মোদী-শাহকে কোনঠাসা করে কি বিজেপির অন্দরে মাথাচাড়া দিচ্ছে আরও এক বিজেপি? লোকসভার আগে জল্পনা! জাতীয় December 26, 2018 লোকসভা নির্বাচনের আগে যখন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে চাপে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিরোধী দলগুলো, ঠিক তখনই বিজেপির জনপ্রিয় নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটির বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যাচ্ছে বিজেপির এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকেও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৪ তে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার সময় বিজেপি কাজে লাগিয়েছিল মোদি ম্যাজিককে – যার ফলে প্রবল জনসমর্থন পেয়ে কেন্দ্রে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবেই সরকার গড়তে সক্ষম হয় বিজেপি। এমনকি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং নরেন্দ্র মোদী মিলেই বিজেপির গতিপথকে পরিচালিত করতেন বলে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে। যার জেরে বিজেপির অন্দরে কানাঘুষো শোনা যেত যে মোদি-শাহর বিরোধী হয়ে উঠেছেন অনেক প্রবীণ ও শীর্ষ বিজেপি নেতা। আর নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহর প্রতি দলের অন্যান্য নেতাদের ক্ষোভের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার মূল কারণই ছিল দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রবীণ নেতাদের নরেন্দ্র মোদী মার্গমন্ডলীর কমিটিতে রেখে দায় সারতে চেয়েছিলেন। যার ফলে অনেকেই অপমানিত বোধ করতেন। তবে প্রকাশ্যে এই ব্যাপারে মোদী-শাহ জুটির বিরুদ্ধে মুখ না খুললেও এবার লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর বিরুদ্ধে মুখ খুলে দলকেই বিড়ম্বনায় ফেললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করি।সূত্রের খবর, গত শনিবার এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “দলের পারফরম্যান্স খারাপ হলে দলের সভাপতির ওপরই দায় বর্তায়। সেই সহজ সত্যিটা মেনে নেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই”। এমনকি গত সোমবারও নীতিন গড়করি বলেন, “যদি আমি দলের সভাপতি হই আর দলের সাংসদ, বিধায়করা খারাপ পারফরম্যান্স করে তার দায় তো আমাকেই নিতে হবে”! রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্প্রতি দেশের তিন রাজ্যে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। তাই ভালো কাজে সাফল্যের দায় নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহরা নিলেও ব্যর্থতার দায় কেন তাঁরা নেবেন না এদিন সেই প্রশ্নই তুলে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে চাপে ফেলার চেষ্টা করেছেন নীতিন গড়করি। অনেকেই বলছেন, সম্প্রতি দেশের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলেই কিছুটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে আসন্ন দেশের লোকসভা নির্বাচনে ঠিক কি ফলাফল হতে চলেছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - আর যদি এই পাঁচ রাজ্যের ফলাফলের পুনরাবৃত্তি হয় লোকসভায় তাহলে কেন্দ্রে নিজেদের মসনদ টিকিয়ে রাখা প্রবল চাপের হবে বিজেপির কাছে। আর তাই এখন থেকেই হারের আশঙ্কা মাথায় নিয়ে লোকসভা ভোটে যদি দল হারে তাহলে তার দায়ভার দলের শীর্ষ নেতাদেরই নিতে হবে বলে মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়ালেন বিজেপির এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাহলে কি দলের ভেতরে এই বিদ্রোহ ঘোষণায এক নতুন বিজেপি উঠে আসতে চলেছে? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অন্য যে অভিযোগই থাকুক – দুর্নীতির কোনো অভিযোগ নেই, তা সে রাহুল গান্ধী রাফাল নিয়ে যতই বলুন। অন্যদিকে, পাঁচ বছরের এক স্থায়ী সরকার উপহার দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী এবং তা তিনি করেছেন দলের অনেক প্রবীণ নেতাকে প্রায় রাজনৈতিক সন্ন্যাসে পাঠিয়েই। এই অবস্থায়, প্রাথমিকভাবে গেরুয়া শিবিরের যে গোষ্ঠী অস্ত্র শানানোর কথা ভাবছিলেন – একের পর এক রাজ্য বিজেপির ছাতার তলায় আনার পর তাঁদেরও কার্যত ব্যাকফুটে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটি। আর তাই কি নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্ত্ব ও প্রভাব টিকিয়ে রাখতেই গো-বলয়ের তিন রাজ্যে কঠিন পরিস্থিতিতেও কঠোর লড়াই দিয়ে সামান্য ভোটের ব্যবধানে কংগ্রেসের কাছে ক্ষমতা হারানোর পর – এত শোরগোল উঠছে? বিশেষ করে বিভিন্ন সমীক্ষায় যেখানে দেখা যাচ্ছে – যে রাজ্যগুলিতে বিজেপি ক্ষমতা হারালো, লোকসভা নির্বাচনে সেখানে অন্য ফল হতে পারে? তাই কি নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে বিরোধীদের পাশাপাশি নিজেদের দলের ‘বিরোধীরাও’ চাপে রাখতে শুরু করে দিলেন? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ব্যস্ত এখন রাজনৈতিক মহল। আপনার মতামত জানান -