এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > নেই মাস্ক! নেই দূরত্ববিধিও! হাজার হাজার মানুষকে নিয়ে তৃণমূল বিধায়কের জনসভা ঘিরে উঠছে প্রশ্ন

নেই মাস্ক! নেই দূরত্ববিধিও! হাজার হাজার মানুষকে নিয়ে তৃণমূল বিধায়কের জনসভা ঘিরে উঠছে প্রশ্ন


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে মোট করণা আক্রান্ত প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার মানুষ। যাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ২৪০০ এর বেশি মানুষের। কিন্তু করোনা প্রতিরোধের উপযুক্ত ভ্যাকসিন এখনো মানুষের হাতে এসে পৌঁছয় নি। তাই এই অবস্থা করোনা থেকে রক্ষা পেতে বিজ্ঞানী, বিশেষজ্ঞরা বারবার মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশ দিচ্ছেন। এ কারণে সরকার থেকেও বারবার দেখা হচ্ছে মানুষ যেন মাস্ক পরিধান করেই রাস্তায় বের হয়, ও সেইসঙ্গে সামাজিক দূরত্বের বিধিও মেনে চলে।

আর এই সামাজিক দূরত্ব রাখতেই সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক যেকোনো সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু রাজ্য সরকারের বেশকিছু নেতা মন্ত্রী সরকারের এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছেন এরকম অভিযোগ বারবার উঠে এসেছে। প্রসঙ্গত, দু’দিন আগেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই হাজার হাজার মানুষকে নিয়ে এক বিরাট জনসভা জনসমাগমের আয়োজন করেছিলেন। এবার এমনই অভিযোগ উঠে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হিঙ্গলগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক দেবেশ মন্ডল এর বিরুদ্ধে।

সংবাদ সূত্রে জানা গেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক দেবেশ মন্ডল গত রবিবার দুলদুলির মাতঙ্গিনী হাজরা মোড়েএকটি বিরাট পথসভার ও রাজনৈতিক মঞ্চের আয়োজন করেছিলেন। গত রবিবার বিকেল চারটা থেকে শুরু হয়ে সন্ধে সাড়ে ছটা পর্যন্ত চলে এই অনুষ্ঠান। অভিযোগ উঠেছে, রাজ্যের এই ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ২ হাজার মানুষ। আর আর সভায় উপস্থিত এই মানুষদের বেশিরভাগই মাস্ক করা এসেছিলেন সেই সঙ্গে তুড়ি মেরে উপেক্ষা করেছিলেন সামাজিক দূরত্ব। এই অভিযোগে বিরোধী মহলে বহু প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও এতটা জনসমাগম কেন করলেন? এই প্রশ্নে হিঙ্গলগঞ্জ এর বিধায়ক দেবেশ মন্ডল জানিয়েছেন যে, সম্প্রতি তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র হিঙ্গলগঞ্জ এলাকায় লকডাউন এর পর থেকেই দুষ্কৃতিকারীদের উপদ্রব যথেষ্ট ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করে দিতে, এবং রাজ্যের সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের উপর সচেতনতা বৃদ্ধি করতে নাকি তিনি এই বিরাট পথসভার আয়োজন করেছিলেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এ প্রসঙ্গে বিধায়ক জানান, ‘‘শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে পথসভা করব বলে প্রতিটি বুথ থেকে কম সংখ্যক মানুষকে নিয়ে আসার কথা ছিল। সেই মতো নির্দিষ্ট দূরত্বে চেয়ার পাতা হয়েছিল। তবে পথসভার কথা জানতে পেরে অনেক বেশি মানুষ চলে আসেন।’’ এ বিষয়ে তিনি আরো জানিয়েছেন, ‘‘সভায় করোনা নিয়ে সচেতনতামূলক বার্তা দেওয়া হয়। মাস্ক বিলি করা হয় এবং সবাইকে মাস্ক পরতে বলা হয়। এতে মানুষ সচেতন হবে বলে আমার ধারণা।’’

কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায় অন্য চিত্রই ধরা পড়ছে। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন যে, বেশ কিছুদিন আগে দুলদুলি অঞ্চলে একটি চাষের জমিকে নিয়ে ব্যাপক অশান্তির সূত্রপাত হয়। শেষ পর্যন্ত এই গন্ডগোল মেটাতে আগমন হয় পুলিশের। আর সেসময়ই পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বেশকিছু স্থানীয় গ্রামবাসী। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই নাকি এই জনসভার আয়োজন করেছেন বিধায়ক দেবেশ মন্ডল, এমনটাই স্থানীয় মানুষের দাবী।

তবে স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে এই সভায় পুলিশের কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। করোনা সংক্রমণ কালে রাজ্যের নির্দেশ উপেক্ষা করে এই জমায়েত করায় বিরোধীদের মধ্যে থেকে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তারক ঘোষ মন্তব্য করেছেন, ” বিধায়ক হিসাবে দেবেশ মণ্ডলের এমন দায়িত্বহীন কাজ খুব নিন্দনীয়। গোটা রাজ্য জুড়ে বিরোধীদের জন্য এক আইন আর শাসকদলের জন্য পৃথক আইন।”

রাজ্যের অন্যতম বিরোধীদল সিপিএমের পক্ষ থেকেও বিধায়কের এই কাজটির নিন্দা করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সদস্য শ্রীদীপ রায়চৌধুরী বলেছেন, “বিধায়কের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করব। যদি পদক্ষেপ না নেয় তবে তাঁর নামে থানায় এফআইআর করা হবে।”

অন্যদিকে হাসনাবাদের জনৈক চিকিৎসক অর্ধেন্দুশেখর মণ্ডল করোনা সংকটকালে আয়োজিত এই জনসভা সম্পর্কে বলেছেন, “ করোনা পরিস্থিতিতে সভা কী ভাবে করলেন বিধায়ক— সেটাই বুঝতে পারছি না। ওই সভায় একজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি থাকলে তাঁর থেকে অনেকে সংক্রমিত হতে পারেন।”

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!