বলের পালিশ উঠে গেছে, এবার হাত খুলে ব্যাটিং করবেন মুকুল রায় – দাবি গেরুয়া শিবিরের জাতীয় রাজ্য January 9, 2019 বাংলার আকাশ-বাতাস যখন শিউলির গন্ধে ম-ম করছে তখনই এক অক্টোবরের সকালে রাজ্য-রাজনীতিকে চমকে দিয়ে তৎকালীন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের অঘোষিত দুনম্বর নেতা ঘোষণা করেছিলেন – তিনি শাসকদলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করতে চলেছেন। বেশ কিছুদিন ‘সাসপেন্স’ বজায় রেখে অবশেষে নভেম্বরের এক অপরাহ্নে একজন সাধারণ কর্মী হিসাবে গেরুয়া শিবিরে পদার্পন করেন তিনি। সেই সময়ে, এই নিয়ে একটিও শব্দ খরচ করেননি তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মত হাতে গোনা কয়েকজন শীর্ষনেতা ও তৃণমূল সমর্থকরা অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র কটাক্ষে ভরিয়ে দিয়েছিলেন মুকুল রায়কে। ছাপার অযোগ্য শব্দগুলো বাদ দিলে যে কটাক্ষের মূল বিষয় ছিল – মুকুল রায়ের রাজনৈতিক উত্থান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। তৃণমূল নেত্রীর কল্যানেই কাঁচরাপাড়ার অখ্যাত গলি থেকে তিনি দেশের রেলমন্ত্রী পর্যন্ত হয়েছেন। আর তাই, সেসব ভুলে দলের প্রতি অনুগত না থেকে এবং দল ছেড়ে মুকুলবাবু একপ্রকার ‘গদ্দারি’ করেছেন। আর তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকদের সেই অভিমতকে মান্যতা দিয়ে পরবর্তীকালে এক বেসরকারি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে নাম না করে মুকুল রায় সম্পর্কে একই কথা জানান স্বয়ং তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেত্রী। কিন্তু, মুকুল রায় তখন পরিণত রাজনীতিবিদের মত একটা কথায় বলেছিলেন – রান পেতে গেলে ক্রিজে পড়ে থাকতে হবে। এরপর, মুকুল রায়ের জন্য প্রথম অগ্নিপরীক্ষা ছিল বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচন। যেখানে তাঁকে নির্বাচন কমিটির প্রধান হিসাবে দায়িত্ত্ব দেন অমিত শাহ। আর সেই একটা সুযোগেই বাজিমাত! পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে বিজেপি পঞ্চায়েত নির্বাচনের সর্বকালের নিজেদের সেরা পারফরম্যান্সটা করে দেখিয়ে দেয় মুকুল রায়ের নেতৃত্ত্বেই। আর দেরি করেননি অমিত শাহরা। মুকুলবাবুকে একেবারে বসিয়ে দেন ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্যের পদে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - আর তারপরেই বোধহয় বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ত্ব অনুধাবন করে বাংলায় পদ্ম ফোটাতে গেলে তাদের হাতে থাকা সেরা অস্ত্রটির নাম মুকুল রায়। কেননা, এরপরেই মুকুল রায়কে একেবারে আসন্ন লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে বাংলার নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক পদ দেওয়া হয়। আর, তারপরেই মুকুল রায় নিজের ব্যক্তিগত সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করান দু-দুজন হেভিওয়েটকে। প্রথমে অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় আর আজ শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে। কিন্তু, এখানেই কি শেষ হয়ে গেল মুকুল রায়ের শাসকদলকে ভাঙানোর গতিবিধি? এই প্রসঙ্গে, রাজ্য বিজেপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষনেতার বক্তব্য, বলের পালিশটা উঠে গেছে, এবার হাত খুলে ব্যাটিং করবেন মুকুল রায়! অনেকেই বলেছিলেন, মুকুল নাকি ‘শুকিয়ে’ যাবে! এবার তো দেখা যাচ্ছে মুকুল ক্রমশ বিকশিত হয়ে ফুল রূপে প্রস্ফুটিত হচ্ছে! ওই নেতার আরও মন্তব্য, সৌমিত্রবাবু আমাদের দলে যোগদানের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক তৃণমূল সমর্থক দাবি করছেন – ওনাদের দল থেকে নাকি আবর্জনা বিদায় হল! মানে ঘুড়িয়ে স্বীকার করে নিচ্ছেন ওই দলে আবর্জনা আছে! তাহলে আমি শাসকদলের কাছে অনুরোধ করব – এরকম আরো যাঁরা আবর্জনা আছেন ওই দলে, তাঁদের লিস্টটা এখনই দিয়ে দিন। কেননা আগামীদিনে আরও অন্তত ১০ জন এরকম সাংসদ বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন। আর তাঁরা বিজেপিতে যোগদানের পর সৌমিত্রবাবুর মত বহিষ্কারের ‘নাটক’ করলে জনগণ কিন্তু নেবে না! আপনার মতামত জানান -