এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > মুকুল পদে পেলেও বিজেপির জন্য কতটা শুভ হল? ত্রিবিভক্ত বিজেপির অন্দর

মুকুল পদে পেলেও বিজেপির জন্য কতটা শুভ হল? ত্রিবিভক্ত বিজেপির অন্দর


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই মুকুল রায় তৃণমূল ভাঙ্গানোর কাজ শুরু করে দেন‌। তবে বিজেপিকে সাফল্য পাওয়ানো থেকে শুরু করে তৃণমূলকে চাপে রাখা, এত কিছু করলেও প্রায় তিন বছর চুপচাপ কাজ করে যেতে হয় মুকুল রায়কে। অবশেষে কিছুদিন আগে তাকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদে আসীন হয়েছেন মুকুল রায়। স্বাভাবিকভাবেই মুকুল রায়ের মত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যখন বিজেপির কেন্দ্রীয় স্তরে দায়িত্ব পেলেন, তখন তিনি যে তৃণমূলের ঘুম উড়িয়ে দিতে অনেকটাই সফলতা লাভ করবেন, তা বলাই যায়।

কিন্তু নানা মহলে এখন প্রশ্ন তৈরি হয়েছে যে, মুকুল রায় বিজেপিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেলেও এটা বিজেপির জন্য কতটা লাভবান হল? একাংশ বলছেন, এর ফলে তৃণমূল ভেঙে তছনছ হয়ে যাবে। আর এই কাজটি একমাত্র করতে পারেন মুকুল রায়। তাই তিনি দায়িত্ব পাওয়ার সাথে সাথে সেই কাজে আরও বেশি করে মনোযোগ দিলে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বড়সড় ধাক্কা খাবে শাসকদল। যার ফলে বিজেপির ঘরে সাফল্য আসতে পারে বলে মনে করছে একাংশ। তবে অনেকে আবার বলছেন, এর ফলে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে পারে।

আর দুই তরফের এই দুই যুক্তি নিয়ে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরমহলে। বস্তুত, মুকুল রায় থেকে শুরু করে অনুপম হাজরা, প্রায় প্রত্যেকেই তৃণমূলের প্রাক্তন সৈনিক। মুকুল রায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদ পাওয়ার সাথে সাথে সেই অনুপম হাজরাকে কেন্দ্রীয় সম্পাদক করা হয়। যেখানে দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির হয়ে কাজ করা রাহুল সিনহাকে সেই কেন্দ্রীয় সম্পাদক থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাহুলবাবু। যেখানে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি জানিয়ে দেন, “তৃণমূলের কেউ আসছে। তাই তাকে সরে যেতে হল। এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু হতে পারে না।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূলের নেতাকর্মীদের আধিক্য এবং তাদেরকে বড়সড় জায়গা দেওয়ায় তিনি যে অনেকটাই ক্ষুব্ধ, তা তার এই বক্তব্যের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তবে রাহুলবাবু নাম না করে এই ব্যাপারে অনুপম হাজরার পদ পাওয়াটাকে কটাক্ষ করলেও, তিনি মুকুল রায়কে কিছু বলেননি। কিন্তু মুকুল রায়ের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয় বলেই দাবি একাংশের। তাই মুকুল রায়ের গুরুত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দিলীপবাবু এবং তার অনুগামীরা অনেকটাই ক্ষুব্ধ।

স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য সভাপতি হিসেবে দিলীপ ঘোষ যদি মুকুল রায়ের কাজে হস্তক্ষেপ করেন, তাহলে ক্রমশ দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি পেতে পারে। কেননা মুকুল রায় গুরুদায়িত্ব পাওয়ার পর এখন খোলা হাতে খেলতে শুরু করবেন। স্বাভাবিকভাবেই এই সমস্ত বিষয়ের উপর নির্ভর করে বিজেপির অন্দরমহলে এই দুই নেতার গন্ডগোল মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিজেপির বেঙ্গল ইউনিট বর্তমানে তিনটি ভাগে বিভক্ত। একটি দিলীপ ঘোষের এবং আরএসএস সমর্থিত। অন্যটি তৃণমূল থেকে ছেড়ে আসা নেতা-নেত্রীদের নিয়ে। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন মুকুল রায় এবং তৃতীয়টি রাহুল সিনহার পছন্দের নেতৃত্বরা নিয়ন্ত্রণ করছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই লড়াই যদি প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে, তাহলে বিধানসভা নির্বাচনে সাফল্য পাওয়া বিজেপিকে ভুলে যেতে হবে বলে দাবি একাংশের। তাই সেই সমস্ত কিছুকে মাথায় রেখে আগামী দিনে সংগঠনকে ভালো করে পরিচালনা করতে গেলে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যাকে যেখানে দায়িত্ব দিচ্ছে, সেই নির্দেশ সকলকে মান্যতা দেওয়া উচিত বলে দাবি করছেন গেরুয়া শিবিরের কর্মী সমর্থকরা।

সব মিলিয়ে মুকুল রায়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হওয়া বিজেপির সাফল্যের অন্যতম আভাস দিলেও তা নিয়ে দ্বন্দ্ব কি আকার ধারণ করে, তা অবশ্যই দেখার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে অনেকে আবার বলছেন, যেহেতু বিজেপির কাছে এখন বাংলা দখল প্রধান টার্গেট, তাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই সমস্ত দ্বন্দ্বকে সহজেই মিটিয়ে নেবেন। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!