এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > মৃণালিনীর প্রেম -(লাভ স্টোরি)- কলমে অপরাজিতা – পর্ব ৮

মৃণালিনীর প্রেম -(লাভ স্টোরি)- কলমে অপরাজিতা – পর্ব ৮


অভি বার বার বলছে শ্রেয়সীকে যে ও শুধুমাত্র নতুন বৌদির বোন এর বেশি কিছু না। কেন এই সব পিকচার তোলা হয়েছে সে সবের ব্যাখ্যাও দিয়েছে অভি না কিছু কাজ হয়নি,ফোন কেটে দিয়েছে শ্রেয়সী। তার মাঝেই ফোন করেছে সৌরভ ,তার মনে হয়েছে ফাইনালি বন্ধুর মতি ফিরেছে সে শ্রেয়াসীর সাথে ব্রেক আপ কোরেসি এই মেয়ের সাথে জড়িয়েছে। সৌরভকে বিষয়টা বলতেই সৌরভ বুঝেছে।

 

কিন্তু শ্রেয়সীকে কি করে বোঝাবে , বার বার কল করছে অভি , না শ্রেয়সী কল ওঠাচ্ছে না। হোয়াটসাপে ম্যাসেজ এর পর ম্যাসেজ না কোনো রিপ্লাই নেই সব কত সিন দেখাচ্ছে।

পাগল লাগছে , কেন আসতে গেলো ও বিয়েবাড়িতে না এলে এসব কিছুই হতো না। আর মৃণালিনীর কি দরকার ছিল এসবের?

এদিকে অভির মায়ের খুব পছন্দ হয়েছে মৃণালিনীকে, বাবাও অপছন্দ নয়। মৃণালিনীর বাবাকে অভির মা বললেন – আপনার মেয়ে খুব ভালো গান গে কি সুন্দর গলা।

মৃণালিনীর বাবা – আপনারা কোথায় শুনলেন?

অভির মা – আপনারা না শোনালেই বা আমরা শুনে নিয়েছি , কাল সন্ধেতে জলসা বসিয়েছিলাম।

মৃণালিনীর বাবা – হ্যাঁ ওই গান করে।

কথা বার্তা হচ্ছে , না এখনো পর্যন্ত অভির মা বিয়ের কথাটা বলেননি মৃণালিনীর বাবাকে কেননা ছেলের এখনো মতটা নেওয়া হয়নি। সে কি বলে দেখা যাক। না করবে না বলেই মনে হয় কেন না কাউকে ভালোবাসে এমন কথা তো জানা নেই , আর তাছাড়া নন্দিনীও বলেছে দুজনের খুব ভাব হয়ে গেছে। ফলে না করার কিছু নেই তবুও একবার ছেলের মত জানা দরকার। আর মেয়ে তো পালাচ্ছে না।

 

মৃণালিনী দোতলায় গেলেও অভিকে দেখতে পায়নি। চাটে গেছে অভি, মৃণালিনী ছাতে যাবে কি যাবে না এইসব ভাছিলো কেননা সে ভূতে ভয় পায় , যদি অভি ছাতে না থাকে , অবশ্য না থাকলে যাবে কোথায় ? আস্তে আস্তে ছাতে গেলো। অভি ঐদিকের কোণে দাঁড়িয়ে মোবাইল দেখছে ,মুখের মধ্যে রাগ মোবাইলের আলোতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

কি হয়েছে ? কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো মৃণালিনী
অভি ওকে দেখেই এবার ব্যাস্ত করলো – তুমি এখানে কি করছো?
মৃণালিনী – এমনি, আসলে তুমি

অভি রেগে -ফলো করছো আমাকে ?

মৃণালিনী – না মানে?

অভি – কিসের মানে? তোমার সাথে প্রেম করছি আমি ?উইথ লাভ, ফিলিংস লাভ এই সব লিখে পোস্ট করেছো আমার পিকচার ? কে বলেছিলো ?

মৃণালিনী – আমি মানে।……

অভি – কি মনে করো নিজেকে? ভালো গান করো বলে ছেলেরা তোমার আগে পিছে ঘুরবে? আয়নায় দেখছো নিজেকে একটা উদ্ঘাট সাজ, একটু হেসে কথা বলেছি কি মনে হয়েছে তোমার আমি তোমার প্রেমে পড়ে গেছি? আমার মনে হয়েছিল তুমি অন্যরকম বাট নো ছিঃ।

কথাগুলো মৃণালিনীর বুকে জোরে জোরে ধাক্কা দিচ্ছিলো। চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো মাথা নিচু করে।

অভি – ইচ্ছা করে করেছো না? আজ তোমার জন্য শ্রেয়সী ভাবছে আমি ওকে চিট করেছি, আমি ওকে ভালোবাসিনা শুধুমাত্র ওকে ইউস করেছি।

মৃণালিনী – পা দুটো ভীষণ ভারী হয়ে গেছে। যেন নাড়তে পারছে না। ও অন্য কাউকে ভালোবাসে আর মৃণালিনী ?

মৃণালিনী – আমি বুঝতে পারিনি সরি,

আমি বলছি আমি ভুল করে পোস্ট
অভি – কাকে বলবে ? কে বিশ্বাস করবে ?

মৃণালিনী – তোমার গার্লফ্রেন্ড

অভি – জাস্ট স্যাট আপ অনেক হয়েছে আমার চোখের সামনে থেকে চলে যাও, আর কোনোদিন আমার সামনে আসবে না , যাও বলে জোরে ধমক দিলো।

 

চলে এলো মৃণালিনী। অনেক উড়ছিল ও একেবারে মাটিতে এসে সজোরে পড়েছে।কিন্তু আঘাতটা দেখানো যাবে না এখনই কাউকে।ফোন টা নিয়ে সব ফটোগুলো ডিলিট করে দিতে যাচ্ছিলো কিন্তু করলো না এখন কিছু করলে অনেক প্রশ্ন উঠবে। বাড়ি গায়ে যা করার করবে। কোনো মতে দিদির ঘরে গিয়ে নিজের ব্যাগটা গোছাতে লাগলো, চোখ দিয়ে জল গড়াচ্ছে অনবরত। বাগে একটা শক্ত মতো জিনিস ঠেকলো। তুললো সেই মূর্তিটা, যেটা ও মেলায় দেখেছিলো, কিন্তু টাকা ছিল না বলে কেনেনি। অভি দেখেছিলো আর কিনে এনেছে ওর জন্য, বাড়ি এসে ওকে সারপ্রাইস দিয়েছে। সব কিছুই ভুল ভেবেছিলো মৃণালিনী।ও ভেবেছিলো অভি ওকে সত্যি পছন্দ করেছে আর তাই ওর পছন্দের জিনিস খেয়াল করে ওকে এনে দিয়েছে তা নয় নেহাতই সৌজন্য।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অভির একটা একটা কথা মনে পড়ছে মৃণালিনীর। ও অন্য কাউকে ভালোবাসে, মৃণালিনীর জন্য তার সাথে ঝামেলা হচ্ছে। মৃণালিনীকে দেখেত জগন্য, উদ্ঘাট সাজে সে।

আর থাকবে না মৃণালিনী এখানে। শাড়ী ছেড়ে মুখটা ধুয়ে ব্যাগটা নিয়ে নিচে নেমে গেলো। খায়নি ওরা এখনো।
নন্দিনী – একই ব্যাগ নিয়ে কেন? কথা তো ছিল অন্যরকম ,তুমি একেবারে অষ্টমঙ্গলায় যাবে। মেসোমশাইকে অনেক করে বলে রাজি করানো গেছে।

মৃনালিনী – না গো থাকলে হবে না , বন্ধুরা ফোন করেছিল এক্সাম আসছে তো স্যার কিছু ইম্পর্টেন্ট ক্লাস করবেন।

নন্দিনী – এমা , অভি কোথায় গেলো

মৃণালিনীর বুকের ভেতরটা ঢোক করে উঠলো।

নন্দিনী – চেঞ্জ করে ফেললে কেন?

মৃণালিনী – না কিছু না ব্যাগ গোছালাম তো তাই।

নন্দিনী -আচ্ছা চলো খাবে।দাড়াও অভিকেও দেখি কোথায় একসঙ্গেই খাবো।

মৃণালিনী – নন্দিনীর হাতটা ধরে বললো না দিদিভাই খাবো না , শরীরটা ভালো যাচ্ছে না ,ওই মেলায় অনেক কিছু খেলাম তারপর এখানেই ফুচকা , স্টার্টার অনেক কিছু খেয়েছি ভালো লাগছে না।

মৃণালিনী – কিছু না ?

নন্দিনী – কি হয়েছে বলো তো ? অভি কোথায় ?

মৃণালিনী – কিছু না সত্যি, আমি জানি না গো , আমি তো চেঞ্জ করতে গিয়েছিলাম।

সবাই অনেক করে বলেছে থাকতে না থাকেনি মৃণালিনী , কোনো মতে বাড়ি আসতে চেয়েছে। মুখটা কান্ড কান্ড হলেও কেউ সন্দেহ করেনি ,কেননা কোন পক্ষ সবাই কাঁদছে, মেয়েকে রেখে বাড়ি যাচ্ছে বলে – অভিকে আর দেখতে পায়নি মৃণালিনী। এখনো হয়তো ওর গার্লফ্রেন্ডকে নিয়েই ভাবছে।

 

চলে এসেছে মৃণালিনী তার জীবনের সবটুকু ওই বাড়িতে রেখে চলে এসেছে। আর যাবে না কোনোদিন, অনেক স্মৃতি আছে ওর অভিকে নিয়ে ওই বাড়িতে।

পরের দিন সকালে অভি জানিয়েছে সে পুনে ব্যাক করছে, টিকিট পেয়েছে পরেরদিনের সকালের। ওর মা মৃণালিনীর সাথে বিয়ের কথা বলতেই না করে দিয়েছে অভি। নন্দিনীও বোঝাতে গিয়েছিলো সে জানিয়েছে তার উত্তরের কোনো নড়নচরণ হবে না , ভালো গান করে বলেই বিয়ে করতে পারবে না। এখনো শ্রেয়াসীর কথা বলেনি। কেননা শ্রেয়সী সেই অনুমতি তাকে দেয়নি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!