মোদির দোসর মমতা! কেন্দ্র ও রাজ্য বিরোধী দুদিনের ধর্মঘটে ‘কাঁপিয়ে’ দিতে তৈরী বাম কর্মী সংগঠন ও নেতারা জাতীয় রাজ্য January 2, 2019 লোকসভা ভোটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আগামী ৮-৯ জানুয়ারি বামপন্থী এবং ডানপন্থী শ্রমিক এবং কর্মচারী সংগঠনগুলো সমবেতভাবে বিজেপি সরকারবিরোধী ধর্মঘট করে গোটা দেশ কাঁপিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। দুদিন ব্যাপী এই ধর্মঘটকে টার্গেট করেই কেন্দ্র এবং রাজ্যসরকার বিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করার ছক কষেছে বাম শিবির। গত একমাস ধরেই এই ধর্মঘটকে সর্বাত্মক করার লক্ষ্যে প্রচার কর্মসূচিতে জোর দিয়েছে। আর আগামী এক সপ্তাহে এই প্রচারকে আরো চাঙ্গা করতে তুলতে আসরে নামার সিদ্ধান্ত নিলেন বামফ্রন্ট এবং সহযোগী দলগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতারা। লোকসভা ভোটকে টার্গেট করেই এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো পরিকল্পনা এবার আলিমুদ্দিন স্ট্রীটের কর্তাদের। কেন্দ্র এবং রাজ্যবিরোধী এই ধর্মঘটকে সার্বিক এবং সর্বাত্মক করে তুলতে বামেরা যে বদ্ধপরিকর,এমনটাই রাজ্যবাসীকে উদ্দেশ্য করে আগেভাগে জানিয়ে দিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। এদিন বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, মোদী সরকারের তুঘলকি নীতির কারণে দেশের মানুষ আজ চরম ভোগান্তির শিকার। মোদীসরকারের হটকারী সিদ্ধান্তের জন্যে দেশে অঘোষিত জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলেও দাবী করেন তিনি। এই প্রেক্ষিতে দেশের তামাম শ্রমিক এবং কর্মচারি সংগঠন এই ধর্মঘট ডেকে কেন্দ্র সরকারকে সচেতন করতে চাইছে৷ আর এই সর্ব ভারতীয় শ্রমিক এবং কর্মচারী সংগঠনকে সম্পূর্ণ সমর্থন করেই ময়দানে নামতে চাইছে বামেরা। এর পাশাপাশি বামফ্রন্টের এই বর্ষীয়ান নেতা আরো জানালেন,ধর্মঘটের জন্যে নির্ধারিত ওই দুদিনের জন্যেই রাজ্যবাসীর কাছে আগাম মার্জনা চেয়ে রাখছে বামেরা। সেইসঙ্গে যাঁরা দূরপাল্লা ট্রেন বা বাস এবং বিমানের টিকিট কেটেছেন, তাঁদের যাত্রা পরিবর্তনের অনুরোধ করা হচ্ছে। কারণ ওই দুই দিন রাস্তা বা রেল স্টেশনে ধর্মঘটের সমর্থনে জোরদার পিকেটিং চলবে। প্রয়োজনে অবরুদ্ধ হতে পারে রেল লাইন এবং রাস্তাও। তবে সংঘাত করার কোনো পরিকল্পনা নেই বামেদের। মানুষের প্রয়োজনে মানুষকে সঙ্গে নিয়েই কেন্দ্র এবং রাজ্য বিরোধী এই কর্মসূচি সফল করার পরিকল্পনা রয়েছে বামেদের,জানালেন বিমান বসু। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - প্রসঙ্গত, ধর্মঘটের সংশ্লিষ্ট দুইদিন রাস্তা এবং রেলস্টেশনের নেতাদের পাশাপাশি রেকর্ড পরিমান কর্মী সমর্থকদের জমায়েত করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। রাজ্য অচল করতে জাতীয়,রাজ্য সড়ক এবং রেল লাইন অবরোধ করারও ইঙ্গিত দিয়েছেন লালশিবির কর্তারা। তবে শাসকদলের সঙ্গে আগ বাড়িয়ে সংঘাত করার কোনো ইচ্ছে না থাকলেও কর্মসূচি চলাকালীন কোনো বাম নেতা-কর্মীদের ঘরে বসে না থাকারই নিদান দিয়েছেন বিমান বসু-সূর্যকান্ত মিশ্রেরা। লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেতে এই কর্মসূচিকে চ্যালেঞ্জ হিসাবেই দেখছে রাজ্যের বামশিবির। মূলত বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ডাকা ধর্মঘট হলেও রাজ্যসরকার এ ব্যাপারে কী অবস্থান নেয়,সেটা নিয়েও চর্চা শুরু করেছে বামেরা। অন্যান্য বারের মতো তৃণমূল যদি রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে বামেদের বাধা দেয় তাহলে তাঁরাও চুপ করে বসে থাকবে না,এমনটাও ভাবা হয়েছে। এমনকি এক্ষেত্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিজেপি বিরোধী দলগুলোর ধর্মঘটের পক্ষে থাকার অবস্থানকেও সামনে আনবে বামেরা। পাশাপাশি এই প্রেক্ষিতে তৃণমূল সরকার বিরোধী আন্দোলনকেও জোরদার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই প্রচারে সরাসরি বিজেপি-তৃণমূলকে বিঁধতে ‘মোদির দোসর মমতা’ এই শ্লোগানকেই হাতিয়ার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত তৃণমূল সুপ্রিমোর বিজেপি বিরোধী স্বরূপকে রাজ্যবাসীর কাছে উন্মুক্ত করার লক্ষ্যেই এই ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছে বামেরা। আর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতেই গতকাল অর্থাৎ বছরের শেষদিন আলোচনায় বসে ১৭ টি বাম এবং সহযোগী দলের শীর্ষ নেতৃত্বরা। সেখানেই দলগুলি রাজ্যে একক এবং যৌথ প্রচার সম্পর্কে খতিয়ান পেশ করে। বিশ্লেষণে উঠে এসেছে,অন্যান্য বারের তুলনায় এবার বামেদের প্রচারের বহর অনেকটাই বেশি। তবে গ্রামঞ্চলে প্রচার কর্মসূচি অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। সেদিকে নজর দিয়েই এবার কৃষক এবং খেতমজুর সংগঠনগুলোকে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে আগামী সাতদিনে প্রচার কর্মসূচিকে আরো জোড়দার করতে কোমর বেঁধে ময়দানে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বামফ্রন্ট এবং সহযোগী দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। এখন বামেদের এই কর্মসূচি নিয়ে রাজ্যসরকারের অবস্থান কী হয় সেটাই দেখার! আপনার মতামত জানান -