মৃণালিনীর প্রেম -(লাভ স্টোরি)- কলমে অপরাজিতা – পর্ব ১ অন্যান্য অপরাজিতা গল্পে-আড্ডায় February 20, 2020 জেঠুর মেয়ের বিয়ে তাই খুব ব্যাস্ত মৃণালিনী।বাড়ির বিয়ে বলে কথা কত লোকজন আসবে , কি পড়বে ,ম্যাচিং সাজগোছ সব কেনাকাটি করা, তাছাড়া ঠিক না হলে আবার নতুন করে কেনা চাট্টিখানি কথা। যদি কেউ বোঝে , সবাই শুধু – বাবা মনে হচ্ছে যেন তোরই বিয়ে হচ্ছে। সারাদিন শুধু মুখে এই ঘষা ওই ঘষা।আচ্ছা ত্বকের যত্ন নেওয়া কি খারাপ- বেশি বেশি। শুধু মা, জেঠিমাদের একটাই কথা – মুখে এত কিছু না ঘসে চেহারাটা একটু কমা। হুম একটু গ্লুমলু মৃণালিনী। অস্বাভাবিক মোটা নয়,তবে মোটাই। শিশিরদা বৌদি বলে – বার বার বারণ করে দিয়েছে বিয়েবাড়িতে যেন এসব না বলে। শিশিরদা বড় জেঠুর জামাই।একবার বাসে করে শিশিরদাদের বাড়ি যাচ্ছিলো – কন্ট্রাক্টর – বৌদি টিকিট দেখি ? ইসশ মনে হয়েছিল ঠাস করে দিয়ে দেয়। তারপর থেকেই শিশিরদা বৌদি বলে। রাগ করলে বলে – রাগ করছিস কেন? তোকে বেশ বৌদি বৌদি দেখতে তাই তো বলি, বৌদিদের ডিমান্ড বেশি রে ? তাও রাগ করে মৃণালিনী। যদিও শাড়ী পড়লে বাড়ির সবাই বলে একেবারে বৌ বৌ লাগছে। বিয়েতেও শাড়ী পড়বে, আর যদি সবাই বৌ বৌ করে তবে ? যদি শিশিরদা বৌদি বলে ? না বড়দের সামনে বলে না কিন্তু যার তার সামনে,যখন তখন বলে।চিন্তায় আছে একটু। হবু জামাইবাবু বিভাসদা বেশ ভালো। কথা হয় ফোনে। অনেক কিছু ডিমান্ড করে রেখেছে মৃণালিনী। সব আবদার মেটানো হবে কথা দিয়েছে বিভাসদা। ওদের বাড়ির লোকজন ও বেশ ভালো। বিভাসদার দিদি আছে সে তো বলেছে এই সুযোগ জামাইবাবুর পকেট ফাঁকা করার। হাত বাধা ,জুতো লুকানো সব হবে। অবশেষে আইবুড়োভাত এসে হাজির। রাত পোহালেই বিয়ে। হাতে মেহেন্দি করছে বাড়ির মেয়েরা। এসব ব্যাপারে একটু এগিয়ে মৃণালিনী। সে আগেই মেহেন্দি করে নিয়েছে পার্লারে গিয়ে। বলা যায় না রাত্রে যদি কেউ ধাক্কা দিয়ে দেয় যদি ডিজাইন খারাপ হয়ে যায়,এত রিস্ক নেওয়া যায়? যে কনে শর্মিলা তার কোনো তাড়া নেই সে এখন হাতে মেহেন্দি করেছে। শুকায়নি তাই হাত ফ্যানের তলায় সাজিয়ে বসে আছে। হোক, ওর তো বিয়ে হয়েই যাচ্ছে, বিভাসদা ছাড়া আর কে দেখবে ? হুম লোকজন দেখবে সে তো কনে হিসাবে! ফলে এত কিছু নয়। কিন্তু মৃণালিনীর তো আর বিয়ে হয়নি? যায় হোক এদিকে শেষ ফেসিয়াল করে নিচ্ছে মৃণালিনী। পার্লার থেকে লোক এসেছে। যদিও পার্লারের লোক বলাটা ঠিক হবে না , বিনীতা মৃণালিনীর বন্ধু স্থানীয় একসাথে সেই ছোট থেকে পড়েছে। যাই হোক মুখে মাস্ক লাগিয়ে বসে আছে এখন মৃণালিনী। বিনীতা বাইরে গিয়ে বৌদিদের মেহেন্দি পরাচ্ছে। ঘরে বসে আছে শুধু মৃণালিনী আর শর্মিলা। শর্মিলার ফোন বেজে উঠলো – ভিডিও কল করেছে। হাতে মেহেন্দি তাই শর্মিলা ধরলো ফোনটা মৃণালিনী। একটা ছেলে চোখ বড় বড় করে দেখছে যেন পারলে ফোনের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে ঘরে ঢুকে দেখে কে ফোনটা ধরেছে। এ তো বিভাসদা নয়, কে এটা? মৃণালিনী চোখ নাচিয়ে বললো – কাকে চাই? সঙ্গে সঙ্গে যে ওপারে ঐভাবে যে দেখছিলো তাকে বলতে শোনা গেলো – এটা কি বৌদি? গোবর মেখে বসে আছে ? এবার ফোনের স্কিনে দেখে গেলো বিভাসদাকে সেও ভালো করে দেখে বোঝার চেষ্টা করছে এটা কে? ছাগল একটা, ছেলেটাকে দেখতে ভালো কিন্তু না ভালো লাগছে না মৃণালিনীর – বলে কোন সাহসে গোবর মেখে আছে? জানে এগুলোর দাম কত? দিদির দিকে ফোনের ক্যামেরাটা ঘুরিয়ে দিয়ে বললো – কথা বল। বিভাস – ও আচ্ছা আমার ছোট শালী ধরেছিলো? আচ্ছা আপনি কি করছিলেন ম্যাডাম? শর্মিলা – মেহেন্দি, তাই তো হাত পেতে বসে আছি মিনিট পনেরো ধরে ,এখনো কম করে ১ ঘন্টা বসে থাকতে হবে।ভালো লাগে না। বিভাস – করলে কেন? এত ঝামেলা যখন? শর্মিলা – ওর কথায় নেচে। বিভাস – হা হা , শোনো অভি তোমার সঙ্গে কথা বলবে, আমার ছোট মাসির ছেলে বলেছিলাম না। শর্মিলা – হ্যাঁ হ্যাঁ মনে আছে , ওই যে পুনেতে থাকে। বিভাস – হ্যাঁ , মুখ বাড়ালো অভি। অভি – হাই , কালকেই তো বিয়েটা হয়ে যাচ্ছে ,বৌদিই বলি ? মৃণালিনী – মুখটা বেঁকিয়ে ন্যাকা। মৃণালিনী আস্তে আস্তে বলেছে , যদিও ফিস ফিস শব্দ ছাড়া কিছু শুনতে পাবার কথা নয়। অভি – কিছু বললে? শর্মিলা – না, ঠিক আছে। কখন এলে? অভি – এই তো সন্ধেবেলা। তোমাদের বাড়িতে লোকজন সব এসে গেছে? শর্মিলা – অনেকেই। অভি – এখানেও তাই। আচ্ছা এবার তোমরা কথা বলো। কাল দেখা হচ্ছে। শর্মিলা – ওকে। বিভাস ফোন নিয়ে এবার কথা বলতেশুরু করলো। মৃণালিনী – আমার হাত ব্যাথা করছে এবার ফোন রাখো। পরে কথা বলবে বলে ফোন কেটে দিলো। শর্মিলা – ফোনটা ওই ভাবে কেউ কাটে ? উত্তর এলো না। মাথায় এখনো ‘ গোবর ” ঘুরছে। বিভাস – এই মেয়েটা না ? অভি – তুমি বলেছিলে না বৌদির একভাই একবোন, দেন শালী? বিভাস – ওর কাকার মেয়ে ? পুরো পাগল। অভি – কি? বিভাস -দাঁড়া পিকচার দেখাচ্ছি। পিছন থেকে ডাক এলো – ছোট দাদু এসেছে। একবার দেখতে চাইছে তোকে, বাইরে আয় বিভু। মৃণালিনীর সম্পর্কে জানা হলো না অভির , না তেমন ইচ্ছাও নেই। এমন কিছু ব্যাপার নয়, পরে জানলেও হবে। আপনার মতামত জানান -