দাম কমেও দাম বেড়েছে রাফালের? সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সামনে আনল বড়সড় বিস্ফোরক তথ্য জাতীয় January 19, 2019 রাফাল ইস্যু নিয়ে ফের পারদ চড়তে চলেছে রাজনৈতিকমহলে। গত বছর এই ইস্যু নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। দফায় দফায় এই ইস্যুতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মোদীসরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দল। ফের এই ইস্যু রাজনৈতিক ক্ষেত্রকে সরগরম করতে চলেছে। সম্প্রতি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকা রাফাল চুক্তি সংক্রান্ত বড়সড় বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনল। এই সংশ্লিষ্ট পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে বিশিষ্ট সাংবাদিক এন রাম দাবী করেছেন, নরেন্দ্র মোদী যে চুক্তি করেছেন তাতে রাফালের দাম ৪১.৪২% বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ ভাবে ভারতের জন্য তৈরি বিমানের ‘ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ (ডি অ্যান্ড ডি) বাবদ যে অতিরিক্ত টাকা নির্মাতা সংস্থাকে দিতে হচ্ছে, তার ফলেই দামের এই বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০১১ সালে ইউপিএ জামানায় বিমান প্রতি যে দাম ঠিক করা হয়েছিল ১০.০৮ কোটি ইউরো,তার থেকে দাম কমেছে (৯.১৭ কোটি ইউরো) মোদী সরকারের বিমানের। কিন্তু লক্ষ্য করার মতো বিষয় হল, ডি অ্যান্ড ডি বাবদ মনমোহন সিং সরকার যে-দাম স্থির করেছিলেন (১.১১ কোটি ইউরো), তার থেকে এই একই খাতে মোদি সরকারের খরচ হয়েছে অনেক বেশি (৩ কোটি ৬১ লক্ষ ইউরো)। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - ফলে মোট দাম প্রায় দেড় গুণ বেড়ে যায়। ডি অ্যান্ড ডি বাবদ এত খরচের বিরুদ্ধে সওয়াল তুলেছেন ‘ইন্ডিয়ান নেগোশিয়েটিং টিম’-এর তিনজন সদস্য। বাকি চার জন এই বাড়তি দামের স্বপক্ষেই যুক্তি দিয়েছেন। এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হতেই লোকসভা ভোটকে নিশানা করে মোদীসরকার বিরোধীতায় ফের নড়েচড়ে বসে কংগ্রেস। রাফাল চুক্তির তদন্তে ফের যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবী তোলেন রাহুল-সোনিয়া গান্ধীরা। এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেছেন,বায়ুসেনার ১২৬টি যুদ্ধবিমানের প্রয়োজন ছিল। অথচ নরেন্দ্র মোদি সরকার মাত্র ৩৬টি কিনেছে। এই ভাবে দেশের জাতীয় সুরক্ষা নিয়ে খেলা শুরু করেছেন মোদী। এখন যা অবস্থা তাতে বিমান-প্রতি সরকারকে আরো ৪১.৪২% বাড়তি টাকা দিতে হবে। রাফাল নিয়ে এতোদিন যাঁরা দরাদরি করছিলেন তাঁদের যাবতীয় আপত্তি অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এরকম অপ্রত্যাশিত ঘটনা কেন হল? এমনটাই প্রশ্ন ছুঁড়েছেন মোদী সরকারের উদ্দেশ্য।পাশাপাশি জেপিসির দাবী তুলে রাফাল চুক্তির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের স্বপক্ষে সওয়াল তুলেছেন তিনি। শুধু তাই নয়,অফসেট চুক্তি নিয়েও উপযুক্ত তদন্তের প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এইচএএল-কে বঞ্চিত করে অনিল আম্বানিতে এই বিমান তৈরির বরাত পাইয়ে দেওয়ার নেপথ্যেও মোদীসরকারের দুর্নীতি রয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। প্রতিবেদনে এন রাম এটাও দাবী করেছিলেন,রাফাল চুক্তি নিয়ে মোদী সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ হাতে রয়েছে। প্রসঙ্গত,১৮টি তৈরি বিমান কেনা ও ১০৮টি বিমান দেশে তৈরির প্রাথমিক চুক্তি খারিজ করে ২০১৫-র ১০ এপ্রিল প্যারিসে ৩৬টি তৈরি রাফাল কেনার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবার এই রাফাল নিয়ে নতুন বিতর্ক সামনে আসায় স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়ে গিয়েছেন কেন্দ্রের শাসকদল। কারণ সামনেই লোকসভা ভোট। এই মুহূর্তে নতুন বিতর্ক জট পাকালে তা মোদীসরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা নিতে পারে একথা ভেবেই তড়িঘড়ি করেই বিতর্কে দাড়ি বসাতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে,পত্রিকাটির দাবী সম্পূর্ণই ভিত্তিহীন। নতুন কোনো তথ্যই নেই লেখাটিতে। তাছাড়া যে চুক্তির কোনো বাস্তবায়নই হয়নি ইউপিএ জামানায়,তার সঙ্গে এই চুক্তির কোনো তুলনাই চলে না। ভারতের জন্যে বিশেষভাবে উন্নত এবং অস্ত্র ও প্রযুক্তি সম্ভাবে সজ্জিত করা হচ্ছে বিমানগুলোকে। এ সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য দেওয়া যাবে না বলেই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আপনার মতামত জানান -