এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > করোনার ভয়াবহ সংক্রমণে নিজামুদ্দিনের দায়ভার নিতে রাজি নন সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান

করোনার ভয়াবহ সংক্রমণে নিজামুদ্দিনের দায়ভার নিতে রাজি নন সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান

মারণ করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রয়েছে ভারতবর্ষে। ইতিমধ্যে সংক্রমণ এড়াতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। আশা করা হয়েছিল, লকডাউন চলাকালীন সংক্রমণের হার হয়তো কিছুটা কমবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেরকম কিছুই দেখা যাচ্ছেনা, বরং এক ধাক্কায় সংক্রমণের সংখ্যা বেশ কিছুটা বেড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের কারণ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে অন্য তথ্য। জানা যাচ্ছে, দিল্লী নিজামুদ্দিন মসজিদে তবলিঘি জমায়েতের একটি অনুষ্ঠানে প্রায় 2 হাজার জন একত্রিত হয়েছিলেন লকডাউন এর মধ্যেই।

এরকম একটি অনুষ্ঠান করার ফলে উঠেছে প্রশ্ন। পরবর্তীতে দেখা যায়, এই জমায়েতে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের বেশিরভাগের শরীরেই করোনার জীবাণু বাসা বেঁধেছে। এই নিয়ে শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক চাপানউতোর। অন্যদিকে আবার দিল্লি মাইনরিটিস কমিশন বা সংখ্যালঘু কমিশন তবলিঘি জামাতিদের ওপর জমায়েত করার অভিযোগ এবং করনার সংক্রমণে পরোক্ষে তাঁদের যে ভূমিকা প্রকাশ হচ্ছে, সে বিষয়টি সম্পূর্ণ নাকচ করে দিচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে তাঁরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে একটি চিঠি লিখে ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছেন, যতজন তবলিঘি নিজামুদ্দিনের জমায়েত করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে সবাই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। এমনকি সমস্ত মুসলিমও তবলিঘি নন। যুগ্মভাবে এই চিঠি লিখেছেন সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ডঃ জাফরুল ইসলাম খান এবং কমিশনের সদস্য কর্তার সিং কোচার। ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, নিজামউদ্দিনের সভায় যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে করোনা ভাইরাসের বাহক হননি।

তাঁরা নিজেরাও এই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সদস্য অভিযোগ করেছেন, বর্তমানে দেশের সমস্ত মুসলিমকে করোনা ভাইরাসের বাহক হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে। যার ফলে দেশের সমস্ত তবলিঘিদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদেরও চিঠি লিখেছেন বলে জানা গেছে। এই চিঠিতে সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ থাকেন। তাঁরাও লকডাউন উপেক্ষা করছেন সচেতনতা না দেখিয়েই।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু সেক্ষেত্রে নিয়ম কানুনের রাশ আলগা করে শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্য সন্দেহজনক দৃষ্টি রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, যাঁরা নিজামুদ্দিনে সেদিন উপস্থিত ছিল, তাঁদেরকে প্রমাণসাপেক্ষে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো উচিত, দেশের সমস্ত মুসলমানকে অহেতুক ভাবে হেনস্থা করা উচিত নয়। সূত্রের খবর, মার্চের মাঝামাঝি দিল্লিতে বাংলাওয়ালী মসজিদে এক ধর্মীয় সমাগম হয়। সেখানেও বহু মানুষের জমায়েত হয়েছিল- যেখানে নিজামুদ্দিনের আক্রান্তরাও ছিলেন বলে জানা গেছে। গত পয়লা মার্চ থেকে 15 ই মার্চের মধ্যে এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় 2 হাজার মানুষ এসে উপস্থিত হয়েছিলেন।

এরপরেই দিল্লির নিজামুদ্দিনে ধর্মীয় সমাবেশ হয় এবং এই অনুষ্ঠান থেকে 175 জনকে চিহ্নিত করা হয়, যাঁদের করোনা ভাইরাস পজেটিভ আছে বলে জানা গেছে পরবর্তীতে। নিজামুদ্দিনে উপস্থিত 2000 জনকে ইতিমধ্যে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, দিল্লি পুলিশ নিজামুদ্দিনের জমায়েতের জন্য জামাত প্রধানকে আইনত নোটিশ ধরিয়েছে বলে খবর। প্রথম থেকেই স্বাস্থ্য আধিকারিকরা ক্রমাগত বলে আসছেন নিজামুদ্দিনে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের শারীরিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।

প্রত্যেকেই যেন এগিয়ে আসেন। কিন্তু দেখা যায়, যতজন ওই জমায়েতে উপস্থিত ছিলেন তাঁদের মধ্যে সিকিভাগ পরীক্ষা করবার জন্য উপস্থিত আছেন, বাকিরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে যান এবং লুকিয়ে থাকেন। যার ফলে সংক্রমণ ছড়াতে বিন্দুমাত্র সময় লাগেনি। সূত্রের খবর, বর্তমানে তবলিঘি জামাত প্রধান মৌলানা সাদ এর দুই ঘনিষ্ঠ আত্মীয় সংক্রামিত হয়েছেন করোনায়। এ খবর জানিয়েছেন স্বয়ং উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরের জেলাশাসক অখিলেশ সিং। তিনি আরো জানিয়েছেন দুই করোনা আক্রান্তকে ইতিমধ্যে ফতেপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আক্রান্তরা যে এলাকার বাসিন্দা সেটিকে হটস্পট চিহ্নিত করে আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খুঁজে বার করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

অন্যদিকে, ক্রমাগত বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও করোনা পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। অবস্থা যে চরম সংকটময় তা বিশেষজ্ঞদের অনুমান থেকেই বোঝা যায়। এই মুহূর্তে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, যে কোন মুহূর্তে ভারতে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে যেতে পারে। আর সেটাই সবথেকে ভয়ংকর হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসক ও গবেষকরা। দুর্বল স্বাস্থ্য পরিকাঠামোসম্পন্ন ভারতবর্ষে যদি গোষ্ঠী সংক্রমণ একবার ছড়ানো শুরু হয়, তাহলে কোনমতেই এই বিশাল জনজাতি রক্ষা পাবেনা বলেই মনে করা হচ্ছে। আপাতত বিশেষজ্ঞরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ওপরেই সব থেকে বেশি জোর দিয়েছেন করোনা সংক্রমণ এড়াতে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!