এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মমতার সাধের সিঙ্গুরে চরমে রাজনীতি? ‘মাস্টারমশায়’কে নিয়ে বেচারামের স্টান্স বদল? বাড়ছে গুঞ্জন?

মমতার সাধের সিঙ্গুরে চরমে রাজনীতি? ‘মাস্টারমশায়’কে নিয়ে বেচারামের স্টান্স বদল? বাড়ছে গুঞ্জন?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তৃণমূল শিবিরের গোষ্ঠী কোন্দল নতুন কিছু নয়। এবং সিঙ্গুরে দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সঙ্গে হরিপালের তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্নার গোষ্ঠী কোন্দল  দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি এই মনোমালিন্য আরো তীব্র আকার ধারণ করে সিঙ্গুরের ব্লক সভাপতি গঠন নিয়ে। সম্প্রতি বেচারাম মান্নার নিকটজনকে সিঙ্গুরের ব্লক সভাপতি পদে বসানো হয়, পরিবর্তে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠকে সরিয়ে। তারপর থেকেই এই চাপানউতোর শুরু হয়েছে 2 বিধায়ক এর মধ্যে বলে জানা গেছে। দু’দিন আগেই এই পরিপ্রেক্ষিতে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য্য দল ছাড়ার কথা প্রকাশ করেছিলেন।

তড়িঘড়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করে তৃণমূল শিবির। যার ফলস্বরূপ বেচারাম মান্নার সুর বদল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিন হরিপালের তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্না মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সঙ্গে সুখস্মৃতির অবতারণা করলেন। অবশ্য তার কিছুক্ষণ আগেই শুক্রবার সিঙ্গুরে কৃষিজমি রক্ষা কমিটির ব্যানারে হওয়া মিটিংয়ে স্থানীয় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের একাংশ তাঁদের ক্ষোভ উগরে দেয় বলে জানা গিয়েছে। যদিও বেচারাম মান্না রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে যে কোনো গণ্ডগোলের সূত্রপাত হয়েছে তাই মানতে চাননি। এ প্রসঙ্গে সিঙ্গুরের তৃণমূলের দপ্তরে বসে হরিপালের বিধায়ক জানিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথ এবং তাঁর মধ্যে কোন রকম মনোমালিন্য নেই।

শুধু তাই নয়, বেচারাম মান্না দাবি করেছেন, সিঙ্গুরে গোষ্ঠী কোন্দল চলছে বলে যেভাবে সংবাদমাধ্যম তুলে ধরার চেষ্টা করেছে, তা পুরোপুরি ভুল। সাথে বেচারাম মান্না দাবি করেছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে সিঙ্গুর থেকে তৃণমূল 40 হাজারের বেশি লিড পাবে। অন্যদিকে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যেবেলা সিঙ্গুরের বিধায়ক সম্পর্কে হরিপালের বিধায়ক ভালো ভালো কথা বললেও তার আগেই কিন্তু কৃষিজমি রক্ষা কমিটির তরফ থেকে হওয়া মিটিংয়ে তৃণমূল সমর্থকদের সামনে স্থানীয় বিধায়ক অর্তাৎ রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলতে থাকেন বেরাবেরি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দুধকুমার ধারা।

যা নিয়ে অবশ্য এখনো পর্যন্ত সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব এদিন জানিয়েছেন, যদি কারো কোন বক্তব্য থাকে তাহলে যেন দলকে জানানো হয়। অন্যদিকে তৃণমূল ব্লক সভাপতি পদে রবীন্দ্রনাথের অনুগামী হিসেবে পরিচিত মহাদেব দাসকে সরিয়ে বেচারাম ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত গোবিন্দ ধারাকে নিয়ে আসা হয়। যা নিয়ে শুরু হয় রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সঙ্গে বেচারাম মান্নার মনোমালিন্য। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রবীন্দ্রনাথ হুমকিও দেন দল ছাড়ার বলে জানা গেছে। শেষমেশ মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয় বলে খবর।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেচারাম মান্নার সঙ্গে কথা বলেন। জানা গিয়েছে, মহাদেব দাসকেই আবার ব্লক সভাপতি পদে ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরেও বেচারাম মান্না নির্দেশ মানতে আপত্তি জানালে তাঁকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয় দলকে যেন কোনোভাবেই বেচারাম মান্না ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা না করেন। জানা গিয়েছে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে হরিপালে টিকিট দেওয়া হবেনা বলেও হুঁশিয়ার করা হয়। এর পরেই বেচারাম মান্না ইস্তফার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তৃণমূল ভবনে ডেকে এরপর দলের রাজ্য সভাপতি তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সি ধমক দেন বেচারামকে।

এরপর বেচারাম মান্না তাঁর সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেন বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বেচারাম মান্নার বাড়িতে গিয়েছেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা হুগলি জেলার তৃণমূল মুখপাত্র প্রবীর ঘোষ। বিশেষজ্ঞদের মতে, লোকসভা নির্বাচনে হুগলী জেলায় তৃণমূলের ব্যপক হার হয়েছে। তাই এবার যেভাবে 2 বিধায়ক এর মধ্যে গন্ডগোলের আভাস পাওয়া যাচ্ছে তাতে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কিন্তু ব্যাপক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে তৃণমূল শিবির।

অন্যদিকে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে হুগলি বিধানসভার ক্ষেত্রে কিন্তু তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে বর্তমানে তৃণমূল। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, জমি আন্দোলনের নেতা বেচারাম মান্নার মতো নেতাদের আচার-আচরণে মানুষ অসন্তুষ্ট এবং সে কথা বুঝতে পেরেই নতুনদের সামনে আনতে চাইছে দল। আপাতত রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বা বেচারাম মান্না দুজনেই তাঁদের পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু দলের মধ্যে ফাটল স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, আর সেই ফাটলের মধ্যে দিয়েই একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে অশনি সংকেত দেখছে রাজ্যের শাসক দল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!