প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  রাজ্যপালের সঙ্গে তৃণমূল সরকারের সখ্যতা যে খুব একটা ভালো নেই, তা সকলেই জানেন‌। দ্বিতীয় তৃণমূল সরকারের আমলে রাজ্যের সাংবিধানিক দায়িত্ব বসা জাগদীপ ধনকারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বৈরথ তৈরি হতে দেখা যেত শাসকদলের। আর তৃতীয় বার তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসতে না আসতেই রাজ্যের আইনশৃংখলা সহ একাধিক বিষয়ে সোচ্চার হতে দেখা যায় রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকারকে। পাল্টা সেই রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে সোচ্চার হয় তৃণমূল কংগ্রেস।

রাজ্যপালকে বিজেপির মুখপাত্র বলে সরব হতে দেখা যায় ঘাসফুল শিবিরকে। আর এই পরিস্থিতিতে দূরত্ব ক্রমেই বাড়তে শুরু করেছিল রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের। তবে ভয়াবহ দুর্যোগের পর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাকে কার্যত স্বাগত জানিয়ে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা করলেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার।

যে ঘটনায় কার্যত হতচকিত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে বিরোধীদের একাংশ। এতদিন যে রাজ্যপাল উঠতে-বসতে সরকারকে কটাক্ষ করতেন এবং তাদের নানা পদক্ষেপের সমালোচনা করতেন, সেখানে দুর্যোগের পর সেই রাজ্যপালের সরকারের প্রশংসা করার কারণে, রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করা বিরোধীরা কিছুটা হলেও চাপে পড়ে গেল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্রের খবর, এদিন রাজ্যপাল দুর্যোগ মোকাবিলায় ভূয়সী প্রশংসা করেন রাজ্য প্রশাসনের। ট্যুইটে তিনি লেখেন, “ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় “ইয়াস” মোকাবিলায় রাজ্য সরকার ভালো কাজ করেছে।” স্বাভাবিক ভাবেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পর্যালোচনা করতে রাজ্যে পা রাখছেন, তখন রাজ্যপালের এই ধরনের টুইট রাজ্য প্রশাসনকে যে যথেষ্ট স্বস্তির মুখে ফেলে দিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

একাংশ বলছেন, এর ফলে অনেকটাই চাপে পড়ে গেল বিরোধীরা। দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দুর্যোগ মোকাবিলা নিয়ে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করেছেন। তবে সেদিক থেকে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ভূমিকার সমালোচনা করা রাজ্যপাল এবার সেই রাজ্য প্রশাসনের প্রশংসা করায় বিরোধীদের বক্তব্য যে কিছুটা হলেও প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকের আগে রাজ্যপালের এই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রের কাছে আরও বেশি করে ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে রাজ্য সরকার বলে মনে করছেন একাংশ।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শুধু রাজ্য সরকার নয় টুইটে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্যোগ মোকাবিলায় ভূয়সী প্রশংসা করেছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। প্রথম থেকেই দুর্যোগ মোকাবিলায় কোনো বিরোধ নয়, রাজনীতি না দেখে সকলের মানুষের স্বার্থে কাজ করা উচিত বলে আহ্বান জানাতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যপাল থেকে শুরু করে রাজ্য সরকারকে।

এমনকি বিরোধীদের গলাতেও সেই সুর শোনা গিয়েছিল। তবে ভয়াবহ দুর্যোগের পর রাজ্য সরকারের নানা বিষয় নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিরোধীরা। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পর্যালোচনা করার আগে টুইট করে দুর্যোগ মোকাবিলায় রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করে কার্যত শোরগোল তুলে দিলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। যা তৃণমূল এবং রাজ্য প্রশাসনের কাছে যথেষ্ট স্বস্তিদায়ক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।