এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিধায়ককে অশ্লীল মন্তব্য, ভৎসনার শিকার তৃণমূল বিধায়ক!

বিধায়ককে অশ্লীল মন্তব্য, ভৎসনার শিকার তৃণমূল বিধায়ক!

মাঝেমধ্যেই শাসক-বিরোধী তরজায় বিভিন্ন দলের নেতারা মাঠে ময়দানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করে বসেন। তবে গণতন্ত্রের পীঠস্থান বিধানসভায় আলোচনার সময়ে সেই অশ্লীল মন্তব্য কখনই কাম্য নয়। কিন্তু এবার রাজ্য বিধানসভায় এরকমই একটি বেনজির ঘটনার সাক্ষী থাকলেন সকলে। সূত্রের খবর, শনিবার বিধানসভায় বাজেট বিতর্কে বক্তৃতা করতে উঠে তৃণমূল বিধায়ক নার্গিস বেগম।

আর তখন শাসক দলেরই মন্ত্রী অসীমা পাত্র তাকে কিছু বলতে যান। আর সেই সময় নার্গিস বেগম বলে ওঠেন, “আগে বক্তৃতা করে নিই। তারপরে ওদের গালিগালাজ করব।” এদিকে এই ঘটনার পরই সিপিএমের বিধায়ক জাহানারা বেগমের উদ্দেশ্যে রীতিমতো অশ্লীল মন্তব্য করেন নার্গিস বেগম বলেন, “তোমার ধর্ষণ হবে।” যে ঘটনায় রীতিমতো বিধানসভার অন্যান্য সদস্যরা হতবাক হয়ে যায়। লজ্জায় চোখ থেকে জল বের হতে শুরু করে সিপিএমের বিধায়ক জাহানারা বেগমের। সত্যিই তো তাই। যেখানে বাংলার বিধানসভায় সুস্থ আলোচনা দরকার, সেখানে বিরোধীরা প্রতিবাদ করার সময় কেন তাদের এই ধরনের মন্তব্য করবেন শাসকদলের বিধায়ক! তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে সকলের মধ্যেই।

এদিকে দলের বিধায়কের এই ধরনের মন্তব্য যে তারা অনুমোদন করেন না, তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন তৃণমূলের মন্ত্রীরাও। সূত্রের খবর, দলীয় বিধায়কের এই ধরনের মন্তব্যের কড়া ভাষায় নিন্দা করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে দলের বিধায়ক নার্গিস বেগমের এই ধরনের মন্তব্যের জেরে সরকারি দলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষকে কিছু বলতে দেখা যায় রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে এই ঘটনার পরই অধিবেশনের প্রথমার্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পর স্পিকারের ঘরে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন সিপিএম বিধায়ক জাহানারা বেগম। নার্গিস বেগমের এই ধরনের মন্তব্যের জন্য স্পিকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। আর তৃণমূলের বিধায়কের দ্বারা সিপিএমে বিধায়কের প্রতি এই ধরনের অপমানজনক মন্তব্যে দুঃখ প্রকাশ করতে দেখা যায় ফিরহাদ হাকিম এবং সুজিত বসুকে।

এদিন সিপিএমের জাহানারা বেগমের উদ্দেশ্যে এই মন্ত্রী বলেন, “আমরা নার্গিসের হয়ে তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি। আমাদের দল এই মন্তব্য সমর্থন করে না। দেখছি কি করা যায়।” এদিকে দ্বিতীয়ার্ধের অধিবেশনের শুরুতেই এই বিষয়টি নিয়ে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তৃণমূল বিধায়কের কড়া শাস্তির দাবি জানান পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। আর তখনই তৃণমূল বিধায়কের সেই মন্তব্য যে তারা সমর্থন করেন না, তা জানিয়ে দেন তৃণমূল মহাসচিব তথা রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সভায় এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে, যা সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আমরা কিসের জনপ্রতিনিধি! নীতি-আদর্শের পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে এমন কাজ করব না, যাতে সভার গরিমা এবং সুস্থ সংস্কৃতি ক্ষুন্ন হয়। আমাদের কোনো বিধায়ককে অন্য বিধায়কের প্রতি অপমানজনক শব্দ উচ্চারণ করার অনুমোদন দল দেয় না। নার্গিস বেগম মন্তব্য প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করুন।”

একইভাবে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এই ব্যাপারে সেই তৃণমূল বিধায়ককে সতর্ক করে দেন। আর তারপরেই সভার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন তৃণমূল বিধায়ক নার্গিস বেগম‌। তিনি বলেন, “আমার মুখ দিয়ে যে কথা বেরিয়েছে, তাতে কেউ দুঃখ পেয়ে থাকলে আমি হাতজোড় করে তার কাছে ক্ষমা চাইছি।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিধানসভা সুস্থ আলোচনার জায়গা। সেখানে যেভাবে তৃণমূলের বিধায়ক বাম বিধায়কের উদ্দেশ্য অশ্লীল মন্তব্য করলেন, তা সত্যিই নজিরবিহীন ঘটনা।

তবে রাজনীতিতে বিরোধিতা থাকলেও এই ধরনের মন্তব্য যে তৃণমূল কংগ্রেস অনুমোদন করে না, সেই কথা তুলে ধরে তৃণমূল বিধায়ককে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলে শাসকদল কিছুটা হলেও নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শিত করল বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের। কিন্তু কেন এইভাবে বাংলার রাজনীতিবিদরা অশ্লীল মন্তব্য করা শুরু করেছেন, আর এবার তা থেকে কেন বাদ গেল না স্বয়ং বিধানসভা কক্ষও! এখন তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের মনে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!