এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > কৈলাশ-মুকুলের নেতৃত্বে বিজেপির নব্য তরুণ তুর্কিরা শহরে, স্বতঃস্ফূর্ত জনজোয়ার ও আশীর্বাদে উন্মাদনা বেশি শঙ্কুকে ঘিরে

কৈলাশ-মুকুলের নেতৃত্বে বিজেপির নব্য তরুণ তুর্কিরা শহরে, স্বতঃস্ফূর্ত জনজোয়ার ও আশীর্বাদে উন্মাদনা বেশি শঙ্কুকে ঘিরে


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া এক্সক্লুসিভ – ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যেতেই একের পর এক ‘বিগ জয়েনিং’ করিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে তীব্র চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছেন বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়। এতদিন যে শাসকদল সমর্থকদের দাবি ছিল মুকুল রায় ‘গদ্দার’, তাঁর সঙ্গে নেই কোনো তৃণমূল নেতাই – তাঁরাই এখন ‘উচ্ছ্বিষ্ট’ বা ‘আবর্জনা’ বিশেষণ ব্যবহার করে এইসব এই সব একের পর এক যোগদানকে খাটো করে দেখাতে ব্যস্ত। কিন্তু, গেরুয়া শিবিরের আভ্যন্তরীন রিপোর্ট বলছে এই সকল যোগদানে দলীয় কর্মীরা তো চাঙ্গা বটেই, প্রবল উন্মাদনা তৈরী হয়েছে আমজনতার মধ্যেও।

আর তারই একঝলক গতকাল সন্ধ্যেবেলায় দেখা গেল কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ৬, মুরলীধর সেন লেন পর্যন্ত। দিল্লিতে একের পর এক তরুণ তুর্কিকে বিজেপিতে নিয়ে আসার পর গতকাল সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়ের নেতৃত্বে কলকাতায় পা রাখেন শঙ্কুদেব পণ্ডা, সৌমিত্র খাঁ, অনুপম হাজরা, দুলাল বর, খগেন মুর্মু, রাকেশ সিং সহ অন্যান্যরা। আর, বিমানবন্দর থেকে ‘টীম মুকুল’ বেরোতেই আবেগে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন গেরুয়া শিবিরের কর্মী-সমর্থকরা। কার্যত জন-অরণ্যে পরিণত হয় গোটা বিমানবন্দর চত্ত্বর।

প্রিয় নেতাদের একবার ছুঁয়ে দেখতে বা একটা সেলফি তুলতে তখন রীতিমত হুড়োহুড়ি পরে গেছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা রিপোর্টে বহু বিজেপি নেতারই প্রাণহানির আশঙ্কা থাকায়, কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী ‘টীম মুকুলকে’ ঘিরে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জাওয়ানরাও তখন রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন গেরুয়া সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগকে সামাল দিতে। এরই মধ্যে যেন উচ্ছ্বাসটা বাঁধভাঙ্গা ছাত্র ও যুবনেতা শঙ্কুদেব পণ্ডাকে ঘিরে। শাসকদলে তাঁকে এক ঘরে রাখার পর, যেসব ছাত্র-যুব নেতারা কার্যত বাড়িতে বসে গিয়েছিলেন, তাঁরাই যেন নতুন প্রাণের স্পন্দন পেয়েছেন শঙ্কুদেবের গেরুয়াকরণে। আর তাই, নতুন ‘জোশে’ তাঁরা তখন প্রিয় নেতাকে নিয়ে কি করবেন যেন ঠিক করতে পারছেন না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

ফুলের মালা, চন্দন, জয়ধ্বনি তো ছিলই – সঙ্গে ছিল পুষ্পবৃষ্টি আর স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ। বিমানবন্দরেই আমজনতাও তখন হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন তরুণ তুর্কিকে দেখে। আর পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র ও যুব রাজনীতির অন্যতম ‘মাস্টারমাইন্ড’ শঙ্কুদেব পণ্ডা জনতার ভালোবাসার অত্যাচার সামলাচ্ছেন হাসিমুখে। একইসঙ্গে, সংবাদমাধ্যমের সামনে নাম না করে তীব্র কটাক্ষে ভরিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। গতকাল ছিল ১৪ ই মার্চ – নন্দীগ্রাম দিবস, সেই প্রসঙ্গে শঙ্কুদেবের বক্তব্য, আজকের দিনটা তো অনেকে ভুলেই গেছেন! ক্ষমতায় আসা হয়ে গেছে তো, তাই গত তিনবছর ধরে একজন নন্দীগ্রামের শহীদদের ভুলে গিয়ে কলকাতায় বসেই কাটিয়ে দেন – দেওয়াল লিখনটা তো স্পষ্ট!

এরপর বিমানবন্দর থেকে রাজ্য সদর দপ্তর পর্যন্ত তাঁর জন্য তাঁর অনুগামীরা ব্যবস্থা করেছিলেন হুড খোলা জীপের। কিন্তু, সেই জীপের গতি বারবার থমকে গেল, আটকে গেল জনতার আদরে। জীপ থামিয়েই কেউ হাত মেলাচ্ছেন, কেউ সেলফি তুলছেন, কেউ জড়িয়ে ধরছেন তো কেউ আবার পায়ে হাত দিচ্ছেন। বয়স্ক মানুষরা কাছে ডেকে আশীর্বাদও করলেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে। বিমাবন্দর থেকে বিজেপি রাজ্য সদর দপ্তরের ওই রাস্তা যেতেই শঙ্কুর জীপ নিল ঘন্টা দুয়েক। ওদিকে রাজ্য সদর দপ্তরে পৌঁছাতেই অন্য চিত্র – কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায় যে তরুণ তুর্কিকে তুলে দিয়েছেন গেরুয়া শিবিরের হাতে, সেই শঙ্কুদেব পণ্ডাকে সাদরে পার্টি অফিসে একযোগে বরণ করে নিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা।

দুই হেভিওয়েট নেতাই পিঠ চাপড়ে শঙ্কুকে জানিয়ে দিলেন, ভালো কাজ হচ্ছে। এদিকে বিজেপি যুবর রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ সরকার এদিন নির্বাচনী কাজে উত্তরবঙ্গে থাকায়, তাঁর সঙ্গে ফোনেই প্রয়োজনীয় আলাপচারিতা সেড়ে নিলেন গেরুয়া শিবিরের নব্য তরুণ তুর্কি। বহু রাত পর্যন্ত তাঁর দুটি ফোনেই যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও, সব সময়েই ‘এনগেজ’ দেখিয়েছে নাম্বারগুলি। পরে তাঁর এক ঘনিষ্ঠ অনুগামীর অনুযায়ী, শঙ্কুদেব পণ্ডা কলকাতায় পা দিতেই বহু পুরোনো অনুগামী ও সতীর্থ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। এইসব প্রাক্তনীদের বক্তব্য, বিগত দিনে অন্যায়ভাবে তাঁদের রাজনৈতিক গতিবিধি বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে – কিন্তু শঙ্কুর এই নতুন পদক্ষেপে তাঁরা নাকি নতুনভাবে উজ্জীবিত, নামতে চান রাজনীতির ময়দানে।

অন্যদিকে, শঙ্কুদেব কলকাতায় পা রাখতেই বহু বর্তমান ছাত্র নেতাও যোগাযোগ শুরু করেছেন – আগামীদিনে বিজেপিতে যোগদানের আবদার নিয়ে। প্রসঙ্গত, বাংলায় বিজেপির সংগঠন বাড়ানোর জন্য অমিত শাহের লক্ষ্য ছিল বাংলার ছাত্র ও যুব ভোটের দখল নেওয়া। আর তাই, মুকুল রায় জানিয়েছিলেন শঙ্কুদেবের কথা – বাম জামানায় প্রায় একক দক্ষতায় কিভাবে তিনি ঝড় তুলে দিয়েছিলেন রাজ্যের ছাত্র রাজনীতিতে। অমিত শাহের নিজস্ব হিসেব – রাজ্যে বর্তমানে প্রায় ১২ লক্ষ ছাত্র ও যুব ভোটার, যার মধ্যে প্রায় ৯ লক্ষ হতে চলেছে ‘ডিসাইডিং ফ্যাক্টর’। অমিত শাহের লক্ষ্যপূরণে সেই বিপুল সংখ্যক ছাত্র ও যুব ভোটে যে আগামীদিনে বড়সড় থাবা বসাতে চলেছেন শঙ্কুদেব, কলকাতায় পা রেখেই তার বড়সড় ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!