এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃনমূলের প্রাক্তন বিধায়ক তৃনমূলে না বিজেপিতে? জোর জল্পনা

তৃনমূলের প্রাক্তন বিধায়ক তৃনমূলে না বিজেপিতে? জোর জল্পনা

 

বর্তমান ভারতবর্ষের রাজনীতিতে দলবদল নতুন কোনো ব্যাপার নয়। আর পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রতি লোকসভার নির্বাচন শেষ হওয়ার পর থেকেই মুড়ি-মুড়কির মতো তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসার ইঁদুর দৌড় শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু এসব কিছুর মধ্যেই কোনো হেভিওয়েট নেতা যদি সরকারি দলের থেকে বিরোধী দলের দিকে পা বাড়ায়, তাহলে তা রীতিমত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায়।

সেরকমই ঘটনা শোনা যাচ্ছে, গত কয়েকদিন ধরে গাজোল এলাকায়। যেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক সুশীল রায়ের বিজেপি যোগ নিয়ে রীতিমতো আলোড়ন উঠতে শুরু করেছে মালদা জেলার রাজনীতিতে। গত বুধবার যখন মালদা জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন একটি বেসরকারি হোটেলে বিজেপির কেন্দ্র এবং রাজ্য নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠকে বসেছিলেন সুশীলবাবু বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের সুশীল রায়ের বিরোধী গোষ্ঠীর তরফ থেকে।

যা নিয়ে তৃণমূলের একাংশ মনে করছেন, এখন সুশীলবাবুর তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করা শুধুই সময়ের অপেক্ষা। তবে এতে করে যে তৃণমূল কংগ্রেসের আগামী দিনে খুব একটা বেশি অসুবিধা হবে না, তা নিয়ে কার্যত স্পষ্ট বার্তা দেন তৃণমূল কংগ্রেসের গাজোল বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সুশীল রায়ের সঙ্গে বিজেপির যোগসাজশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সুশীলবাবু যত তাড়াতাড়ি দল ছাড়বেন, ততই দলের মঙ্গল। কারণ দলের ভেতর থেকে তিনি দীর্ঘদিন দলের ক্ষতি করেছেন। তিনি যদি চলে যান, তাহলে দলের ভালই হবে। তিনি যে দলে থেকে দল বিরোধী কার্যকলাপ করছেন, সেটা তার মোবাইল অডিও বার্তা থেকেই বোঝা যাচ্ছে। এখানে আমার নতুন করে বলার মত আর কিছু নেই। গাজোলে কে চলে গেল, বা কে চলে যাচ্ছে, তা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই। আমরা যেভাবে সংগঠন চালাচ্ছি, সেভাবেই চালিয়ে যাব।”

তবে সুশীলবাবুকে ভারতীয় জনতা পার্টিতে নেওয়া হলে তাতে করে এলাকায় পদ্মফুল শিবিরের কি খুব একটা লাভ হবে! ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে স্থানীয় বিজেপি নেতাদের মধ্যে। এদিন এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মালদা জেলা পরিষদের বিজেপি সদস্যা সাগরিকা সরকার বলেন, “গত বিধানসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচন কোনো ক্ষেত্রেই সুশীলবাবু তার দলের ফলাফলের ক্ষেত্রে তেমন কিছু করে উঠতে পারেননি। গাজলের ভোট টানতে তিনি যে ততটাও ফ্যাক্টর নয়, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।”

তবে তাকে বিজেপিতে নেওয়া হবে কিনা, এই ব্যাপারে অবশ্য কোনো মন্তব্য করতে চাননি সাগরিকাদেবী। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মালদহ সফরকে কেন্দ্র করে যখন গোটা মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে সাজে সাজে রব চলছিল, সেই সময় প্রাক্তন বিধায়ক সুশীল রায় একটি বেসরকারি হোটেলে বিজেপির রাজ্য নেতা মুকুল রায় এবং কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন বলে অভিযোগ।

এমনকি বিরোধীদের অভিযোগ সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিও ক্লিপিংস ফাঁস হয়ে যায় যার পরই এই নিয়ে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি হয়ে যায় তৃণমূল কংগ্রেস তথা রাজনৈতিক মহলের অন্দরে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গত 2016 সালে বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরই এই এলাকায় যে গোষ্ঠী কোন্দল তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়, তা এখনও পর্যন্ত সমাধান হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত থাকা বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস পরবর্তীতে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে চলে আসে। তখন প্রাক্তন বিধায়কের সঙ্গে তার কোন্দল চরমে ওঠে। তবে নিজে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ফলে রাজনীতিতে খানিকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন সুশীলবাবু।

তাই বর্তমানে তিনি যে নিজের রাজনৈতিক উত্থানের জন্য কোনো না কোনো দিক থেকে চেষ্টা করবেন, তা বলাই বাহুল্য। এদিন এই প্রসঙ্গে নিজের মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে প্রাক্তন বিধায়ক সুশীল কুমার রায় বলেন, “দলবদল নিয়ে চর্চার কিছু নেই। অনেকে অনেক রকম কথা বলতেই পারেন। তবে ভবিষ্যতে কি হবে, তা সময় বলবে। কারণ রাজনৈতিক মানুষের সব সময় এক রকম ভাবে যায় না। এই কথাটা রাজনৈতিক নেতারা ভালো করেই জানেন। বর্তমানে আমি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আছি। দলের জন্যই দৌড়চ্ছি।”

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এখন শেষ পর্যন্ত সুশীলবাবু বিজেপিতে যোগদান করেন, নাকি তৃণমূল কংগ্রেসে থেকে আগামী দিনে নিজের গোষ্ঠীকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেন! সেদিকে লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!