এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মেয়রের কাছে চা খাওয়ার আবেদন বিজেপি সংসদের, ক্রমশ বাড়ছে জল্পনা

মেয়রের কাছে চা খাওয়ার আবেদন বিজেপি সংসদের, ক্রমশ বাড়ছে জল্পনা

শিলিগুড়িতে বিজেপি সাংসদের সিপিএম নেতা তথা শিলিগুড়ি পৌরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের কাছে চা খেতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে জোর জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলের অন্দরে। গত 8 তারিখে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কেন্দ্র বিরোধী একাধিক ইস্যুতে বাম কংগ্রেসের ডাকা বন্ধের দিন সরকারি কাজকর্ম সহ রাজ্যকে সচল রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে একাধিকবার বিজেপির বি টিম বলে কটাক্ষ করেছে বামফ্রন্টের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব।

কিন্তু এবার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সিপিএম এবং ভারতীয় জনতা পার্টির যোগসাজশের অভিযোগ করা করা হচ্ছে। বস্তুত, গত শুক্রবার সংশোধিত নাগরিক আইনের স্বপক্ষে প্রচার অভিযানে বেরিয়েছিলেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা। আর সেখানেই শহরের 30 নম্বর ওয়ার্ডে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সংশোধিত নাগরিক আইন নিয়ে চায়ে পে চর্চা করেন দার্জিলিংয়ের সংসদ সদস্য। আর তারপরেই কুলেশ্বরী বাজারের দিকে যাওয়ার সময় সিপিএমের বর্ষিয়ান নেতা তথা শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে ফোন করেন সাংসদ রাজু বিস্তা। আর তার কাছে চা খাবার আবদার করেন। যা রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে শিলিগুড়ি সহ রাজ্য রাজনীতিতে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে এই বিষয়ে ভীষণভাবে সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে সিপিআইএম। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, “সিপিএম এবং বিজেপির গোপন সম্পর্কের পর্দা ফাঁস হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে তবে দার্জিলিংয়ের সংসদ সদস্য রাজু বিস্তার তরফ থেকে বলা হয়েছে, “শিলিগুড়ির মেয়র আমার বড় দাদার মত আমাকে স্নেহ করেন। তাই ওকে ফোন করেছিলাম। ওর বাড়িতে গিয়ে চা খেতে চেয়েছি। তবে মেয়র এখানে না থাকায়, তা হল না।” পাশাপাশি রাজুবাবু আরও বলেন, “কংগ্রেসের শঙ্কর মালাকার দাও আমাকে পছন্দ করেন।”

কিন্তু রাজুবাবু যাই বলুন না কেন, সিপিএম নেতার কাছে তার চা খাবার প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে সিপিএমকে রাজনৈতিক আক্রমণ করার কোনো সুযোগই ছাড়তে চাইছে না রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। বস্তুত, লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পরেও রাজ্যের বামপন্থী দলগুলির সঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির গোপন আঁতাতের অভিযোগ তোলা হয়েছিল। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তরফ থেকে সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপিকে তৃণমূল নেত্রী “জগাই মাধাই এবং বিদায়ের জোট” বলে কটাক্ষ করেছিলেন। আর এবার উত্তরবঙ্গের তৃণমূল নেতাদের তরফ থেকে পুনরায় সেই অভিযোগ করতে দেখা গেল।

পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলের একাংশের মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, সংশোধিত নাগরিক আইন এনআরসি সহ একাধিক বিষয়ে দলগতভাবে ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে বিবেক থাকা সত্ত্বেও কি গোপন সম্পর্ক রয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব এবং বামফ্রন্ট নেতৃত্বদের মধ্যে! এই বিষয়ে শিলিগুড়ির মেয়র সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “এমপির ফোন নম্বর আমার কাছে নেই। সকালে একজন আমাকে ফোন করেছিল, তা বুঝতে পারিনি। পরে জানতে পারি ওই ফোন সংসদ সদস্য করেছিলেন। তবে বর্তমানে আমি কলকাতায় আছি। তাই ওকে বাড়িতে আসতে বলতে পারিনি। তবে যদি কেউ জল কিংবা চা চান, তা কি দেব না! তা অবশ্যই দেব। বাড়িতে থাকলে সংসদ সদস্যকে চা খাওয়াতাম। কারণ আমরা ঘৃণার রাজনীতি করি না।”

পাশাপাশি সিপিএম নেতা বলেন, “রাজনীতির ময়দানে তৃণমূল ও বিজেপি উভয় দলের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলছে। আগামী দিনেও তা চলবে।” দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, “গত লোকসভা ভোটের আগে থেকেই বলছি, এখানে বিজেপির সঙ্গে সিপিএমের গোপন আঁতাত রয়েছে। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলছে সিপিএম। আগামী পৌরসভা নির্বাচনেও তারা বোঝাপড়া করেই লড়বে। ভোটে মানুষ ওদের উপযুক্ত জবাব দেবে।”

ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের বাড়িতে চা কিংবা খাবার খাওয়া ভারতবর্ষের রাজনীতিতে এবং বাংলা রাজনীতিতে অতীতে বহুবার হয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনীতি থেকে সৌজন্যে শব্দ প্রায় অস্তিত্বহীন। সার্বিকভাবে এই রকম সময় আদ্যপ্রান্ত বিরোধী দলের নেতার কাছে ভারতীয় জনতা পার্টির সংসদ সদস্যের চা খাবার প্রস্তাব করা রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলের অন্দরে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!