ্যের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হলেও কমিশন এখন এ বিষয়ে কোন বক্তব্য রাখে নি। আবার, এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারবার ‘নন এমএলএ সিএম’ বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ বিপাকে ফেলে দিতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সময়মতো উপ নির্বাচন না হলে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে বিধানসভা উত্তাল করে দিতে পারে বিজেপি।

যদিও এখনও রাজ্যে উপনির্বাচন করাবার জন্য কয়েক মাস সময় হাতে আছে। কিন্তু যেভাবে করোনা সংক্রমণ চলছে, তার উপরে যদি তৃতীয় ঢেউ চলে আসে, সে ক্ষেত্রে এই সময়ের মধ্যে উপ নির্বাচন আদৌ করানো যাবে কিনা? তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়তে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এর মধ্যেই হঠাৎ করে পদ ছেড়ে দিলেন তীর্থ সিং রাওয়াত। তাঁর এই পদক্ষেপকে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর চাপ বাড়াতে পারে বিজেপি।