এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মুখ্যমন্ত্রীর সাধের লোকশিল্পী ভাতাতেও লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতি? অস্তিত্বহীন নামে গায়েব টাকা

মুখ্যমন্ত্রীর সাধের লোকশিল্পী ভাতাতেও লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতি? অস্তিত্বহীন নামে গায়েব টাকা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনা আবহে রাজ্যের একের পর এক দুর্নীতি প্রকাশ পাচ্ছে। সম্প্রতি আমফান পরবর্তী ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ক্ষতিপূরণ নিয়ে বহু জায়গায় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তৃণমূল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য প্রশাসন রীতিমতো নড়েচড়ে বসে। এবং শুরু হয় শুদ্ধিকরণ। 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের অন্যরকম প্রতিচ্ছবি সাধারণের সামনে নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে এই শুদ্ধিকরণ চলতে থাকে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু দুর্নীতির শিকড় যে অনেক গভীরে ঢুকে গেছে তা বারেবারে প্রমাণ হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুঃস্থ শিল্পীদের অর্থ সাহায্যের জন্য একটি প্রকল্প চালু করেন। নাম দেওয়া হয়, লোকশিল্পী ভাতা।

কিন্তু সেই ভাতা নিয়েও যে দুর্নীতি হতে পারে, তা বোধহয় কল্পনাতেও আনা যায়নি। এবার এরকমই একটি দুর্নীতির অভিযোগ উঠল রাজ্য প্রশাসনের এক আমলার বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে এই দুর্নীতি চলে আসছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এই সূত্রে এবার ওই আমলার বিরুদ্ধে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা মামলা দায়ের করেছে বলে জানা যাচ্ছে। দুর্নীতির অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, অভিযুক্ত ওই সরকারি আধিকারিক লোকপ্রসার প্রকল্পের এমন শিল্পীদের নামে টাকা স্যাংশন করেছেন, যাঁদের কোনো অস্তিত্বই নেই। তদন্তে ধরা পড়ে, বাঁকুড়াতে তথ্য-সংস্কৃতি দপ্তরের থাকাকালীন অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিক এই দুষ্কর্মটি ঘটিয়েছেন।

প্রাথমিকভাবে 11 লক্ষ টাকার গরমিল পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা। তবে তাঁদের দাবি, গরমিল এর পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। অন্যদিকে অভিযুক্ত এই টাকা কি কাজে লাগিয়েছেন সেদিকেই এবার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, লোকপ্রসার প্রকল্পের অন্তর্গত শিল্পিদের নামে এক হাজার টাকা করে দেওয়া হয় প্রতি মাসে। এবং তাঁদের নাম নথিভুক্ত থাকে জেলা প্রশাসনের কাছে। তালিকায় যাতে কোনরকম ভুয়ো নাম না ঢোকে সে ব্যাপারে নজর রাখে তথ্য-সংস্কৃতি দপ্তরের প্রশাসন। তবে টাকা নয়ছয়ের ব্যাপারটিই নজরে আসে 2018 সালে। তদন্তে দেখা যায়, মাত্র একটা অ্যাকাউন্টের মধ্যেই 11 জন লোকশিল্পীর আর্থিক সাহায্য পৌঁছাচ্ছে নিয়মিতভাবে। এবং সেই টাকা তোলাও হচ্ছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এরপর পুরো বিষয়টি নজরে আনেন জেলা প্রশাসনের। তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর থেকে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়। এবং উক্ত আধিকারিক ধরা পড়ে। পরবর্তীতে তাঁকে শাস্তিস্বরূপ বদলি করা হয় উত্তর দিনাজপুরে। তদন্তে নেমে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা এই আর্থিক তছরুপ সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র জোগাড় করে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে। খোঁজ নেওয়া লোকপ্রসার প্রকল্পের অন্তর্গত লোক শিল্পীরা ঠিকঠাক টাকা পাচ্ছেন কিনা। এবং তখনই চোখে পড়ে 11 জন লোকশিল্পীর কোন অস্তিত্ব নেই। অথচ তাঁদের নামেই নিয়মিত টাকা তোলা হচ্ছে। এমনকি এই ভুয়ো লোকশিল্পীদের নাম প্রশাসনিক তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আধার কার্ড থেকে শুরু করে অন্যান্য নথিও জমা দেওয়া হয়েছে।

আর এই ঘটনা সামনে আসতেই অভিযুক্ত আমলার নাম আসে। কারণ তিনি লোকশিল্পীদের আর্থিক সাহায্যের টাকা অনুমোদন করতেন বলে জানা গেছে। এরপরে দুর্নীতি দমন শাখার তরফে নবান্ন শীর্ষস্থানে একটি তদন্ত রিপোর্ট পাঠানো হয়। নবান্ন গ্রীন সিগন্যাল দেওয়ার পর ওই ডব্লিউবিসিএস অফিসারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা তবে এই দুর্নীতি চক্রে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে এই ঘটনা সামনে আসে পরে রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এত বড় আর্থিক তছরূপের ঘটনা সামনে আশায় খুব স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল শাসক মহল চূড়ান্ত অস্বস্তির মুখে পড়ল। অন্যদিকে বিরোধীদলের দাবি, তৃণমূলে দুর্নীতি আদ্যপ্রান্ত জড়িয়ে আছে যে, তা এই ঘটনা থেকে আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠল। আপাতত এই ঘটনার রাশ রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখার ওপরে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!