মুখ্যমন্ত্রী সব ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার দাবি করলেও, আমপান ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই এখনও বাঁধে নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য September 20, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গত মার্চ মাসে পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পরে প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। আম্ফান ঝড়ের রাতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক স্থিত ডাঁসা নদীর বাঁধটি বাইনারা গ্রামে ভেঙে গিয়ে প্লাবিত হয় রূপমারি ও বিশপুর সহ বেশকিছু গ্রাম। এই দুই গ্রামের বিভিন্ন জনগণ তাদের বাড়ি ছেড়ে ঝড়ের রাতে রাস্তা ও বাঁধে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ঝড় কেটে গেলেও অবস্থা স্বাভাবিক হতে অনেকটা সময় লেগে গিয়েছিল। ৩ মাস যাবত নদীর বাঁধের উপরে প্রায় ১০০ টি পরিবার বসবাস করেছিল। এরপর ধীরে ধীরে প্রায় সবকটি পরিবার তাদের বাড়িতে ফিরে যায়। কিন্তু এখনো বাড়ি ফিরতে পারেনি ৯ টি পরিবার। তারা এখনো দিন কাটাচ্ছে ঝুপড়িতে। প্রসঙ্গত ডাঁসা নদীর বাঁধের যে বিশেষ অংশটি ভেঙে পড়েছিল, সেই অংশটিতে বাঁধ দেওয়া এখনো দেখানো সম্ভব হয়নি। পরিবর্তে তার কয়েকশো ফুট দূর থেকে থেকে রিং বাঁধ দেওয়া হয়। এ কারণে ৬ টি পাকা বাড়ি ও ৭ টি মাটির বাড়ি নদির গর্ভে মিলিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে হারিয়ে গেছে বেশ কিছু কৃষিজমি। মোট ৫০ বিঘা জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। কাঁচা বাড়িগুলো নদীগর্ভে সম্পূর্ণ রূপে মিলিয়ে গেছে, পাকা বাড়িগুলো কঙ্কালসার অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকলেও সেগুলির ভিতরে নদীর পলি পড়ে গিয়ে তা বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে। এর ফলে এই বাড়ি গুলির বাসিন্দার বাসিন্দারা খেয়া ঘাটের পাশে, নদীর বাঁধের উপর ঝুপড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন। গৃহহারা এই মানুষেরা বাড়ি ফিরতে চাইছেন। সরকারের কাছে তাদের দাবি, যেখানে পূর্বে বাঁধ ছিল, সেখানেই নতুন করে সিমেন্টের বাঁধ নির্মাণ করা হোক। আবার যারা কৃষিজমি হারিয়েছেন নদীগর্ভে, তারাও তাদের কৃষি জমি ফিরে পেতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। সম্প্রতি হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ি এই দুর্গত, গৃহহীন মানুষদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। স্থানীয়দের দাবি, অভিযোগ, সমস্যা সমস্ত বিষয়ে তিনি অবগত হন। ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - বাইনারায় ঝুপড়িতে দুই সন্তানকে নিয়ে বাস করছেন অনিতা সর্দার ও তাঁর স্বামী তুফান সর্দার। বাঁধের পাশে থাকা তাদের বাড়ি সম্পূর্ণ ভাবে মিশে গেছে নদী গর্ভে। তুফান সর্দার তামিলনাড়ুতে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতেন। সম্প্রতি লকডাউনের ফলে কর্মচ্যুত হয়ে তিনি বাড়ি ফিরে এসেছেন। গ্রামে তিনি কোন কাজ পাচ্ছেন না। ফলে সংসার চালাতে চোখে সর্ষেফুল অবস্থা তাদের। তাঁদের এই দুরবস্থা সম্পর্কে অনিতা সর্দার জানালেন, ” ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট নেই। তাই আবেদন করতে পারিনি। এখন অ্যাকাউন্ট খোলার চেষ্টা করছি। জানি না আবেদন করতে পারব কিনা। এ ভাবে ঝুপড়িতে থাকতে খুবই কষ্ট হয়। আমরা মুখ বুজে গরম সহ্য করলেও বাচ্চাদের কষ্ট দেখতে পারি না। ঘুমোতেই পারে না ওরা।” ভিটেমাটি হারিয়ে ঝুপড়িতে বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দা সনাতন সর্দার জানালেন, ” জীবনে কখনও বাড়ি ছেড়ে বাঁধে বাস করতে হয়নি। এখানে পানীয় জলের খুব সমস্যা। এ ছাড়া স্নান করা, বাসন মাজা বা শৌচকর্ম ও অন্য কাজে খুব সমস্যা হচ্ছে। যত পুকুর ছিল আশেপাশে সব নদীর নোনা জলে ভরে আছে। সেই নোনা জলই ব্যবহার করতে হচ্ছে।” প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যসরকারের পক্ষ থেকে বারবার দাবি করা হয় যে, অম্ফান দুর্গতদের সকলকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো ঝুপড়িতে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে এই ৯ টি পরিবার | আপনার মতামত জানান -