এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মুকুলের হুঁশিয়ারি কি বাস্তবের পথে? উত্তরবঙ্গে বড় ভাঙ্গনের আশঙ্কায় জেরবার বিজেপি!

মুকুলের হুঁশিয়ারি কি বাস্তবের পথে? উত্তরবঙ্গে বড় ভাঙ্গনের আশঙ্কায় জেরবার বিজেপি!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সোমবার উত্তরবঙ্গের হেভিওয়েট বিজেপি নেতা গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরেই বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন মুকুল রায়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গে এটা শেষের শুরু।” আর মুকুল রায়ের এই দাবিতে এবার যেন ঘৃতাহুতি পড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বারলা। যার জেরে ব্যাপক চাপে পড়ে গিয়েছে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। তারা কোনমতেই এই বাংলা ভাগকে সমর্থন করেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা।

আর রাজ্য বিজেপি যখন আলাদা রাজ্যের দাবি মানছেন না, ঠিক তখনই সেই রাজ্য নেতৃত্বের বিপক্ষে হেঁটে আলিপুরদুয়ার বিজেপি সাংসদের দাবিকেই সমর্থন করতে দেখা গেল সদ্য বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী উত্তরবঙ্গের দুই হেভিওয়েট বিজেপি বিধায়ককে। যার ফলে গেরুয়া শিবিরের সাংসদ থেকে শুরু করে বিধায়করা পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব হওয়ার কারণে যথেষ্ট চাপের মুখে পড়ে যেতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এর ফলে ধীরে ধীরে অদূর ভবিষ্যতে মুকুল রায়ের দাবি সত্যি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলেই মনে করছেন একাংশ। কেননা এর ফলে বিজেপি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যেতে পারে। আর শেষ পর্যন্ত যা পরিনত হতে পারে দলবদল প্রক্রিয়ায়।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি জানান আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বারলা। আর তারপরেই রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়, তারা কোনোমতেই রাজ্য ভাগকে সমর্থন করেন না। অর্থাৎ বিজেপির সাংসদের দাবিকে যে রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সমর্থন করা হচ্ছে না, তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেই বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ জঙ্গলমহলকে আলাদা রাজ্য করার দাবি জানাতে শুরু করেন। যা বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বকে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। আর এবার রাজ্য নেতৃত্বের মত না থাকা সত্ত্বেও, উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবিতে বিজেপি সাংসদ জন বারলার বক্তব্যকে সমর্থন করতে দেখা গেল মাটিগাড়া- নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মন এবং ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়কে।

এদিন এই প্রসঙ্গে আনন্দময় বর্মন বলেন, “এই দাবি উত্তরবঙ্গের মানুষের। আর সেটাই বলেছেন আমাদের সাংসদ। আলাদা রাজ্য হলে অসুবিধা কোথায়! বরং আমাদের উন্নয়ন হবে।” একইভাবে এই বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। অর্থাৎ রাজ্য নেতৃত্ব যখন রাজ্যভাগের বিপক্ষে মত দিচ্ছে, তখন তার বিরুদ্ধে গিয়ে কার্যত রাজ্যভাগের পদ্ধতিকে সমর্থন জানাতেই দেখা গেল বিজেপির দুই বিধায়ককে।

যার পেছনে মুকুল রায়ের পরিকল্পনা রয়েছে বলেই দাবি করছেন একাংশ। অনেকে বলছেন, মুকুল রায় ইতিমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, উত্তরবঙ্গে ভাঙ্গন শুরু হয়ে গিয়েছে। আর বাংলা ভাগের দাবিতে বিজেপির দুই পক্ষ যখন কার্যত ভাগ হয়ে যেতে শুরু করেছে, তখন তা বুঝেই মুকুল রায় এই ধরনের মন্তব্য করেছেন বলে দাবি করছেন একাংশ। তাহলে কি উত্তরবঙ্গের সত্যি সত্যিই ভাঙ্গন ধরবে ভারতীয় জনতা পার্টিতে? রাজ্য ভাগের বিপক্ষে মত পোষণ করা রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গিয়ে একের পর এক জনপ্রতিনিধি কেন এই ধরনের মন্তব্য করছেন, এখন সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশেষজ্ঞদের কাছে।

 

 

এদিকে বিজেপির দুই বিধায়ক রাজ্যভাগের পক্ষে মত দেওয়ায় রীতিমত বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা গৌতম দেব বলেন, “শান্ত বাংলাকে অশান্ত করার চক্রান্ত। রাস্তায় নেমে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হবে। বাংলা থেকে এই দলটাকে যাবে।” অর্থাৎ বিজেপির একের পর এক জনপ্রতিনিধি রাজ্য ভাগের পক্ষে মত দেওয়ার কারনে আখেরে সুবিধা হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের। একদিকে তৃণমূল যেমন এই ঘটনাকে ইস্যু করে বিজেপির বিরুদ্ধে বাংলা ভাগের চক্রান্তের কথা তুলে রাস্তায় নামতে পারছে, ঠিক তেমনই বিজেপিতে দ্বিধাবিভক্ত রূপ দেখে কার্যত খুশি ঘাসফুল শিবির।

এক্ষেত্রে মুকুল রায়ের কথা খুব তাড়াতাড়ি বাস্তব আকার নিতে পারে বলেই আশা তৈরি হয়েছে তৃণমূলের অন্দরমহলে‌। এভাবেই যদি চলতে থাকে, তাহলে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে শুরু করবে উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার দাবিতে সরব হওয়া একের পর এক জনপ্রতিনিধির। যার ফলে বিজেপি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেলে তার ফায়দা খুব সহজেই নিতে পারবে তৃণমূল কংগ্রেস। আর ভবিষ্যতের সেই বিষয়টি উপলব্ধি করেই সোমবার তৃণমূল ভবন থেকে “উত্তরবঙ্গে বিজেপির শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে” বলে মন্তব্য করেছিলেন বঙ্গ রাজনীতির চাণক্য মুকুল রায় বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!