এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > মোদীকে সরাতে জোট গঠন কি নাস্তানাবুদ করবে মমতাকে? একাধিক সমীকরণে জটিলতা!

মোদীকে সরাতে জোট গঠন কি নাস্তানাবুদ করবে মমতাকে? একাধিক সমীকরণে জটিলতা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  2019 সালে একবার চেষ্টা তিনি করেছিলেন। কিন্তু সেই চেষ্টায় সফলতা পাননি। বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিভিন্ন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে কিভাবে জোট গঠন করা যায়, তার জন্য রীতিমতো মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে সমস্ত দলগুলোর মধ্যে মেলবন্ধন ঘটাতে কলকাতায় ব্রিগেড সমাবেশ করতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসকে। কিন্তু তাতেও লাভের লাভ কিছু হয়নি। দ্বিতীয়বারের জন্য বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রের ক্ষমতা দখল করে ভারতীয় জনতা পার্টি। তবে এবার আর সময় নষ্ট করতে চাইছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃতীয়বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা দখল করার পরে এবার দিল্লির ক্ষমতা দখলের দিকে মনোযোগী হয়ে উঠেছেন তিনি। সেদিক থেকে শুধুমাত্র একটি রাজ্যে ক্ষমতা থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে যে বিজেপিকে একা দিল্লির ক্ষমতা থেকে সরানো সম্ভব হবে না, তা খুব ভালো করেই জানেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই কারণে একুশে জুলাইয়ের শহীদ সমাবেশের মঞ্চ থেকে সরাসরি সমস্ত বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের বৈঠক করে অবিলম্বে মহাজোট গঠনের বার্তা দিয়েছেন তিনি।

কিন্তু বিজেপি বিরোধী একাধিক রাজনৈতিক দল থাকলেও, সেই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আবার বনিবনার অভাব রয়েছে। সেদিক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শত চেষ্টা করলেও, একে অপরের মুখ না দেখা বিজেপি বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কতটা কাছাকাছি আসতে পারবে, এখন সেটা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে। যার জেরে একাংশ বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতই আন্তরিকতা দিয়ে বিরোধী জোট গঠন করার চেষ্টা করুন না কেন, শেষ পর্যন্ত তাকে না এই মহাজোট গঠন করতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হতে হয়!

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিল্লির ক্ষমতা দখল করতে গেলে বা কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসীন হতে গেলে উত্তরপ্রদেশে ভালো ফল করা অত্যন্ত জরুরি। তবে সেই উত্তরপ্রদেশে বিরোধী মহাজোট যদি সাফল্য পেতে চায়, তাহলে সেখানে বেশ কিছু জটিলতা সামনে আসতে পারে। কেননা ইতিমধ্যেই সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজবাদী পার্টির মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তারা দুজনেই বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত হলেও, পৃথক পৃথকভাবে 2022 সালের উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করার কথা জানিয়ে দিয়েছে। সেদিক থেকে এই দুই রাজনৈতিক দল আগামী দিনে অর্থাৎ 2024 এর লোকসভা নির্বাচনে একসাথে থেকে বিরোধী মহাজোটে অংশ নিয়ে লড়াই করবে কিনা, তা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সেদিক থেকে বিরোধী মহাজোট যদি তৈরি হয়, তাহলে সমাজবাদী পার্টি যদি সেই মহাজোটে অংশগ্রহণ করে, তাহলে বহুজন সমাজবাদী পার্টি সেখানে নাও থাকতে পারে। আর এই সমীকরণ যদি বাস্তব হয়, তাহলে উত্তরপ্রদেশে খুব একটা ভালো ফল করতে পারবে না বিরোধী মহাজোট। যার ফলে উত্তরপ্রদেশের যদি তারা ভালো ফল করতে না পারে, তাহলে সারা দেশে হোঁচট খেতে হবে এই মহাজোটকে। তবে শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, ইতিমধ্যেই বিজেপির এক সময়কার সঙ্গী শিবসেনা আবার বিজেপির ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। নিজেদের মুখপত্রে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার সম্প্রসারণের ব্যাপারে প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছে শিবসেনাকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

স্বাভাবিকভাবেই তারা বিরোধী মহাজোটে অংশগ্রহণ করবে কি না, আর যদিও বা অংশগ্রহণ করে, তাহলে ভোটের আগে যদি আবার বিজেপির ঘনিষ্ঠ হয়ে যায়, তবে আরও চাপের মুখে পড়তে হতে পারে বিজেপি বিরোধী মহাজোটকে। তাই 2019 সালের মতো এবারেও আগে থেকে বহু চেষ্টা করেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর স্বপ্নের বিরোধী মহাজোটকে বাস্তবে রূপায়িত করতে পারবেন কিনা, এখন এটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।

অনেকে কটাক্ষ করে বলতে শুরু করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখন জাতীয় রাজনীতির দিকে মনোযোগী না হয়ে বাংলা সামলানোর দিকে নজর দেওয়া উচিত। কেননা এবার তৃতীয় বারের জন্য বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যের ক্ষমতা দখল করলেও, তার মাথায় রাখা উচিত, 77 টি আসন নিয়ে এককভাবে বিরোধীদলের জায়গা দখল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তাই আগামী দিনে এই বিজেপি যে রাজ্যের ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্রে তৃণমূলের চাপ বৃদ্ধি করবে, তা বলাই যায়। ইতিমধ্যেই শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে তৃণমূলের ওপর চাপ সৃষ্টি করে একের পর এক কর্মসূচি গ্রহণের মধ্য দিয়ে ঘাসফুল শিবিরকে বিড়ম্বনার মুখে ফেলে দিচ্ছেন, তাতে আগামী দিনে রাজ্য রাজনীতির ময়দান আরও বেশী উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তাই এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি বাংলা ছেড়ে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে দিল্লির ক্ষমতা থেকে বিজেপিকে সরানোর দিকে বেশি মনোযোগী হন, তাহলে তাকে বড্ড রিস্ক নিয়েই কাজ করতে হবে। কেননা বিরোধী মহাজোট সফলতা পাবে কি পাবে না, সেটা যেমন একটা বড় বিষয়, ঠিক তেমনই সর্বভারতীয় রাজনীতির দিকে নজর দিলে ফাঁকতালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দখলে থাকা বাংলাতে গত 2019 সালের মতই আবার বিপুল আসন বিজেপি ছিনিয়ে নিতে পারে। আর এই সমস্ত সমীকরণকে মাথায় রেখে আগেভাগে নিশ্চিত হয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপি বিরোধী মহাজোট গঠনের অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করা উচিত বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!