এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মুকুল-ফর্মুলাতেই আস্থা মোহন ভাগবতের, বাংলার ‘স্ট্র্যাটেজি’ নিয়ে বড় বার্তা

মুকুল-ফর্মুলাতেই আস্থা মোহন ভাগবতের, বাংলার ‘স্ট্র্যাটেজি’ নিয়ে বড় বার্তা


অনেক অভিমান নিয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েই মুকুল রায় ঘোষণা করেছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন নাকি ‘উইয়ের ঢিপি’! একটু নাড়া দিলেই ঝুরঝুর করে ভেঙে পড়বে! মুকুল রায়ের সেই বক্তব্যকে সেদিন অত্যুৎসাহী তৃণমূল সমর্থকরা তো বটেই, এমনকি মুকুল রায়ের বিরোধী গেরুয়া শিবিরের একাংশও ‘বাতুলতা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু, বঙ্গ-রাজনীতিকে ‘হাতের তালুর’ মত চেনা মুকুল রায় – নিজের বক্তব্য থেকে এক চুলও সরে আসেন নি।

আর মুকুল রায়ের সেই আত্মপ্রত্যয়েই আস্থা রেখেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় স্তরের শীর্ষ নেতৃত্ত্ব। বঙ্গ-রাজনীতিতে ‘মুকুল-এফেক্ট’ কতখানি তার পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে দেওয়া হয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের দায়িত্ব। আর দায়িত্ব পেতেই বঙ্গের রুক্ষ জমিতে পদ্মচাষে মনোনিবেশ করেন তিনি। ‘হিন্দু প্রধান’ দল বলে যে সংখ্যালঘুরা এতদিন কার্যত বিজেপিকে বাংলায় ব্রাত্য করে রেখেছিলেন, মুকুল রায়ের পরিকল্পনায় সেই সংখ্যালঘু সমাজ থেকেই হাজারের কাছাকাছি মানুষ বিজেপির হয়ে পঞ্চায়েত স্তরে জনপ্রতিনিধি হওয়ার লড়াইয়ে শামিল হয়।

আর, সেই মুকুল-ফর্মুলাতেই লোকসভা নির্বাচনে লড়ার পরিকল্পনা স্পষ্ট করে দেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা। আর দিনের শেষে, তাঁদের সেই আস্থার মর্যাদা রেখে বঙ্গ-রাজনীতির চানক্য শুধু বিজেপির আসন ২ থেকে বাড়িয়ে ১৮-ই করে দেন নি, বাংলায় বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেসের পায়ের তলার মাটিটাই টলমল করে দিয়েছিলেন বলে অভিমত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আর সেই ‘মুকুল-এফেক্টে’ ভর করে দুর্দম গতিতে বাংলায় বাড়তে থাকে বিজেপির সংগঠন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা রীতিমত লাইন লাগিয়ে দেন গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোয়। কিন্তু, এরপরেই শুরু হয় চূড়ান্ত বিতর্ক! দল বাড়ানোর নামে মুকুল রায় বিজেপিতে ‘বেনোজল’ ঢোকাচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠে গেরুয়া শিবিরের তরফে। অবস্থা এতটাই বিশৃঙ্খল হয়ে পরে যে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম ইস্তফা দিতে চান বলেও জল্পনা ছড়িয়ে পরে। পরে, দলের শীর্ষনেতৃত্ত্বের হস্তক্ষেপে সেই সমস্যা মিটলেও – বিজেপির অন্দরে আদি বনাম নব্য লড়াই চরমে ওঠে।

বিশেষ করে, বিজেপির সাংগঠনিক স্তরে রদবদল ঘিরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলতে থাকেন, আমরা পদ পাওয়ার জন্য বিজেপিতে আসিনি, এসেছি সম্মানের সঙ্গে রাজনৈতিক কাজ করতে। কিন্তু, শুধুমাত্র তৃণমূল থেকে আসার ‘অপরাধে’ আমাদের সেই রাজনৈতিক অধিকারও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিজেপিতে ‘যোগ্য সম্মান’ না পেয়ে ইতিমধ্যেই আবার অনেকে তৃণমূলে ফিরে যেতেও শুরু করেছেন। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে গেরুয়া শিবিরের অভ্যন্তরে। এই ভাবে চললে বিধানসভা নির্বাচনের আগে লড়াইয়ের জন্য সংগঠন তৈরী হবে কি করে?

এই পরিস্থিতিতে, এবার মুখ খুললেন স্বয়ং আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। সাংগঠনিক কর্মসূচিতে তিনি উলুবেড়িয়ায় দুদিন ধরে এক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকেই তিনি স্পষ্ট বার্তা দেন, দল বড় করতে অন্য দলের লোক নিতে হবে, তা না হলে দল বাড়বে না। অর্থাৎ, সঙ্ঘ-পরিবারও এবার মুকুল-ফর্মুলাতেই সিলমোহর দিয়ে দিল। অর্থাৎ, এতদিন ধরে যে হাওয়া তোলার চেষ্টা চলছিল যে, দল বাড়াতে সবাইকে নেওয়ায় সঙ্ঘের তীব্র আপত্তি আছে, সেই জল্পনার গোড়াতেই এদিন জল ঢেলে দিলেন স্বয়ং সঙ্ঘ-প্রধান।

একইসঙ্গে মোহন ভাগবত জানিয়ে দেন, যাঁরা আসছেন, তাঁদেরও স্বাগত জানাতে হবে দলে। এটাই সঙ্ঘের আদর্শ। তবে এখানে একটা শর্ত রয়েছে, যাঁরা দলে আসছেন, তাঁদের দলের অনুশাসন মেনে চলতে হবে। গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়ে তাঁদের অনুশাসনের মধ্যেই চলতে হবে। ফলে, এতদিন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা যে ভরসা মুকুল রায়ের উপর করতেন, এবার সেই একই ভরসার কথা স্পষ্ট করে দিলেন মোহন ভাগবতও। আর তাই, নিজের ‘ফর্মুলাতে’ সঙ্ঘ-শীর্ষ নেতৃত্ব সব জায়গা থেকেই ‘সবুজ সঙ্কেত’ পাওয়ার পর, মুকুল রায় এবার কিভাবে ‘ব্যাট’ ঘোরান – সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!