মতুয়া গড়ে প্রধানমন্ত্রীর সভাকে নিয়ে এবার নয়া চাল মুকুল রায়ের কলকাতা জাতীয় রাজ্য January 28, 2019 ঠাকুরনগরে প্রধানমন্ত্রীর সভাকে কেন্দ্র করে নয়া বিতর্ক রাজ্যরাজনীতির উত্তাপ বাড়ালো। মতুয়া সংগঠনে চীড় ধরেছে বেশ কিছুকাল আগেই। শান্তনু ঠাকুর এবং মমতাবালা ঠাকুরের নেতৃত্বে দুটি পৃথক গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে এখন। মোদী সভাস্থল নির্ধারণ নিয়ে সেই মতানৈক্যই ফের প্রকাশ্যে এল। শান্তনু ঠাকুরের তরফ থেকে প্রথমে ঠিক করা হয়েছিল ঠাকুরনগরের মেলার মাঠেই ২ ফেব্রুয়ারি মোদী সভা করবেন। কিন্তু তা নিয়ে চরম আপত্তি জানায় তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। তিনি ওইসময়ই কীর্তন কর্মসূচির ঘোষণা করেন ঠাকুরনগরের মাঠে। এদিকে রবিবার সকালেই মাঠের দখল নিয়ে নেন শান্তনু ঠাকুর। এই মাঠ বাছাই পর্ব নিয়েই রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলতে থাকে জেঠিমা-দেওরপুত্রের মধ্যে। কিন্তু শেষে গিয়ে পিছু হটে যান শান্তনু। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই জানিয়ে দেন,মেলার মাঠের পরিবর্তে অন্য মাঠে মতুয়া সম্মেলন করা হবে। এদিকে মোদীর সভাস্থল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলাকালীন বেলা ১২ টা নাগাদ মাঠ পরিদর্শনে আসনে বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তাকে দেখামাত্রই মেলার মাঠে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনির রোল উঠে যায়। এটাকে একেবারের ভালোভাবে মেনে নিতে পারেন নি তৃণমূল নেতৃত্ব। ঠাকুরবাড়ির মধ্যে রাজনীতির অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ এমনটা বলেই হুঁসিয়ারী দেওয়া হয় তৃণমূলের তরফ থেকে। ঠাকুরবাড়ির নিকটস্থ স্থান থেকেই তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন,”ঠাকুরনগরে একাধিক মাঠ রয়েছে প্রধানমন্ত্রী সেখানে সভা করুন। আমাদের তাতে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু, ঠাকুরবাড়ির মাঠ দখল করলে আমাদের বুকে লাগবে। কারণ ঠাকুরবাড়ি তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে বেশিরভাগ জিনিস তিনিই তৈরি করেছেন। বড়মার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক হল মা ও মেয়ের মতো। ২০ বছরের সম্পর্ক।” এরপর মুকুল রায়ের ঠাকুরবাড়িতে প্রবেশ করা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন,মুকুল রায় সেখানে ঢুকলেন কেন? তিনি ঠাকুরবাড়ির অন্যতম উপদেষ্টা হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র ঠাকুরবাড়িকে রাজনীতিমুক্ত রাখার জন্যে সেখানে পা রাখলেন না। আর বিজেপি নেতা কোনো বিবেচনা না করেই ঠাকুরবাড়িতে অনুপ্রবেশ করল। এটাকে তিনি মোটেই ভালো চোখে দেখলেন না। এর নেপথ্যে মুকুল রায়ের কোনো রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে বলেই মনে করছেন তিনি। এ ব্যাপারে বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন,দিলীপ ঘোষ-মুকুল রায়েরা আসলে,সারা দেশটাকে বিজেপির মনে করছেন। কিন্তু বাংলা আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নেত্রীর কথা ছাড়া বড়মা একপাও চলেন না। তাই দিলীপ ঘোষ যদি ভাবেন ঠাকুরনগরে প্রধানমন্ত্রীকে এনে সভা করিয়ে মতুয়াদের নিজেদের দিকে টানতে পারবেন,তাহলে সে ভাবনাটাই ভুল। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - মোদী এলেও ওখানে বিজেপি জিরো,না এলেও জিরো। মোদী আসুন, সভা করুন কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু ঠাকুরবাড়িতে রাজনীতি ঢুকবে না। এমনটাই হুঁসিয়ারী দিলেন তিনি। এছাড়া বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগের সুর চড়া করে বললেন,শান্তনু ঠাকুর,মুকুল রায় এই এলাকায় আরএসএস ঢুকিয়েছেন। ঠাকুরবাড়ির মাঠে আরএসএসের ট্রেনিং হচ্ছে। তবে ঠাকুরনগরে মোদী রাজনৈতিক সভা করতে আসছেন। তৃণমূলের এই তথ্যকে কিছুতেই মানতে চাইলেন না মুকুল রায়। তিনি বললেন,এই সভা আসলে সর্ব ভারতীয় মতুয়া মহাসংঘের সভা। আর যেখানে প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতা দেবেন সেখানে কোনো বিজেপির পতাকা থাকবে না বলেও জানালেন তিনি। মতুয়া মহাসংঘের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল,সেই আমন্ত্রণ রক্ষা করতেই আসছেন প্রধানমন্ত্রী। মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করার কোনো অভিসন্ধি নেই বিজেপির। এরপর এনআরসি প্রসঙ্গে বললেন,”BJP দেশে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করেছে। যে কোনও দেশ থেকে আগত হিন্দু উদ্বাস্তুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবেই। তৃণমূলের ক্ষমতা থাকলে এই বিল সমর্থন করে দেখাক।” বিজেপির তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সভার মাঠ পরিদর্শন করতে আসা হল কেন? এ প্রশ্নের জবাবে মুকুল রায় বলেন,যেহেতু দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সভা করতে আসবেন। তাই প্রধানমন্ত্রীর দলের একজন দায়িত্ববান প্রতিনিধি হিসাবে ঠাকুরনগরের মাঠ পর্যবেক্ষণ করতে এসেছিলেন তিনি। তিনি সাফ কথয় জানালেন,২ ফেব্রুয়ারির সভায় বিজেপির সমর্থকরা থাকলেও কারোর হাতে বিজেপির পতাকা বা ফেস্টুন থাকবে না। উল্লেখ্য,গতকাল শান্তনু ঠাকুর মাঠ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেও দুপক্ষের টানাপোড়েন চলতে থাকে রাত পর্যন্ত। মুকুল রায়ের যাওয়ার পরও বিজেপির আরো এক প্রতিনিধি এসে প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থল খতিয়ে দেখে যান,এমনটাই জানা গিয়েছে সূত্রের খবরে। আপনার মতামত জানান -