এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মমতা সরকারের কাছে এবার নয়া আবেদন ছাত্রধরের, জঙ্গলমহলের মুখ হতে নয়া পদক্ষেপ?

মমতা সরকারের কাছে এবার নয়া আবেদন ছাত্রধরের, জঙ্গলমহলের মুখ হতে নয়া পদক্ষেপ?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একসময়ের মাওবাদী নেতা ছত্রধর মাহাতো সম্প্রতি জঙ্গলমহলের তৃণমূল মুখ। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলে বাজিমাত করতেই ছত্রধর মাহাতোকে তৃণমূল দলভুক্ত করে, তাঁকে দলের বড় পদ দেয়া হয়েছে। গত রবিবার এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ছত্রধর মাহাতো বিরসা মুন্ডার জন্মদিন উপলক্ষে সরকারি ছুটির দাবি জানালেন। অনেকে মনে করছেন, বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে সরকারি ছুটির দাবি জানিয়ে ছত্রধর মাহাতো সম্প্রতি জঙ্গলমহলের বিশ্বাসযোগ্য মুখ হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন।

সম্প্রতি জঙ্গলমহলে কুড়মি সম্প্রদায় এর আদিবাসীরা তাদের আদিবাসী তালিকাভুক্ত করা ও কুড়মালি ভাষার ভাষার স্বীকৃতি সহ একাধিক দাবিতে আগামী মাসের আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একাধিক কুড়মি সামাজিক সংগঠন যৌথভাবে এই আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ছত্রধর মাহাতো নিজেও এই কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে, বিরসা মুন্ডা কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ ছিলেন না, তিনি ছিলেন আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়ের মানুষ। এবার তাঁর জন্মদিনে সরকারি ছুটির দাবি জানিয়ে ছত্রধর মাহাতো কোনো বিশেষ বার্তা দিতে চাইছেন বলে অনেকে মনে করছেন।

এদিকে স্বাধীনতার পর কুড়মিদের অনগ্রসর (ওবিসি) শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু কুড়মিরা এখন আদিবাসী তালিকাভুক্ত হওয়ার দাবি করছে। কুড়মি সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে যে, রাজ্য সরকার কুড়মিদের আদিবাসী প্রমাণের পক্ষে কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সংশোধিত রিপোর্ট এখনো কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠায় নি। এভাবে, জাতিসত্তার আন্দোলন ভোটের আগে শাসক দলকে বিপর্যস্ত করার সম্ভাবনা আছে। এই পরিস্থিতিতে ছত্রধর মাহাতোকে সামনে রেখে আন্দোলনকে স্থিমিত করার চেষ্টায় আছে শাসক দল তৃণমূল।

এদিকে করম পরব মূলত কুড়মিদের উৎসব হলেও, রাজ্য সরকারের নির্দেশিকাতে এই উৎসবকে আদিবাসীদের ‘সেকশনাল হলিডে’ হিসেবে রাখা হয়েছিল। কিন্তু কুড়মিরা আদিবাসী না হবার কারণে কুড়মি সম্প্রদায়ের সরকারি কর্মীরা এই সরকারি ছুটি পেতেন না। গত ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছর কুড়মি সংগঠনগুলি এর বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুশিয়ারি দেওয়ায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার করম পরবের ছুটি সর্বসাধারণের জন্য ঘোষণা করে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এবার বিরসা মুন্ডার জন্ম দিনে সরকারি ছুটি দেওয়ার দাবি জানালেন ছত্রধর মাহাতো। অনেকে মনে করছেন মুন্ডা আবেগকে উস্কে দিয়ে জাতিসত্তার আন্দোলনে নিজেকে একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসাতে চাইছেন তিনি। ইতিপূর্বে ঝাড়খন্ড রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গতেও মুন্ডারা বিরসা মুন্ডাকে স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে উপযুক্ত মর্যাদা দেবার দাবি করছেন। এই অবস্থায় ছত্রধরকে সামনে বসিয়ে জাতিস্বত্বার আন্দোলকে স্থিমিত করার চেষ্টায় আছে তৃণমূল।

এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের জনৈক নেতার বক্তব্য, ” সম্প্রদায়গত সম্প্রীতি ধরে রাখতে ছত্রধরের পূর্ব-অভিজ্ঞতা রয়েছে। এগারো বছর আগে জনসাধারণ কমিটির আন্দোলনে ছত্রধরের ছত্রছায়ায় সাঁওতাল, মুন্ডা, ভূমিজ, কুড়মি, বাগদি, বাগাল, চাষার মতো বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ একযোগে সামিল হয়েছিলেন। তাই জনজাতির সমস্যা মেটাতে কৌশলে তাঁকে সামনে এগিয়ে দিচ্ছে দল।’’

গত রবিবারের ভিডিওবার্তা সম্পর্কে ছত্রধর মাহাতো তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে জানালেন, ” সিদো-কানহো, বিরসা মুন্ডা, রঘুনাথ মাহাতোরা আদিবাসী-মূলবাসী মানুষের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। সিদো-কানহো সাঁওতাল ও বিরসা মুন্ডা সম্প্রদায়ের। আর কুড়মি সম্প্রদায়ের রঘনাথ মাহাতো হলেন চুয়াড় বিদ্রোহের নেতা।” অর্থাৎ, সকলকে সন্মান জানিয়ে জঙ্গলমহলে সম্প্রদায়গত সম্প্রীতি ধরে রাখার চেষ্টাতে আছেন তিনি।

আবার, দলমা পাহাড়ে ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ পুলিশের গুলিতে নিহত রঘুনাথের নামে ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রাখার দাবি জানালো কুড়মি সংগঠনগুলি। তবে, গত ৭ ই অক্টোবর ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়টি সাঁওতালি মহাকবি সাধু রামচাঁদ মুর্মুর নামে রাখা হবে। এ প্রসঙ্গে ছত্রধর মাহাতো জানালেন যে, জঙ্গলমহলের সমস্ত সম্প্রদায়ের দিকে সমান নজর আছে মুখ্যমন্ত্রীর।কুড়মিদের সমস্ত দাবি গুলি তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানাবেন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!