প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজনৈতিক যুদ্ধের প্রস্তুতির মুখে এখন বাংলার রাজনৈতিক মহল। বিধানসভা নির্বাচনের মসনদ দখল করতে এখন যাবতীয় গুটি সাজানোর কাজ চলছে রাজনৈতিক দলগুলির। অন্যদিকে বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসার সাথে সাথে রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। আর তাই নিয়ে বর্তমানে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোরদার চর্চা। সম্প্রতি জঙ্গলমহলের বেশ কিছু জায়গায় মাওবাদীদের পোস্টার উদ্ধার করা হয়েছিল। বিভিন্ন মহলে শোনা যাচ্ছে, জঙ্গলমহলে আবারও মাওবাদীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে বিরোধীরাও বলতে শুরু করেছে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক মুহূর্ত রাজ্যের শাসক শিবির মাওবাদীদের সাথে নিয়ে নির্বাচন জেতার প্রচেষ্টায় রত। এই অবস্থায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি জঙ্গলমহলে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন। আর সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বার্তা – জঙ্গলমহলের শান্তি কোনোভাবেই বিঘ্নিত করা যাবেনা। বুধবার ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী, জঙ্গলমহলে কোনরকম অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না।

তবে মুখ্যমন্ত্রী এই বার্তা শুধুমাত্র রাজ্য পুলিশের ডিজিকেই নয়, এই বার্তা ঝাড়গ্রামের প্রশাসনের সর্বস্তরে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে মাওবাদীদের পোস্টার উদ্ধার হওয়া প্রসঙ্গ না তুললেও মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু যথেষ্ট জোর দিয়ে এদিন জঙ্গলমহলের শান্তি ফেরানোর কথা বলেন। তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মাওবাদীদের সঙ্গে অন্য রাজনৈতিক দলকে জড়িয়ে বার্তা দিয়েছেন। আর এই নিয়ে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈটিক মহলে।

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত করছেন রাজ্যের গেরুয়া শিবিরের দিকে। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে এলাকার আইসি ওসিদের এদিন নির্দেশ দিয়েছেন, এলাকার বাইরের লোক আসলে হোটেল এবং গেস্ট হাউস ভাড়া করলে তাঁদের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন দেখতে এলাকায় রয়েছে কত গেস্টহাউস এবং কত হোটেল রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত করেছেন জেলায় অশান্তি ছড়াতে বাইরে থেকে লোক আসা যাওয়া শুরু করেছে এবং সেই কথাপ্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী এদিন বার্তা দিয়েছেন জেলার পুলিশকে আরো সক্রিয় হওয়ার জন্য।

পাশাপাশি সরকারি কর্মীদের উদ্দেশ্যেও মুখ্যমন্ত্রী এদিন বার্তা দেন, সরকারি টাকা নয়ছয় করে রাজ্যের সমস্যা বাড়ানোর চেষ্টা চালালে কাউকে ছেড়ে কথা বলা হবেনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী অঞ্চল হয়ে দাঁড়াতে চলেছে। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের কাছে জঙ্গলমহল ফিরিয়ে আনা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ঊনিশের নির্বাচনে জঙ্গলমহলের কতৃত্ত্ব হারায় শাসকদল। আগামী দিনে বিধানসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহল নিয়ে লড়াই যে অন্যতম হতে চলেছে, সে ব্যাপারে নিঃসন্দেহ রাজনৈতিক মহল।