এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মানুষের সঙ্গে মিশে সংগঠনের জাল ছড়িয়ে এত বড় আন্দোলন? মিমের পরিকল্পনায় চমকে গেল তদন্তকারীরা

মানুষের সঙ্গে মিশে সংগঠনের জাল ছড়িয়ে এত বড় আন্দোলন? মিমের পরিকল্পনায় চমকে গেল তদন্তকারীরা

গত শুক্রবার থেকেই সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরোধিতায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসাত্মক আন্দোলন দেখতে পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রশাসনিক আধিকারিকরা রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, সহিংস আন্দোলনকারীদেরকে কোনোভাবেই রেয়াত করবে না প্রশাসন। এক্ষেত্রে আইন আইনের পথে চলবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

কিন্তু যখন তৃণমূল কংগ্রেস এই ধরণের আন্দোলনকে সমর্থন করছে না, তখন নেপথ্যে থেকে কারা এই ধরনের হিংসাত্মক গতিবিধিকে পরিনাম দিচ্ছেন! সেই তদন্ত করতে গিয়ে ভয়াবহ ছবি উঠে এল গোয়েন্দাদের নজরে। তদন্তে সামনে উঠে আসে, সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের বিরুদ্ধে বাংলার প্রায় প্রত্যেকটা জেলাতেই একই পদ্ধতিতে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে বহিরাগত মৌলবাদী শক্তি।

প্রথম দিকে তারা সাধারণ লোকজনের সঙ্গে মিশে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। পরে তারা সুযোগ বুঝে তাদের থেকে রীতিমতো আলাদা হয়ে গিয়ে স্টেশনে ভাঙচুর, লুটপাট, আগুন ধরানো ইত্যাদি সমাজবিরোধী কাজকর্ম ঘটিয়েছে মৌলবাদী সংগঠনের কর্মীরা। পাশাপাশি লুটপাটের মতো ঘটনাও তারা ঘটিয়ে এলাকা থেকে চম্পট দিয়েছেন। অশান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে করে তাঁরা কেরোসিন, পেট্রোল ইত্যাদি নিয়ে এসেছিলেন।

আর এই সমস্ত পেট্রোল, ডিজেল সরিয়েই রেজিনগরের মত স্টেশনে আগুন ধরানো হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দাদের তদন্তে এরকম ধরনের ঘটনার ছবি সামনে উঠে আসছে। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের বিরোধীতা করে আন্দোলন সংগঠিত করেছিল মৌলবাদী সংগঠনের নেতৃত্ব। তাদের মধ্যে বেশকিছু নেতৃত্ব পুলিশের নজরে রয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে।

মূলত জঙ্গীপুর মহকুমার চার থেকে পাঁচজন এই সংগঠনের খবর সংগঠনকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে তারাই সদস্য সংগ্রহ করছে জেলাজুড়ে সংগঠনের জাল বিস্তার করছে। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন এই ব্যাপারে শক্ত হাতে হাল ধরার পরেই তাদেরকে ময়দান ছেড়ে পালাতে হয়েছে। এখন আর তাদেরকে প্রকাশ্যে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।

ওই মৌলবাদী সংগঠনের অবস্থিত পার্টি অফিসে তালা পড়ে গিয়েছে। উত্তেজনা ছড়ানোর ক্ষেত্রে বরাবরই ইন্টারনেটকে একটা বড় মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে এসেছিল বহিরাগত ওই মৌলবাদী সংগঠন। বর্তমানে প্রশাসনের তরফে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়াতে, তারা সেখানেও সক্রিয়তা দেখাতে পারছে না।

বর্তমানে আত্মগোপন করে থাকার কারণে মঙ্গলবার দিন তারা আর নতুন করে কোনো অশান্তি ছড়াতে পারেনি। কিন্তু ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গীপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় তারা তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী মানসিকতার বীজ বপন করেছেন বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে তদন্তকারীদের অনুসন্ধানে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এছাড়াও তদন্তের স্বার্থে সাগরদিঘী থানার জাতীয় সড়কের পাশে একটি গ্রামে গিয়ে ওই সংগঠনের সম্পর্কে নানান তথ্য জানতে পেরেছেন গোয়েন্দা বিভাগ। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে যে সমস্ত এলাকায় এই সংগঠনের অস্তিত্বের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে, সেই সমস্ত জায়গায় কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে ব্যাপক উন্নতি করা হয়েছে। সাগরদিঘিতে এক যুবকের কাছে সংগঠনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সেই যুবক বলেন, “বর্তমানে ওই মৌলবাদী সংগঠনের কোনো নেতৃত্ব গ্রামে নেই। তবে তারা মুখে মুখে সংগঠনের কাজকর্ম ছড়ান।”

ইতিপূর্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে অবশ্য প্রশাসনকে বহিরাগত ওই মৌলবাদী সংগঠনের বিষয়ে রীতিমত সাবধানতা অবলম্বন করতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মোতাবেক প্রশাসন সক্রিয় হয়ে যাওয়ার ফলে তাদের বহু কর্মসূচির পরিকল্পনা বানচাল হয়ে গেছে। তাছাড়া বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে রেখেছিল হায়দ্রাবাদের ওই মৌলবাদী সংগঠন।

রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে যদি কোনো দল নিজেদের বিস্তার ঘটাতে চায়, সেক্ষেত্রে ভারতের সংবিধান মোতাবেক বাধা নেই। তবে সংগঠনের নামে যদি কেউ উগ্র, হিংসা অথবা ভেদাভেদের নামে দাঙ্গা লাগানোর পরিকল্পনা করে, তাদেরকে আটকানোর যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে।

আর যেখানে রীতিমতো নিষিদ্ধ সংগঠনের কায়দায় অল্পবয়সী ছেলেদের মগজ ধোলাই থেকে শুরু করে ধর্মের নামে প্রলোভন দিয়ে রাজ্যের সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের জন্য তাদেরকে প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে, তাতে করেই বোঝা যায়, এই সংগঠন যদি আগামী দিনে নিজেদের মাথা তুলতে পারে, তাহলে রাজ্যের সম্প্রীতির পক্ষে তা হিতকর হবে না। এক্ষেত্রে আগামীদিনে এই সংগঠনের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে! সেদিকে লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!