মৌসমের নামে বড়সড় অভিযোগ করলেন কংগ্রেস সভাপতি, বিতর্ক তুঙ্গে মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য February 18, 2019 লোকসভা ভোটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে মৌসেমের কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছে মালদার জেলা কংগ্রেস। মৌসমের দলত্যাগের পরে সদ্যই জেলা কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্বে এসে মৌসম বিরোধী সুর চড়া করলেন মোস্তাক সাহেব। সভাপতি হওয়ার পর এদিন প্রথমবার দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠক শেষে মৌসমের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বলেন,”যিনি আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে দল থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন, তাঁকে হারাতে দলের কর্মীদের দ্বিগুন উৎসাহে ময়দানে নেমে পড়তে বলেছি। মালদা জেলার দু’টি আসনই কংগ্রেসের। মালদার মানুষের প্রতি আমার আস্থা আছে।” এটা বলার পর জেলা কংগ্রেস সংগঠনকে চাঙ্গা করতে তিনি বলেন,তৃণমূলের দাদাগিরির কারণে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলাবাসী নিজেদের ইচ্ছেমতো ভোট দিতে পারেননি। কিন্তু লোকসভা ভোটে সেটা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। মালদার দুটি আসনেই যে এবার কংগ্রেস জিতবে একথায় ভরসা রেখে তিনি বললেন,”বরকত সাহেব কিংবা রুবি নুর মৃত্যু পর্যন্ত কংগ্রেস করে গেছেন। আর তৃণমূলে গিয়ে মৌসম এখন তাঁদের ছবি ব্যবহার করছেন। এটা স্বাধিকারভঙ্গের মধ্যে পড়ে। এটা তৃণমূলের নীতিহীনতা।” মালদার টাউন হলো জেলার ১৫ টও ব্লকের দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন মোস্তাক সাহেব। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সত্যনারায়ণ প্রসাদ, রতুয়া ১ ব্লক কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি পরিতোষ সিনহা, রতুয়া ২ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি নিমাই বিশ্বাস, হবিবপুর ব্লক সভাপতি আতিউর রহমান। ছিলেন দলের প্রত্যেকে বিধায়ক সহ অন্যান্য নেতা-নেত্রীরা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - জেলা তৃণমূল সভাপতির মতো সকলেই নিশানা করেন সদ্য দলত্যাগী সাংসদ মৌসম নুরকে। তাঁদের অনেকেই অভিযোগ করেন,তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর কংগ্রেস কর্মীদের পেছনে পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছেন মৌসম। আর এই পুলিশ প্রশাসনই প্রকাশ্যে কংগ্রেস কর্মীদের তৃণমূলে যোগ দিতে চাপ দিচ্ছে। এর জেরে তৃণমূল এবং প্রশাসন বিরোধী আন্দোলনে আসরে নামবার ইঙ্গিত দিয়েছে কংগ্রেস নেতারা। এদিন বৈঠকে আগাগোড়াই মৌসম নুর বিরোধী সুর চড়া করলেন মোস্তাক সাহেব। বললেন,লোকসভা ভোটের আগে জেলা কংগ্রেস সকলের সুবিধার কথা মাথায় রেখে একটি ওয়েব পেজ তৈরি করছে। ওই পেজে জেলার ১৪৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮৮৮টি বুথের দলীয় নেতা-কর্মীদের নাম এবং ফোন নম্বর থাকবে। তবে তার আগে একটি শর্তের উল্লেখ করলেন তিনি। জেলার প্রত্যেক কংগ্রেস কর্মীকে দলের পূর্ববর্তী জেলা সভানেত্রী মৌসম নুরের ফোন নম্বর মুছে ফেলার নির্দেশ দিলেন সভাপতি। লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করেই তিনি দলীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলস্তরের কর্মীদেরও ময়দানে নেমে পড়ার বার্তা দেন। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মোস্তাক সাহেব জানান,গত ৪ ফেব্রুয়ারি মালদা জেলা সভাপতি পদে মনোনীত হওয়ার পর এদিন প্রথমবার ব্লক সভাপতি সহ অন্যান্যদের সঙ্গে বৈঠক করলেন তিনি। আর এটাও স্বীকার করলেন মৌসম নূরের মতো এক হেভিওয়েট,দক্ষ সংগঠক দল থেকে চলে যাওয়ার কারণে জেলা কংগ্রেস এই মুহূর্তে একটু সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তবে তাঁর দলত্যাগের সঙ্গে সঙ্গেই জেলার সব স্তরের কংগ্রেস কর্মীরা আবু হাসেম খান চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে ঘর গোছাতে লেগে পড়েছেন,এটাই তাকে সন্তোষ দিয়েছে অনেকটা। আর সেইজন্যে দলের একটা ওয়েব পেজ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। এতে জনসংযোগ তৈরির কাজ যেমন সহজ হবে,তেমনি দলীয় কর্মীরা শাসকদলের অত্যাচারের শিকার হলে দ্রুত উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারবেন। এর ফলে ওইসব কংগ্রেস কর্মীদের প্রতিরোধ করাটাও অনেক সহজ হবে। এদিন কাশ্মীরের মর্মান্তিক জঙ্গী হানায় শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েই সভা শুরু করেন নয়া মালদা জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক সাহেব। তাঁর নেতৃত্বে লোকসভা ভোটের আগে মালদা কংগ্রেস তার হৃতগৌরব ফিরে পাবে বলেই আশা রয়েছে কংগ্রেসের নীচুতলার কর্মী সমর্থকদের। আপনার মতামত জানান -