প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই একের পর এক বোমা ফাটাচ্ছেন তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিভিন্ন জনসভা থেকে শুরু করে ছোট ছোট সভা, বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে তৃণমূলকে “প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি” বলে পিসি এবং ভাইপোকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে দেখা যাচ্ছে তাকে। এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বারবার তোষণের রাজনীতি অভিযোগ তোলা সহ একাধিক অভিযোগ তুলে তাকে বিদ্ধ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।

আর এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান লক্ষ্যের কথা তুলে ধরে ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের আগে তৃণমূল নেতৃত্বের কার্যত বেকায়দায় ফেলে দিলেন অধিকারী পরিবারের মেজো ছেলে। অনেকে বলেন, শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূল ত্যাগ করার পেছনে প্রধান কারণ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলের একাধিক দায়িত্ব দেওয়ার কারণে কার্যত পিছনের সারিতে চলে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।

আর সেই কারণেই রাজনৈতিক গ্রহন যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও, কেন তাকে এভাবে পিছিয়ে দেওয়া হবে, তা নিয়ে দলের অন্দরে উঠতে শুরু করেছিল প্রশ্ন। আর দীর্ঘদিন এইভাবে দলে থাকার পরেও অবশেষে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। আর সেই কারণেই গত বছরের ডিসেম্বর মাসে অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেছেন।

আর এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের যখন প্রধান লক্ষ্য মানুষের সেবা করা বলে দাবি করছে ঘাসফুল শিবির, ঠিক তখনই তৃণমূল নেত্রীর প্রধান লক্ষ্যের কথা তুলে ধরে তাকে বেকায়দায় ফেলে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে ভাইপোর বিকাশ করাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান লক্ষ্য বলে দাবি করতে দেখা গেল তাকে।

সূত্রের খবর, রবিবার মালদা মানিকচক বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী গৌড়চন্দ্র মন্ডলের সমর্থনে দক্ষিণ চন্ডীপুরে প্রচার করতে আসেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই নাম না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আপনি যতক্ষণ দিদি ছিলেন, দলে ছিলাম। কিন্তু যখন থেকে পিসি হয়েছেন, দল ছেড়ে দিয়েছি। মাননীয়ার একমাত্র লক্ষ্য হল, কুচ কুচ কা সাথ, ভাতিজা কা বিকাশ।”

অর্থ্যাৎ শুভেন্দু অধিকারী এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, তৃণমূল কংগ্রেস এখন পিসি আর ভাইপোর দল হয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনতা জনার্দনের সেবা করছেন বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে যতই দাবি করা হোক না কেন, তিনি ভাইপোর জন্য সমস্ত কিছু করছেন বলেই দাবি করার চেষ্টা করলেন শুভেন্দু অধিকারী।

এক্ষেত্রে তৃণমূলের অন্দরমহলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। আর তার মাঝেই শুভেন্দু অধিকারীর এই ধরনের দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বকে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলে দেবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

একাংশ বলতে শুরু করেছেন, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের অসুখ খুব ভালো করে জানেন। দলের অনেকে নেতৃত্ব স্থানে বসে থাকা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেনে নিলেও, তলায় তলায় অনেকের মনেই ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে। তাই এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে আসার শুভেন্দু অধিকারী দল ছেড়েছেন যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই, তা আরও একবার এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন তিনি।

পাশাপাশি তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান লক্ষ্যের কথা তুলে ধরে “ভাইপো বিকাশের” উদ্দেশ্য প্রধান বলে দাবি করলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী। যা রাজনৈতিকভাবে তৃণমূলকে অনেকটাই চাপে ফেলে দিল বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।