রাফালের সঙ্গে আবারো জড়ালো মোদী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর নাম, শুরু তীব্র বিতর্ক জাতীয় August 13, 2018 কিছুদিন আগেই লোকসভায় আস্থা ভোটের দিন রাফাল দুর্নীতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছিলেন জাতীয় কংগ্রেস সুপ্রিমো রাহুল গান্ধী। অভিযোগ ছিল, ইউপিএ আমলের চুক্তিবদ্ধ অর্থের থেকে অনেক বেশি দামে রাফাল যুদ্ধবিমান কিনেছে মোদীসরকার। এমনকী, একটি বিশেষ ব্যবসায়ীক সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দিতেই দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিতেও পিছপা হননি প্রধানমন্ত্রী বলে অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। যদিও রাহুল গান্ধীর অভিযোগকে ভুল প্রমাণ করতে সভাস্থলেই সরব হয়েছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীও সেই অভিযোগকে তেমন গুরুত্ব দেননি। কিন্তু রাহুল গান্ধীর তোলা সেই অভিযোগ নিয়ে আবার নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে সম্প্রতি। সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গ্রূপ জানালো, রাফাল বিমানের যন্ত্রাংশ নির্মানের বরাত তাঁদের প্রতিরক্ষাদপ্তর থেকে পাওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তা একদমই ভু্য়ো এবং অযৌক্তিক। মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলতেই এ অভিযোগ করা হয়েছে। তবে এর সাথেই সংস্থাটি মেনে নিয়েছে, এই বরাত ফরাসি সংস্থা ডসাল্টের কাছ থেকে পেয়েছে তারা। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে এর সাথেই রিলায়েন্স গ্রূপের তরফে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থা হ্যালকে অনভিজ্ঞতার কারণবশত বরাত দেওয়া হয় নি। চুক্তিপত্রে রপ্তানি সংক্রান্ত যে শর্ত রয়েছে তা পূরণ করতে রিলায়েন্সকেই বেছে নিয়েছে ডসাল্ট। এখানে ভারতের প্রতিরক্ষাবিভাগের কোনো ভূমিকাই নেই। তবে একথা প্রকাশ্যে আসার পরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রীয় সরকারের নিজস্ব সংস্থা হ্যাল থাকা সত্ত্বেও কী কারণে বরাত পেল বেসরকারি সংস্থা? রিলায়েন্সে ডিফেন্স লিমিটেডের সিইও রাজেশ ধিংরা এ প্রসঙ্গে জানালেন, ফরাসি সংস্থা ডসাল্টের চুক্তি অনুযায়ী ৩৬ টি যুদ্ধবিমান সাপ্লাই করার কথা। এক্ষেত্রে হ্যাল বা অন্য কোনো সংস্থা নির্মাণকারী হতে পারবে না। কারণ ১২৬ মিডিয়াম মাল্টি-রোল কমব্যাট যুদ্ধবিমান তৈরিতে হ্যালকে বাছা হয়েছিল। চুক্তির শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল তাঁরা। তাই ৩৬ টি রাফাল বিমান সংক্রান্ত বরাত ডসাল্ট দিয়েছ রিলায়েন্স ডিফেন্সকে, প্রতিরক্ষাদপ্তর নয়। অন্যদিকে, যুদ্ধবিমান নির্মানে অনভিজ্ঞ রিলায়েন্স, এমনটাই স্বীকার করলেন ধিংরা। তিনি স্পষ্টভাবেই জানালেন, হ্যালই একমাত্র অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ভারতের যুদ্ধবিমান নির্মান সংস্থা। তবে এর সাথেই তাঁর দাবি, ৭০%-এরও বেশি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম দেশে আমদানীর প্রক্রিয়া সংস্থাটি চালিয়ে যাবেন। এছাড়া রিলায়েন্স এরোস্পেস লিমিটেডে ৪৯% অংশীদারিত্ব রয়েছে ডাসেল্টের, যাদের রয়েছে দীর্ঘ নব্বই বছরের অভিজ্ঞতা। এদের অভিজ্ঞতকে কাজে লাগিয়েই যুদ্ধবিমান বানানোর যোগ্যতম সংস্থা হয়ে উঠছে রিলায়েন্স বলে দাবি। তবে এত কিছুর পরেও কিন্তু বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না রিলায়েন্সের। রাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষা দপ্তরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ফরাসি সংস্থাকে দিয়ে ঘুরপথে তাঁর ঘনিষ্ঠ রিলায়েন্সকে যুদ্ধবিমান বানানোর বরাত পাইয়ে দিয়েছেন বলে সুর চড়াতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। সামনের বছর লোকসভা নির্বাচন – সেখানে নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপির বড় অস্ত্র হতে চলেছে দুর্নীতি মুক্ত পাঁচ বছরের প্রশাসন। কিন্তু এই রাফালে চুক্তি নিয়ে বিরোধীরা দুর্নীতি অস্ত্রে বিজেপিকে তীব্রভাবে আক্রমণের রাস্তায় যাবেন বলেই ধারণা রাজনৈতিকমহলের। আপনার মতামত জানান -