এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মমতার ঝাড়খন্ড সফর নিয়ে তাকে কটাক্ষ করলেন হেভিওয়েট নেত্রী, জোর শোরগোল!

মমতার ঝাড়খন্ড সফর নিয়ে তাকে কটাক্ষ করলেন হেভিওয়েট নেত্রী, জোর শোরগোল!


 

কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি 2 সরকার গঠন হওয়ার পরেই একাধিক যুগান্তকারী লোকসভা এবং রাজ্যসভায় পাশ করতে দেখা গেছে কেন্দ্রশাসিত দলকে। যার মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। কিন্তু এই আইন লোকসভা এবং রাজ্যসভায় পাশ হওয়ায় রাষ্ট্রপতির সইয়ের পরে কার্যকর হওয়া থেকেই সমগ্র দেশে বিরোধিতার আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে পূর্ব এবং উত্তর সবখানেই আইনের বিরোধিতা হতে থাকে। আর এই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিকে এই সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট কার্যকর হওয়ার পরবর্তী উত্তেজনাপূর্ণ সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, কংগ্রেস ও আরজেডি জোট ক্ষমতায় এসেছে। গোটা দেশের নজর ছিল, এই নির্বাচনের দিকে। কারণ একদিকে যেমন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস হওয়ার পরে জনগণের মনোভাব কি, তা বুঝতে চাইছিল বিশেষজ্ঞরা।

অন্যদিকে তেমনই পাঁচ পাঁচটি রাজ্যে আশানুরূপ ফল না পাওয়ার পরে ঝাড়খন্ড থেকে কামব্যাক করতে পারে কিনা বিজেপি, সেদিকেও নজর ছিল সকলের। তবে ঝাড়খন্ডে বিজেপিকে পরাজিত করে জোট বিজয়লাভ করার পরেই কার্যত বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সমগোত্রীয় বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এমতবস্থায় ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পৌঁছে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। কার্যত শপথ গ্রহণের আগের দিন রাত্রিবেলায় রাঁচিতে পৌঁছান তিনি। তাকে ঘিরে উৎসাহের কমতি ছিল না ঝাড়খণ্ডের জোট দলগুলির নেতা-নেত্রীদের মধ্যে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত জানাতে রীতিমত কাট আউট লাগানো হয়।

রাচি সহ বিভিন্ন রাস্তায় শুধু তাই নয়, হোটেলরুমে রাত্রি যাপন করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে তাকে অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের দিন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হিসেবে বিরাজমান ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাচি যাত্রাকে কটাক্ষ করতে ছেড়ে দেয়নি কেন্দ্রের শাসক দল তথা পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা নেত্রীরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রীতিমত প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করতে দেখা যায় হুগলির ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদ বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। এই প্রসঙ্গে হুগলির সাংসদ বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেমন্ত সোরেনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানকে বিরোধী ঐক্য মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করতে ঝাড়খন্ডে যান। তিনি আরও বলেন, “এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেমন্ত সোরেনের বিরুদ্ধে 26 জন প্রার্থীকে দাঁড় করিয়েছিলেন। যাদের প্রত্যেকের জামানত জব্দ হয়েছে। মানুষকে বোকা বানাতে তৃণমূল সুপ্রিমো স্রেফ বিজেপির বিরোধিতায় হেমন্তের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন।”

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য আশাই করছিলেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাচি যাত্রাকে নিয়ে আক্রমনাত্মক হবেন ভারতীয় জনতা পার্টি। আর বিশেষজ্ঞদের সেই ধারণাকে সত্যি করে রবিবার উত্তর 24 পরগনার নীলগঞ্জ এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে দেখা যায় লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। এদিন তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাড়খন্ড যাত্রা করেছেন। গুন্ডা ভাড়া করতে বাহুবলের রাজনীতি করেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।”

এদিনের সভা থেকে সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারকে রীতিমত তুলোধোনা করতে দেখা যায় বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, “সিএএ নিয়ে ভুল বার্তা প্রচার করছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও তিনি সংবিধানকে অস্বীকার করে চলেছেন এবং সন্ত্রাস চালাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই কাজকর্মের প্রতিফলন হিসাবে মানুষ তাকে ভোট বাক্সে এর জবাব দেবে।”

কার্যত এর আগে মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র কথাকে একমত সমর্থন করেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই উচ্ছাসিত হতে দেখা যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শুধু তাই নয়, বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদেরকে চিঠি লিখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “আসুন সবাই মিলে দেশকে বাঁচাই।”

তিনি আরও উল্লেখ করেছিলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং এনআরসি নিয়ে দেশে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে বিশেষ করে মহিলা, তপশিলি জাতি- উপজাতি অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় এবং সংখ্যালঘুরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠির পরিশেষে তিনি বলেছিলেন, “আমরা সকলে মিলে আসুন, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ ও অর্থপূর্ণ বিরোধিতা গড়ে তুলি।”

তাই ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাবেন এবং সেই মঞ্চে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা উপস্থিত থাকলে আগামী দিনে তাদেরকে নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি বিরোধী রাজনৈতিক জোটের জল্পনা যে তুঙ্গে উঠবে, সেই বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ ছিল না কারও মধ্যেই। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অবস্থানকে যেভাবে ভারতীয় জনতা পার্টি আক্রমণ করে চলেছে, তাতে আগামী দিনে এই সমীক্ষা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়! সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!